somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

.......মা......

২১ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

……রিতা প্লিজ আস্তে বল। মা শুনবে।
…শুনার জনইতো বলছি। হয় ঔ মহিলা
থাকবে না হয় আমি?
…সে কি রিতা। মা কে তুমি এসব
কেন বলছ?
…একটু বের হতে পারি না,
বান্ধবিদের
সাথে ফোনে কথা বলতে পারি না।
একটু রাত করে ফিরলে কত কৈফিয়ৎ।
আমি আর সহ্য করতে পারব না। …আচ্ছা
আমি দেখছি।
প্রবাসি রিফাত কানাডায় থাকে।
রিতা তার বিবাহিতা স্ত্রী।
তাদের দাম্পত্য জীবন শুরু হয় ২বছর। রিতা
বার বার রিফাতের মা কে নিয়ে
বলে।
রিতা তো ঠিকই বলে। বন্ধু বান্ধব
তো থাকবে। আর একটা মানুষ
তো বেড়াতে যাবেই।তাই বলে এত
কিছু?
না না। মা কে এটা নিয়ে বলতে হবে।
দেশে আসলে এই অবস্হা। দুর
ভাল লাগেনা।
…মা! আসব?
…রিফাত আই বাবা। মায়ের
কাছে আসতে পারমিশন লাগে?
…মা একটা কথা বলব? তুমি কোথাও
থেকে বেড়িয়ে এস।
ঘরে থাকতে থাকতে কেমন যেন
বাহিরের পরিবেশের
সাথে অচেনা হয়ে গেছ।
… রিফাত আমিও তা ই ভাবছি। তোদের
খুব অসুবিধা হচ্ছে না?
… আমি তোমাকে মাসে মাসে টাকা
পাঠাব। তুমি অন্য কোথাও গিয়ে থাক।
…তুই এখনও ছোট রয়ে গেলিরে। মায়ের
কষ্ট ঠিক আগের মতই বুঝিস। তোর মনে
আছে একদিনে গভীর রাতে আম
খাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিলি।
তোর বাবা দ্রুত গিয়ে আম এনেছিল।
আর সে আম কাটতে গিয়ে ঘুমের
ঘুরে আমি আমার হাত কেটে ফেলি।
আর তোর সে কি কান্না। কত যত্নে
আমার হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলি।
…মা তুমি এখনও আগের যুগেই রয়ে
গেলে।
…হ্যা রে। তাই তো আজও তোর
কাছে পড়ে আছি। মনে আছে? তুই তোর
একদিন খুব জ্বর। কোনো কথা বলতে
পারছিস না।
তোকে জড়িয়ে ধরে সারা রাত
ছিলাম। রাত যত বাড়তে লাগল।
তোর প্রতি আমার ভালবাসা ততই
নিবিড় হতে লাগল। একটু ঘুমাইনি
সেদিন। কত কষ্ট পেয়েছিস তুই।
… মা বাদ দাও ওসব। অনেক রাত
হয়েছে ঘুমিয়ে পড়।
রিফাত যাওয়ার পর মিসেস সীমার
চোখে বেয়ে অশ্রুর ঢল। তিনি অতীত
মনে করার চেষ্টা করলেন।
রিফাতকে নিয়ে কত স্মৃতি আজ দুয়ারে
এসে ভিড় জামাচ্ছে।
রিফাত আসবে খবর শুনে সিফাত সেকি
খুশি। বাসায় একটি ছোট করে পার্টিও
দেয়। তারপর ঝগড়া লাগতো ছেলে
হবে না মেয়ে হবে। সীমা বলত ছেলে
হবে আর সিফাত বলত মেয়ে হবে। এই
নিয়ে তুমুল কান্ড। অনেকদিন কথা পর্যন্ত
বলেনি সীমা। শেষমেস সীমার কথাই
সত্যি হল। ছেলেই হল। সীমা সিফাতের
নামেই নাম ঠিক করল রিফাত। এবং
বাড়ির নামও রাখা হল "রিফাতের
নীড়"। তার প্রিয় রং লাল। তাই লাল
রঙয়েই করল বাড়িতে। সবকিছু
রিফাতের পছন্দমত।
রিফাতের বাবা মারা গেল রোড়
এক্সিড়েন্টে । সেথেকে রিফাতকে
সম্বল করেই বেছে থাকা।
ভাবতে ভাবতে কবে ঘুমিয়ে গেল
খেয়াল নেই।
খুব ভোরে উঠল রিফাত। উঠে তার
মায়ের কাপড় ছোপড় ঘুছাতে লাগল।
…চল মা তাড়াতাড়ি। দেরি হয়ে
যাচ্ছে। আমি আজ কানাড়া চলে যাব।
…বাবা একটু মাথাটা এদিকে আন।
কপালে চুমু একে দিয়ে হাটা শুরু
করলেন গাড়ির দিকে। রিফাত তার মা
কে এমন একটি জায়গায়
নিয়ে এল যেখানে সবাই বৃদ্ধ
মহিলা খেলা করছেন, গল্প করছেন।
রিফাত দশবছরের টাকা এককালিন
পরিশোধ করে চলে গেল। অনেকক্ষন
তাকিয়ে ছিল রিফাতের দিকে।
একবার যদি ফিরে তাকায়। একবার
যদি মা বলে ডেকে তাকে জড়িয়ে
ধরে। না, রিফাত
গাড়িতে উঠে বউকে নিয়ে চলে
গেল।
১ বছর পর
……………………
কি ব্যাপর রিতার মোবাইল দুদিন
ধরে বন্ধ। কোনো সংযোগ দিচ্ছে
না। ব্যাপারটা কি? এমন তো কিছু
হয়নি?
মা কি আবার ফিরে এসেছে?
না এই মহিলাকে নিয়ে পারা যাবে
না।
দ্রুত দেশে যেতে হবে। রিফাত চলে এল
দেশে। দরজা খুলা। রিতার ঘরও খুলা।
আলমারি খালি। হঠাৎ বিছানায়
একটি কাগজ চোখে পড়ল। ডিবোর্স
পেপার সাথে রিতার স্বাক্ষর।
একটি চিরকুট। এলোমেলো হয়ে গেল
মুহুর্তে সব। রিতা তার সাথে প্রতারনা
করল। সাথে সাথে বিছানায় বসে পড়ল
রিফাত। কান্নার অঝর ধারা গাল
বেয়ে নামতে লাগল। তার মায়ের
কথা মনে পড়ল। মা তো ঠিকই করত।
মা কে কষ্ট দিয়ে সে ভুল করেছে। দ্রুত
গেল বৃদ্ধাশ্রমে।
…আমার মা কোথায়?
…কি বলছেন এসব? কত করে বললাম
লাশ টা নিয়ে যান। আপনারা তো
কেউ
এলেন না। তাই আমরা আমাদের কবর
স্হানে কবর দিছি। ঐ যে এটা
রিফাত বসে পড়ল।
মা তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেলে?
আমায় রেখে গেলে। কেন মা কেন।
আমায় ক্ষমা করে দাও মা। ক্ষমা করে
দাও। রিফাত কবর
জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
রাত হয়ে গেল। যত রাত
বাড়ছে ভালবাসা ততই নিবিড়
হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×