পরীক্ষার শেষ দিন ছিল আজ। অনেক দিন পত্রিকা পড়ি না। একটা সময়ে মাতৃ ভূমির প্রতিদিনের সংবাদ না পড়ে দুচোখে ঘুম আসতো না।
আজ বেশ হলো প্রায় ছয় মাস, একদমই পত্রিকা পড়িনি। প্রায় ৫ বছরের বুকের ভিতরে জমে থাকা অভিমান আর কষ্টগুলোর জন্যই হয়তো।
আর কতো সহ্য করব হে মা জননী জন্মের পর থেকেই দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত।
পাতা খুলেই বিরাট হেডলাইন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রিসভায় ঐক্যমত।
সারা বিশ্ব যেখানে জলবায়ু, পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ইত্যাদি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিষয়ে করণীয় নিয়ে চিন্তিত। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি দল উন্নত বিশ্বের কাছে থেকে কত টাকা আদায় করা যায় তার ফন্দি ফিকিরে মত্ত। কত টাকা দরে কতটুকু কার্বন সশ্রয় করলে কত লাভে বিক্রি করলে ভালো, তাই নিয়ে তালি বাজাচ্ছেন। আর হুজুর হুজুর করে বিলিয়ে দিচ্ছেন প্রাণ ইঊরোপ, আমেরিকার তরে।
ঘুর্নিঝড় আইলা, নার্গিস, সিডর এর ছোবলে যারা হারিয়েছে সর্বস্ব তাদের খোজ স্বয়ং দূর্যোগ প্রতিমন্ত্রি রাখেন কিনা সন্দেহ।
প্রতি বছরই বারছে বন্যা, ঘুর্নিঝড়, জলোচ্ছাস, ভুমিকম্প। আমাদের সরকারের তাতে কি মাথা ব্যথা। কোপেনহেগেনে সম্মেলন হোক আর চাঁদের দেশে, আমরা নতুন গাড়ী কিনবো জাতিসংঘের টাকায়। এই তো সব। মানুষ মরছে তাতে কি।
আমরা ব্যস্ত আমাদের আখের গোছাতে।
আমরা হয় নতুন কাউন্সিল করবো, নতুন কমিটি করবো। আন্দোলন করবো কেমন করে পরের বার ক্ষমতায় যেতে পারি, আর না হয় আমরা জাতির পিতার হত্যাকান্ডের বিচার অথবা যুদ্ধপরাধীর বিচারে কাটিয়ে দিই নাহয় আরো ৫ বছর। দেশের মানুষের এত সময় কোথায় মনে রাখার। দিন আনতে তাদের পান্তে ফুরোয়।
সাফ ফুটবলে প্রধান মন্ত্রির স্মারক চিহ্ন নেই, অই কে আছিস এখনি তদন্ত কমিটি কর। একে মার তাকে ধর। নিত্য এই খেলা দেখতে দেখতে শুধু আমি নই, সারা জাতি হয়তো ক্লান্ত। যারা সংস্কার চেয়ে ছিলেন সব দলেই তারা অবাঞ্ছিত। ঊপেক্ষা আর অবহেলা তাদের সাথি।
তাতে কি স্বাধীনতার ঘোষক আর জাতির জনক নিয়েই তো পার করা যায় আরো ৫০ বছর। আমাদের ছেলে মেয়েরা পড়বে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিদেশে। আর সাধারন মায়ের সন্তানেরা বলি হোক ছাত্র রাজনীতি আর ড্রাগের। কি আসে যায়। আমরা আছি আমরাই থাকবো। হয় সরকারী দলে নাহয় বিরোধী দলে চেয়ার তো থাকবে আমাদেরই।
খুলনা, বরশাল সাগর গর্ভে চলে গেলে আমরা তদন্ত কমিটি করবো। সিলেট ভুমিকম্পে বিলীন হলে আমরা, উন্নত বিশ্বের সাহায্যের জন্য কান্না-কাটি করবো। আর দেশের মানুষ না খেয়ে থাকলে আমরা টাকার পাহাড় জমাবো সুইস ব্যাংকে। এই আমাদের নীতি।
জলবায়ূ পরিবর্তনে আমাদের মাথাব্যাথা নেই। গ্লোবাল ওয়ার্মিং কি খায় না মাথায় দেয় তা আমাদের জেনে কি লাভ। আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিবিধ, মন্ত্রি আমরাই সর্বে সর্বা।
হায়রে আমার দেশ, কবি সত্যি বলেছিলেন। " এরা তোমায় কিছু দেবে না মা, শুধু চেয়ে আছ মিছে ভানে।"
হাওয়ার উপরে চলছে আমার প্রিয় স্বদেশ। ঈশ্বর তাহার মংগল করূন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




