যুগান্তর পত্রিকায় একটা ফতোয়া দেখলাম। মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। ঐ ফতোয়ার মোদ্দা কথা হল মানব শরীরের কোন অঙ্গ প্রত্যাঙ্গ দান, প্রতিস্থাপন বা ক্রয়/বিক্রয় করা যাবে না। এটা জ্ঞানী ফতোয়াবাজ সম্রদায়ের কাছে সম্পূর্ন নাজায়েজ ও হারাম।
এই সূত্রে বলা যায়, কিডনি, কর্নিয়া, লিভার, রক্ত ইত্যাদি এক মানব শরীর থেকে শরীরে প্রতিষ্থাপন করা নাযাযেজ যদিও জান বাঁচানো ফরজ প্রত্যেক মুসল্লির জন্যে।
আমি দোয়া করি, যে ব্যক্তি এ ফতোয়া দিয়েছেন এবং যারা এতে বিশ্বাস রাখে, তারা যেন জরুরী প্রয়োজনে রক্তদাতার রক্ত না পায়, কিডনি, লিভার, কর্নিয়া কোন কিছুই না পায় ... আধুনিক চিকিৎসা সামনে থাকা অবস্থাতেও গোড়ামীর জন্যে কষ্টে মারা যায়।
মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। তাকে যে সামর্থ বা সন্মান আল্লাহপাক দিয়েছেন, তা স্বীকার করাও আল্লাহর অনুগ্রহকে সম্মান করা। প্রকারন্তে আল্লাহর শুকরিয়া করা। যারা ফতোয়া দেন, তারা দুনিয়াবী আর অবিনশ্বর দুটো জিনিসের মধ্যে সম্বন্বয় করবেন আশা করি। আমরা সবাই জানি, দেহ নশ্বর, আত্মা অবিনশ্বর। আসমানী কিতাব এসেছে, মানব সমাজকে সুন্দর সুশৃঙ্খল রাখার জন্যে। মানব সমাজকে পিছিয়ে রাখার জন্যে নয়।
আমার কিছু আজাইরা প্রশ্ন মাথায় ঘুর ঘুর করছে:
১) আত্মহত্যা মহাপাপ। কারন এটা নিন্দনীয় কাজ, খোদার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মৃত্যুকে বেছে নেয়া। সময়ের আগেই প্রত্যাপন করা। যদিও বলা হয় জন্ম মৃত্যু আল্লাহর হাতে। যার ভাগ্যে যা লেখা আছে, সেটাই ঘটবে। তাহলে আত্মহত্যাকরীর দোষ কোথায়?
২) যদি আত্মহত্যা মহাপাপ হয়, তাহলে শিশুর সিজারিয়ান করে সময়ের আগেই দুনিয়াতে নিয়ে আসাও মহাপাপ। তাই নয় কি? এটাও তো আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে।
৩) ভবিষ্যতে চিকিৎসা বিদ্যা এতটায় উন্নত হবে যে, মানুষের অঙ্গ হানি হলে, তা আবার নিজে থেকে গজাবে। প্রতিষ্থাপনের দরকার হবে না। তখন কি ফতোয়াবাজরা বলবে, অঙ্গ গজানো হারাম? যদিও আমার ধারনা, চুল দাড়ি গজালে যদি হারাম না হয়, হাত পা গজালেও হারাম হবে না...
মানব অঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় প্রসঙ্গে
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৮