somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কারণে এবারের জন্মদিনটা আমি ঘটা করে পালন করছি...

০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজকে আমার জন্মদিন। ফেসবুকে আমি সবসময় আমার জন্মদিন হাইড করে রাখতাম। কিন্তু এবার আমি উন্মুক্ত করে দিয়েছি। যেন সবাই আমাকে শুভেচ্ছা জানাতে পারে। শুধু তাই না, আমার যেসব জিনিস পছন্দ, যা যা আমার দরকার, সব আমি কাছের মানুষদের কাছে চেয়ে চেয়ে নিয়েছি। এই একচল্লিশ বছর বয়সে এসে এই প্রথম এরকম করলাম। এর আগে কখনও করি নি।
কেন করলাম এরকম? এত আনন্দ, আর এত আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে এলো? জীবনে প্রথমবারের মতো কেন মনে হলো যে জন্মদিন ব্যাপারটা উদযাপন করা যায়?
ওজন কমানো, আর ফিটনেসে সচেতন না হলে এই প্রসঙ্গে কথা বলার উপলক্ষ্য কখনও তৈরিই হতো না। সংক্ষেপে সেই গল্পটাই বলা যাক তাহলে!
বয়সন্ধির সময় থেকেই আমি লিকলিকে। এর ওপর আবার ধাঁই ধাঁই করে লম্বা হতে লাগলাম। ওজন সে তুলনায় বাড়লো না। তের থেকে তেত্রিশ বছর পর্যন্ত প্রায় একই রকম ছিলাম। তারপর হুট করেই ওজন বাড়া শুরু হলো। আগে তো সেভাবে মাপতাম না, তবে ৬০ থেকে ৭০ এর ঘরে আসতে সময় লেগেছে বিশ বছর। আর তারপর হুট করেই বাড়া শুরু করলো। ৮০, ৯০, ১০০ পার হয়ে গেলো!
২০১৮’র ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো মেশিনের কাঁটা ১০০ পেরুলো। তখন মনে হলো যে, নাহ এবার ওজন কমানোর মিশন শুরু করা দরকার।
এখনে বলে রাখা ভালো, আমি প্রচণ্ড রকম পেটুক টাইপের ছিলাম। বিশেষ করে ভাত বলতে ছিলাম অবসেসড! ডিমের তরকারি দিয়ে এক গামলা ভাত খেয়ে ফেলতাম। সকালে রুটি বা পরোটা। দুপুরে দুই প্লেট ভরা ভরা ভাত। রাত্রে তিন প্লেট ভাত। এই আর কী!
তাহলে আমি ওজন কমাবো কীভাবে?
যেহেতু, ভাতের বিষয়ে কোনো আপোষ সম্ভব না, তাই ডায়েট না করে আমাকে হাঁটতে হবে। শুধু হাঁটতে হবে কেন? অন্য ব্যায়াম?
এইখানে আবার আরেক কাহিনী! অনেকেই জানেন, আমার অ্যাংজাইটি আর প্যানিক ডিজঅর্ডারের সমস্যা আছে। তা এই কারণে হার্টবিট একটু বেশি হয়ে গেলেই আমি ভাবতাম, আমার মনে হয় হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে। এই ভয়ে আমি এক্সারসাইজ করতাম না। যদি হার্টবিট বেড়ে হার্ট বের হয়ে যায়! হ্যাঁ, অনেকটা এমনই অনুভূতি হতো।
আমার স্ত্রী ততদিনে ওজন কমানোর মিশনের একজন সৈনিক। ডায়েট, এক্সারসাইজ সবই করে। তা ওর দেখাদেখি আমি খুবই সিম্পল একটা হোম ওয়ার্কআউট করা শুরু করলাম ইউটিউব দেখে। Leslie Sansone এর Power walk.
তখন আমার অবস্থা এত খারাপ ছিলো, যে মাত্র ১০ মিনিট করেই ক্ষান্ত দেই। দম পাচ্ছিলাম না, কোমড় ব্যথা, ইত্যাদি।
(পরে একবার সেই ওয়ার্কআউট আমি টানা সাড়ে চারঘন্টা করেছিলাম!)।
যাই হোক, কিছুদিন চেষ্টা করার পর আমি ওয়ার্কআউটটার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হই, এবং নিয়মিত এটা করে আর প্রচুর হেঁটে ১০১ থেকে ৯৪তে নেমে আসি দুই মাসে।
কিন্তু খাওয়া কন্ট্রোল না করে শুধু হেঁটে আর পাওয়ার ওয়াক করে আসলে ওজন কমানো অসম্ভব কঠিন। দুপুরে আর রাত্রে চার প্লেট ভাত অন্ততপক্ষে না খেলে তো আমার চলেই না! তো খাওয়ার এই অনিয়ম পুষাতে গেলে যে বিপুল পরিমাণ হাঁটা দরকার সেটা আসলে সবসময় চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব। এর ফলে যা হলো, ঐ একবার ৯৪ এ নেমে আসার পর এর নিচে আর নামলো না। ওজন ১০০ এর ওপর উঠতে শুরু করলেই আমি হাঁটাহাঁটি বাড়িয়ে দিয়ে কয়েক কেজি কমাই। তারপর আবার বেড়ে যায়। ৯৮-১০১ এই খেলা চলতে থাকলো।
২০২২ এর মাঝে ১০৪ ছুঁয়ে ফেললাম! তখন আবারও হাঁটা এবং পাওয়ার ওয়াক করার পাশাপাশি ভাত খাওয়াও একটু কমালাম।
২০২২ এর রোজার সময়কার ঘটনা। ইফতার করে চা খেয়ে এক্সারসাইজ করতে গিয়ে প্রচণ্ড অস্বস্তি অনুভব করলাম। ধীরে ধীরে তা রূপ নিলো একটা Full blown প্যানিক অ্যাটাকে।
প্যানিক অ্যাটাক হবার পর তার রেশ কয়েকদিন থেকে যায়। কিন্তু সেবার মাস পেরিয়ে গেলেও আমার অস্বস্তি কাটছিলো না।
হাঁটতে গেলেই বুক ধড়ফড়।
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা।
ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাস আটকে উঠে বসা।
রোজার ঐ সময়টা থেকে ঈদের ছুটি পর্যন্ত একরকম স্থবির হয়ে কাটালাম।
শ্বশুরবাড়িতে ঈদ কাটিয়ে ঢাকায় ফিরে ইসিজি আর ইকো করতে দিলাম ডেল্টাতে। সেটার রিপোর্টে কী যেন একটা কনফিউশন পাওয়া গেলো। ডাক্তারদের কনফিউশনের কথা শুনে এবং নিজে নানারকম গবেষণা করে আমি প্রায় অর্ধমৃত হয়ে গেলাম টেনশানে।
চল্লিশ বছর বয়সী একজন স্থুলকায় পুরুষ, যার জীবনে কোনো আশা নেই, নিঃশ্বাস নেয় টেনে টেনে, অ্যাংজাইটির পুরোনো দানব বুক খামচে ধরছে। সবসময় অস্বস্তির অশুভ উপস্থিতি। জীবন থেকে সব আশা বিলীন হয়ে যেতে লাগলো।
আবার গেলাম মিরপুরের হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নতুন করে টেস্ট করতে। সেখানে সবকিছু ঠিকঠাক এলো।
হার্টের রিপোর্ট ঠিক আসার পর গেলাম সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে। ঔষধগুলি রিভাইজড হলো। সব মিলিয়ে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এবং স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে পেলাম জীবনে।
এই দুই সপ্তাহ ভাবলাম, এবারই সময় বাউন্স ব্যাক করার। এভাবে তো আর পারা যায় না। যদি ভাত কম খেতে হয়, কম খাবো। যদি ছেড়েই দিতে হয়, ছাড়বো। আমার বয়সের কত মানুষ অসুস্থ, তাদের হার্টের ব্যামো, তাদের প্রেসারের সমস্যা, ডায়াবেটিস, ইত্যাদি। আর আমি এত অনিয়ম করার পরেও শারীরিকভাবে সুস্থ আছি। ভাগ্যের এই নির্লজ্জ সহায়তাকে যদি আমি কাজে না লাগাই, তাহলে আমার চেয়ে বোকা আর কে আছে?
কেন আমি নিজের হাতে অসুখ তৈরি করে জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলবো?
মন স্থির করার পর সিদ্ধান্ত নিলাম এবার একদম প্রফেশনালের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম করে ডায়েট করবো। যোগাযোগ করলাম রাতুল দত্তএর সাথে। খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। কী না কী ডায়েট দেয়! আমি পারবো তো?
২৫শে মে আমাকে ডায়েট চার্ট দেয়া হলো। সেদিন আমার ওজন ছিলো ১০০.৫ কেজি।
ডায়েট চার্ট দেখে আস্বস্ত হলাম। দুই বেলা ভাত, সকালে রুটি, ডিম, কলা, মাছ, মাংস সবই আছে! তাহলে আর চিন্তা কী! শুরু করে দিলাম!
দুই সপ্তাহ পর ওজন দাঁড়ালো ৯৭.৪৫ কেজি। দুই সপ্তাহে ৩.০৫ কেজি গায়েব! উৎসাহিত হলাম। আমাকে নতুন ডায়েট চার্ট দেয়া হলো।
দুই সপ্তাহ পরে ওজন হলো ৯৫.০৫ কেজি।
আহা! ওজন কমতে দেখার চেয়ে আনন্দের আর কী আছে!
এ এক মজার খেলা। নেশার মতো হয়ে গেলো। প্রচুর পড়াশোনা করতে লাগলাম ডায়েট, নিউট্রিশন, ক্যালরি, ম্যাক্রো, মেটাবলিজম ইত্যাদি নিয়ে। আমার স্ত্রী, পুত্র-কন্যারা বিরক্ত হয়ে গেলো। সারাক্ষণ আমি খালি ওসব নিয়েই কথা বলি। ওজন কমছে ভালো কথা, আর কোনো কথা নাই?
আমি বলি কী, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এই দুইটা জিনিসই দরকার।
মাইন্ডসেট আর অবসেশন।
এই দুইটা ঠিক থাকলে আপনি ঠিকঠাক সব মেইনটেন করতে পারবেন।
ওহ হ্যাঁ, ডায়েট মেইনটেন করার পাশাপাশি আমি প্রচুর এক্সারসাইজ করা শুরু করলাম। প্রথম দিকে লো ইনটেনসিটি কার্ডিও। আগে যেসব করতাম। হাঁটা আর পাওয়ার ওয়াক।
কিছু ওজন কমার পরে হালকা বোধ করায় শুরু করলাম ইনডোর রানিং।
এরপর শুরু করলাম হাই ইন্টেনসিটি এক্সারসাইজ। যে এক্সারসাইজ আমি কয়েকবার চেষ্টা করেও কখনও দশ মিনিটের বেশি করতে পারি নি, সেই ২৮ মিনিটের এক্সারসাইজ পুরোটা শেষ করে ফেললাম!
রাতুল দত্তের গ্রুপে দুই সপ্তাহ পর পর আপডেট দিতে হতো।
আমার আপডেটগুলি এরকম ছিলো-
25/5/2022 : 100.5 Kg
1st update: 7/6/2022 : 97.45 kg
2nd update :21/6/2022: 95.05 kg
3rd. Update :5/7/2022 : 91.8 kg.
4th update. : 20/7/2022: 90.8 kg
5th Update- 3/8/2022: 89.35 Kg
6th Update- 17/8/2022: 87.65 kg
7th Update- 31/8/2022: 86.00 KG
8th Update- 15/9/2022: 85.4 kg
9th Update- 30/9/2022: 83.5 kg
10th Update- 14/10/2022: 82.45 Kg
মাঝখানে ২২শে অক্টোবর আমি আমার কাঙ্খিত ওজনের একদম কাছাকাছি এসে গিয়েছিলাম। ৮১.৫ কেজি।
আর মাত্র ৫০০ গ্রাম কমলেই মিশন কমপ্লিট! স্বপ্নপূরণ!
তখন থেকে কিছুটা ঢিল দেয়া শুরু করি। এতে ওজন কিছুটা বেড়ে যায়। আমার লক্ষ্য ছিলো ৭ই নভেম্বরের মধ্যে ৮১ কেজিতে আসবো। মাঝে বেড়ে ৮৪ কেজি হয়ে গেলো। এখন ক্লোজিং ব্যালেন্স ৮২.৬ কেজি।
অল্পের জন্যে লক্ষ্য পূরণ হলো না। এটা নিয়ে আমার আক্ষেপ আছে কিছুটা, তবে হতাশা? একদমই নেই।
এখন আসলে ওজন কমানো নিয়ে আমি চিন্তিত না। এখন আমি এই ওজন বজায় রেখেই, বা বাড়িয়ে কমিয়ে আমার ফ্যাট লস করবো। মাসল বাড়াবো। এর জন্যে আছে নতুন স্ট্রাটেজি।
এখন থেকে কেজিতে না, টার্গেট হবে ইঞ্চিতে।
কোমড়, হিপ, চেস্ট, বাইসেপ, এগুলির মেজারমেন্ট রাখা হবে।
জার্নি শুরুর সময় তো আর এসব মাথায় ছিলো না। মাপা হয় নি। তবে কোমড়ের প্রথম মেজারমেন্ট ছিলো ৪৩। এখন এসেছে ৩৭.৫ এ। মাঝে ৩৬.৫ এ নেমে এসেছিলো, আবার বেড়েছে।
এখন লক্ষ্য ৩৫ এ নামিয়ে আনা।
স্ট্রেন্থ এক্সারসাইজ শুরু করেছি। কার্ডিওর জায়গায় প্রাধান্য দিচ্ছি ডাম্ববেল, পুশ আপ এবং অন্যান্য রেজসিটেন্স এক্সারসাইজ। স্ট্রেন্থ বাড়াতে হবে। গতকাল জীবনে প্রথমবারের মতো সারাদিনে তিন সেটে মোট ১০০ পুশ আপ দিলাম। এটা চলতে থাকবে
রাতুল দত্তের কথা আবারও বলতে হয়। সে কিন্তু দুই মাসের পর আর আমার প্রোগ্রাম আপডেট করে নি। বলেছে আগের ডায়েটই চালিয়ে যেতে। সে চাইলেই পারতো একটু অদল বদল করে নতুন প্রোগ্রাম দিয়ে আরো কিছু টাকা কামিয়ে নিতে। তার ক্লায়েন্টরা ঠিকঠাক পালন করতে না পারলে সে তাদের চেয়েও বেশি আপসেট হয়। মানুষের ফিটনেস ঠিক করা রীতিমত তার প্যাশন!
এবং আমার স্ত্রী তিথি। অন্নপূর্ণা দেবীর মতো সে ক্লান্তিহীনভাবে আমার জন্যে যখন যে খাবার দরকার সেটার যোগান দিয়ে গেছে। এই সহযোগিতা পেয়েছি বলেই এতদূর আসতে পেরেছি। আগে আমরা একসাথে জাংকফুড খেতাম (এখনও খাই এবং খাবো, তবে কম), আর এখন একসাথে ব্যায়াম করি। সেও ইতিমধ্যে ১৩ কেজি কমিয়ে ফেলেছে রাতুলের তত্ত্বাবধানেই। ফিটনেস জার্নিতে এরকম একজন পার্টনার পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তার ওজন কমানোর মিশন এখনো শেষ হয় নি। এর আগেও সে অনেকদূর চলে এসেছিলো। পরে আবার পিছিয়ে গেছে। এবার তাকে বলেছি, স্বাভাবিক সীমায় আসার আগে কোনো থামাথামি নেই!
সাড়ে পাঁচ মাস আগের এবং এখনকার আমার মধ্যে যেসব বদল এসেছে-
১। আগে প্রতি রাতে খাবার আগে গ্যাসের ট্যাবলেট খেতে হতো। মানে হতোই। গত ৫ মাসে মনে হয় ৫টিও খেতে হয় নি।
২। আমি ব্রোমাজিপাম নামক এক অ্যাংজাইটির ঔষধের প্রতি অ্যাডিক্টেড ছিলাম। গত ১৮ বছর ধরে প্রতি রাতে শোয়ার আগে খেয়েছি। এটা না খেলে আমার হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যু হবে মনে করতাম। এমনিতেও ডাক্তারদের দেয়া নানা ঔষধ খেতে হতো অ্যাংজাইটির জন্যে। তারা এটা সাজেস্ট করতো না। তাও আমি লুকিয়ে খেতাম।
গত এক মাস ধরে খাই না। ওজন কমানোর চেয়েও এটা আমার কাছে বেশি অবিশ্বাস্য।
৩। ২০১৩ এর পর এই প্রথম আমাকে দিনে মাত্র একটি ঔষধ খেতে হয়। তাও আবার আগের চেয়ে কম ডোজে।
৪। এখন এক বেলা ভাত খাই। তাও আগের চেয়ে পরিমাণে অর্ধেক।
৫। সবজি ছিলো দুই চোখের বিষ। এখন আমার ভাত, ফ্রায়েড রাইস সবকিছুর সাথেই সবজি লাগবেই।
৬। এটা আমার কলিগরা বলে, আমি না কি আগের চেয়ে অনেক প্রো অ্যাকটিভ এবং পজিটিভ হয়েছি। চেহারা এবং চালচলন দুটোতেই অনেক প্রাণবন্ততা।
৭। আর সবচেয়ে বড় কথা, এখন আমার নিজেকে মূল্যবান মনে হয়। মনে হয় আমার অনেক কিছু দেয়ার আছে, নেয়ারও আছে।
আর এজন্যেই, আমার জন্মদিন আমি উন্মুক্ত দিয়েছি ভালোবাসা আর শুভকামনার জন্যে। হাত পেতে নিয়েছি ইচ্ছেমতো উপহার।
আজ থেকে আমি স্বাভাবিক ডায়েটে ফিরবো। স্বাভাবিক মানে যাচ্ছেতাই খাওয়া না। জাংকফুডের ক্ষেত্রে সামান্য ছাড় দিবো। কিছুটা ভাত বেশি খাবো। প্রোটিন আরেকটু বেশি নেবো পরিমাণে। এই তো!
এখন আসলে আমি চাইলেও খুব বেশি খেতে পারবো না। আগে তিন প্লেট কাচ্চি খেতে পারতাম। এখন এক প্লেটের বেশি সম্ভব না।
লাইফস্টাইলে যদি স্থায়ী পরিবর্তন না আনতে পারেন, তাহলে আসলে ওজন কমিয়ে তেমন কোনো লাভ নেই। ওটা বারবার ফিরে আসবে।
প্লেটের পর প্লেট কাচ্চি, ভাত খেয়ে হাঁসফাঁস করার চেয়ে পরিমাণমতো সবকিছু খেয়ে, ব্যায়াম করে রাতের বেলা একটা সুন্দর ঘুম দেয়া, জীবনের এই দিকটা আমার কাছে অধরাই ছিলো। অবশেষে তার দেখা পেলাম ৪১ বছর বয়সে এসে।
আগে আমার ছিলো সিগারেট এবং অন্যান্য আগ্নেয় তরলের নেশা( সে গল্প এখানে না)। এখন সেটা বদলে হয়েছে সুস্থ থাকার নেশা।
এর চেয়ে সুন্দর নেশা আর নাই। আপনিও নিমজ্জিত হন। আমি চাই কেউ যেন অবহেলায় এই উপহার থেকে বঞ্চিত না করে নিজেকে। তাই নিয়মিত ফিটনেস আর নিউট্রিশন নিয়ে লেখা লিখতে থাকবো আমার পেইজ Fitness Buddies এবং গ্রুপ শরীর ফিট তো আপনি হিট! এ । ইতিমধ্যেই বেশ কজনকে ফিটনেস ঠিক করতে উদ্বুদ্ধ করেছি। আমি চাই এই সংখ্যাটা বেড়েই চলুক। আমার জীবনের নতুন লক্ষ্য এটা।
এই হলো আমার গল্প।
আর এখন আমাকে প্রচুর ভালোবাসা আর শুভেচ্ছা জানান।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৩
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×