গতকাল (২৩শে জুলাই) এর কথা। রক্ত দিতে গিয়েছিলাম কাকরাইলের কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে। রক্ত দিয়ে আমাদের পারিবারিক গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলাম। সময় তখন সাড়ে নয়টা। মিরপুর ১ নাম্বার টেকনিক্যাল মোড়ে গাড়ি থেমে আছে। আমি মোবাইলে গেম খেলছিলাম। হঠাৎ করে ছিপছিপে একজন তরুণ দৌড়ে এসে আমার ফোন ছো মেরে নিয়ে গেলো! আমি চিৎকার দিয়ে হতভম্ব অবস্থায় বসে আছি। গাড়ি ঘুরিয়ে যে তাড়া করবো, সেই বোধও কাজ করছে না! প্রায় সাথে সাথেই বাইকে করে একজন যুবক গাড়ির জানালার পাশে দাঁড়ালো। জিজ্ঞেস করলো, "এটা আপনার ফোন?"। আমি কোনমতে সায় দিয়ে ফোনটা হাতে নিলাম। সে আমাকে বললো যে চোর দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো, তখন সে লাথি মেরে ফেলে দেয় তাকে। তার হাত থেকে ফোনটি পড়ে যায়। অতঃপর সে আমাকে ফোন ফেরত দেয়। আমি তাকে ধন্যবাদ দিলাম। সে তার আরোহীকে নিয়ে চলে গেলো।
আমার শরীরটা ভালো ছিলো না কাল। জ্বর এবং শরীরে ব্যথা ছিলো। আকস্মিক দুর্ঘটনা এবং অপ্রত্যাশিত সৌভাগ্যে আমি একদম বিমূঢ় হয়ে গেলাম। শরীরটা একদম ছেড়ে দিলো। বাড়ি ফিরে ধাতস্থ হতে অনেক সময় লেগেছিলো।
তিনি যে একজন চমৎকার মানুষ, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই, ভাই। অন্যরা হয়তো ফোন ফেরত দেয়ার বদলে গনধোলাই দিতে ব্যস্ত থাকতো। আমার ফেসবুক দীর্ঘদিন ডিএকটিভেট রাখার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু এ ঘটনার পর তাকে ধন্যবাদ না দেয়াটা খুব অন্যায় হয়ে যায়। আমি ফেসবুক একটিভেট করে নিজের টাইমলাইন এবং বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট দেই তাকে খুঁজে পেতে। এবং কী অদ্ভুত ব্যাপার! DSE গ্রুপে প্রথম কমেন্টটাই ছিলো তার! এ এক অভাবনীয় সুন্দর অভিজ্ঞতা।
তার নাম শাফি খান। তিনি একজন চিকিৎসক। তার সাথে আমার কথা হয় পরে। অসম্ভব ভালো মনের একজন মানুষ। যেকোন প্রয়োজনে তার সাথে যোগাযোগ করতে বললেন। আর বললেন, তিনি জীবনে সবসময় সৎ থাকতে চেয়েছেন। তার জীবনের দর্শন এমনই সাধারণ এবং সুন্দর।
এই শুভবোধ বেঁচে থাকুক সবসময়।
আমার উপহার পাওয়া স্যামসাং গ্যালাক্সি এস এইট একদম ভালো আছে। নিচের দিকে একটু ঘষে গেছে। আর কিচ্ছু হয় নি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:০৯