somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ খেলাঘর (প্রথম পর্ব)

১১ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগামীকাল নিশিতা হত্যা মামলার রায় হবে। রায় এ দীর্ঘ সাজা, যাবজ্জীবন বা ফাঁসি যা ই হোক না কেন আগামীকাল থেকে আবার আমার বন্দী জীবনের শুরু।

প্রিয় জায়গা প্রিয় মানুষের সান্নিধ্য প্রিয় স্বাধীনতা যা কিছু আছে এ জনমের মত সব কিছু হারাবো।দমবন্ধ করা অন্ধকার কুঠুরি হবে আমার শেষ ঠিকানা। জীবনের আর কোন মূল্যই থাকবে না। শুধু কোন রকমে শ্বাস নিয়ে শরীরটাকে টিকিয়ে রেখে একটু একটু করে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা।
কত দ্রুত ঘটে গেল কত ঘটনা।কত সময় বয়ে গেল বৃথাই। এ জীবন পেল না কোন পূর্ণতা। ভাবলেই অসাড় হয়ে আসে মন।
কনকনে বাতাস চলন্ত রিকশায় বসা আমার মুখে কাঁচের মত এসে বিঁধছে। সময় নেই বলে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেই আমাকে বের হতে হয়েছে।
আজ ক'দিন ধরে ঘোরের মধ্যে ই আছি। রিকশাওয়ালা ভাই এর ডাকে সম্বিৎ ফিরলো আমার।আশেপাশে তাকালাম। অনেক কিছু বদলে গেছে যদিও তবু চেনা চেনা লাগলো ।আমি মনে হয় আমার গন্তব্যে চলে এসেছি। হ্যঁা এটাই সেই রাস্তা। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের একটা গলির পর শের শাহ শুরী রোডের ডি ব্লক। ওই তো ওই বাড়িটা ২০/*

আমি রিকশাওয়ালা ভাইকে থামতে অনুরোধ করলাম। সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো
- আপা কি এইখানে ই নামবেন?
নামতে চেয়েছিলাম প্রথমে।পরে কি ভেবে মত পাল্টালাম।বললাম
- আমি নামবো না ভাইয়া। পাঁচ মিনিট দাঁড়ান আমি আপনার রিকশাতে ই ফিরবো। বেশি সময় নেব না।ওই সামনের আম গাছওয়ালা চারতলা বাড়িটার পাশের একতলা বাড়িটার সামনে একটু দাঁড়ান।
রিকশা নির্দিষ্ট স্থানে দাড়াতেই আমি আমার শৈশব কৈশর সব যেন একসাথে দেখতে পেলাম চলচ্চিত্রে দেখানো ফ্লাসব্যাক দৃশ্যের মত।
আহা কত স্মৃতি কত গান কত হাসি! সব যেন খেলাঘর।একসময় যে বাড়িতে আমার অবাধ যাতায়াত ছিল আজ সেই বাড়িতেই আমি অবাঞ্ছিত। এখন যা পরিস্থিতি আর কোন দিন হয়তো এখানে আমি আসতে পারবো না।মুহুর্তে ই নিজের অজান্তেই আমার চোখের পাতা ভিজে উঠলো। নাহ! বড্ড আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছি। মনে মনে ভাবলাম এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়ানো ঠিক হবে না। আমি রিকশাওয়ালা ভাইকে বললাম
- আমার হয়ে গেছে ভাইয়া আপনি রিকশা টান দিন।
এমন সময় কয়েকজন ছেলে যারা গম মসলা পিষাইয়ের মিলটার সামনে দাড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো তারা এগিয়ে এলো।ওদের মধ্যে থেকে একজন এগিয়ে এসে বলল
- আপনি কি কাউকে খুঁজছেন?
আমি ছেলেটির চোখ দেখেই চিনতে পারলাম।কত বড় হয়ে গেছে । ওর নাম সুজন।রোকসানা আপুর ছোট ভাই। এই এতটুকু ছিল।একসময় আমার কোলে থাকতে ই বেশি ভালোবাসতো। আজ সে সব অতীত। সেই সব সম্পর্কও অতীত। খুব বলতে ইচ্ছে করছিল।বলি, আমি তোর সাদিয়া আপু বাবু।চিনেছিস?
না আমি কিছুই বলি নি বলতে পারি নি। চাইলেই অনেক কিছু বলা যায় না।
রিকশা ছুটে চলছে..... বাতাসের তীব্রতা বেড়েই চলেছে।
চলবে
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৬
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×