somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"হেমন্ত - তমা" পর্ব ৪

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- ওই হনুমান! কই আপনি?

ফোনটা রিসিভ করে এই বাক্যটা শুনে রীতিমত থতমত থেয়ে গেলাম! থতমত খাওয়ার কারন হলো, "তমা" কখনো এমন করে আমার সাথে কথা বলে না। রাগ হয়ে কথা বললে ও এমন ভাবে বলে না। কি রকম একটা ভাবে যেন বললো! এই "কিরকম" জিনিসটা যে কি সেটা বুঝে উঠতে পারছি না। না বুঝেই আমি তমার উত্তর দিয়ে বললাম,

- বলো তমা!
- আপনাকে কি জিজ্ঞেস করছি অামি?
- কি?
- আপনি এখন কোথায়?
- ও আচ্ছা! বাসায়
- পাঁচ মিনিট এর মধ্যে আপনি আমার ভার্সিটির সামনে আসবেন
- কেনো?
- আসতে বলছি আসবেন
- কারন টা কি?
- আপনাকে আসতে বলছি এটাই বড় কারন। না আসলে আপনার খবর আছে কিন্তু!

বলেই ফোনটা কেটে দিলো তমা। আমার কি যাওয়া উচিৎ না উচিৎ না সেটা ভাবছি। তবে তমার কন্ঠে কেমন যেনো একটা রাগ রাগ ভাব বুঝতে পারলাম। কিন্তু রাগ টা যে আমার উপর না সেটা বুঝতে পারছি। তাহলে আমাকে ডাকলো কেনো? অন্যের উপর রাগ আমার উপর ঝাড়বে নাতো!!
আর যদি না যাই তাহলে তো আমার আবার খবর আছে! আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ২ টা ২০ বাজে। যেতে যেতে ৩০ বাজবে। ৫ মিনিটে যাওয়া সম্ভব না। ২.৩০ মানে আড়াইটা। আড়াইটার খবর লং টাইম হয়। ভয়াবহ ব্যাপার স্যাপার। তাই আমি রওনা দিলাম।

রওনা দেওয়ার সাথে সাথে আবার ফোন আসলো। এবার কি বলবে তা আল্লাহ্ মালুম! আমি ফোনটা রিসিভ করলাম:

- ওই শোনেন
- বলো তমা
- আপনি একটু ইয়ো ইয়ো ভাব নিয়ে আসবেন
- ইয়ো ইয়ো ভাব!!!
- হুম
- সেটা কি আমি জানি না তমা
- না জানলে ও আপনি ইয়ো ইয়ো ভাব নিয়েই আসবেন। ওকে? জলদি আসেন। আর না আসলে তো আপনি আমার রাগ সমন্ধে জানেন ই! রাখি।

তমা ফোনটা কেটে দিলো। আর আমি পরে গেলাম বিপদে। যেই সেই বিপদ না। একেবারে মহা বিপদ। মহা মুসিবত ও বলা যায় !
আচ্ছা, ইয়ো ইয়ো ভাব কি? এই জিনিসটার সাথে আমি মোটে ও পরিচিত নই। এইটা খায় না মাথায় দেয় তা তার কাছে জিজ্ঞেস করলে ভাল হতো। কিন্তু সেটা করা হয়নি।

ইয়ো ইয়ো ভাব ই বা কিভাবে নিবো! ইয়ো ইয়ো ভাব নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে আমি রওনা দিলাম। পৌছে গেলাম তমার কাছে। আমি তমার সামনে যেয়ে দাড়ালাম। তমা আমাকে উঠে দাড়ালো এবং আঁড় চোখে তাকিয়ে বললো:

- এতো লেট হলো কেন আসতে?
- ইয়ে ইয়ে ভাব নিতে সময় লেগেছে
- এটা আপনার ইয়ো ইয়ো ভাব!!??
- হ্যাঁ! সুন্দর হয়েছে না তমা?
- একদম হনুমান এর মতো লাগছে।
- বলো কি!
- হ্যাঁ! আর এই কালো শাঁট টা পড়ে আসছেন কেন? এটা আমার একদম পছন্দ না
- আচ্ছা আমরা এই টপিক নিয়ে পরে কথা বলি। কেনো আসতে বলছো সেটা বলো।
- ওকে! ওই ছেলেটাকে দেখেন

তমা আমাকে একটি ছেলেকে দেখালো। লম্বা ফর্সা, স্বাস্থ্যবান একটা ছেলে। এই ছেলেটাকে দেখানোর উদ্দেশ্যটা কি জিজ্ঞেস করায় তমা বললো:

- দেখেছেন ভালো করে?
- হুম দেখলাম তো।
- এই ছেলেটাকে আপনি মারবেন
- এ্যা!!!
- এ্যা নয় হ্যাঁ
- কিন্তু কেনো?
- কারন ওই ছেলেটাকে আমাকে বিরক্ত করে তাই
- তাই বলে মারতে হবে!!
- হুম
- আমি মারবো কেন? তোমাকে বিরক্ত করে তুমি মারো!
- স্টুপিড
- কে?
- আপনি
- কেনো?
- যান ওকে মারুন
- আমি পারবো না
- না পরলে আমি আপনাকে মারবো
- এ্যা!!
- হুম,, জলদি যান
- আচ্ছা আমি কেনো মারবো?
- কারন ওই ছেলেটাকে বলেছি যে, আপনি আমার বয়ফ্রেন্ড। আর আমি আপনাকে দিয়ে ওকে মার খাওয়াবো তাই
- সর্বনাশ!
- কেনো?
- ওই ছেলেটা কি মার খাওয়ার জন্য বসে আছে? মার না খেয়ে তো অন্য কিছু খেতে পারে। পেট ভরবে
- দেখেন হেমন্ত ভাইয়া একদম ফাজলামো করবেন না আর আমার রাগ উঠাবেন না

তমা রাগলে তমাকে খুব সুন্দর লাগে। এই কথাটা তমাকে বলতে ইচ্ছে করছে। বললে হয়তো আরো রেগে যাবে। তাই বললাম না। তমাকে তো হাসলে ও সুন্দর লাগে আবার রাগ করলে ও সুন্দর লাগে! ওই ছেলেটা হয়তো এই সুন্দরের মায়ায় আটকে গেছে। যাওয়াটাই স্বাভাবিক!

- আপনি যাবেন?
- তমা, ওই ছেলেটারে দেখছো ভালমতো?
- না দেখলে আপনাকে দেখালাম কিভাবে?
- ওমন একটা হৃষ্টপুষ্ট ছেলেকে কিভাবে মারবো? উল্টা আমাকে মারবে?
- আপনি ওকে না মারতে পারলে আমি আপনাকে মারবো। আর মেরে হাসপাতালে পাঠাবো। সো, যান

তমা আমাকে ধাক্কা দিয়ে পাঠয়ে দিলো। আমি পরে গেলাম বিপদে। আমি ছেলেটার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। পিছনে তাকালাম। দেখরাম তমা রাগ মুখে তাকিয়ে আছে। সামনে ও বিপদ, পিছনেও বিপদ। আমার অবস্থা এখন "ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি " টাইপ!!

আমি ছেলেটার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে তমার কাছে ফিরে আসলাম। তমা আগুন চোখে তাকিয়ে আছে। আমি একটু হাসলাম।

- আপনি ওকে মারলেন না কেনো?
- মারা লাগবে না
- কেনো?
- আর তোমাকে বিরক্ত করবে না
- আপনি কি এমন বলেছেন যে বিরক্ত করতে করবে না?
- সেটা সিকরেট হিসেবে থাক
- আচ্ছা

তমার এবার হেসে দিলো। সেই সুন্দর হাসি। আমি নিজেই তো ওর হাসির জালে আটকে যাচ্ছি ছেলেটির ই বা দোষ!

- চলেন
- কোথায়?
- ঘুরে আসি
- চলো

তমা রিক্সা ডাকলো। রিক্সায় উঠলাম আমরা। রিক্সায় সাধারনত প্রেমিক-প্রেমিকারা হুড লাগিয়ে বসে। কিন্তু তমা ও হুড লাগিয়ে ই বসলো!

- আচ্ছা, মি. হেমন্ত
- বলো তমা
- এখন সবাই কি ভাববে?
- কি ভাববে?
- ভাববে আমরা প্রেমিক-প্রেমিকা। হি,,হি

আমি তমার কথার কোন উত্তর দিলাম না। রিক্সা রমনার সামনে এসে থামলো। আমরা রমনার ভিতর হাঁটতে লাগলাম। দুজন পাশাপশি হাঁটছি। অথচ কেউ জানি না আমরা একে অপরের কি হই!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×