somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আধাচক্র( ছোট গল্প)

০২ রা জুন, ২০০৯ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

:|এ গ্রামে এমন কেউ নেই যে বলতে পারে, এই রেইনট্রিগাছটার বয়স কত হবে, এ রকম ডালপালা ছড়িয়ে আছে কতদিন ধরে। গাছটি একেবারেই খালের পাড়ে, খালটি বাকাচোরা হয়ে একসময়ে নদীর সঙ্গে মিলেছে। দুনিয়ার শকুন-পেচারা বসতি গড়েছে গাছটিতে, সে বাপ-দাদার আমল থেকেই। সন্ধ্যা হলেই পাখিরা চেচামেচি করে, জায়গা দখল নিয়ে গলা ফুলিয়ে কোন্দল করে। তারপর নিচ্ছিদ্র নিরবতা নেমে আসে। দুপুর বেলা দেখা যায়, পেচারা মগডালে বসে আছে, রাতজাগা পাখি, তাই দিনের আলো চোখে সয় না, কিন্তু ছেলে ছোকরারা দেখলেই ঢিল ছোড়ে, এই ঢিল ছোড়াছুড়িতে ওদের ভিতরে কোন ভাবান্তর দেখা যায় না, যেমনি আছে তেমনি নির্বিগ্নে বসে থাকে, ছ্যাতরা পড়া ডালে গজিয়ে ওঠা নীল রঙের পরগাছাগুলোর আড়ালে একাগ্র হয়ে বসে মিটমিটে চোখে তাকায়। তবে যখন কেউ ভেংচি কাটে, তখন আর ওরা সহ্য করতে পারে না, সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা ভেংচি কাটে, যেন পিত্তি জ্বলে যায়।
এ গাছটি নিয়ে বিস্ময়কর গুজব ছড়িয়ে আছে আশপাশের দুচার গ্রামে। দুপুরে চাষীরা কাজের ফাকে এই গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেয়, রেইনট্রি গাছের বৃষ্টি ভেজা হাওয়া তাদের মনে প্রশান্তি বয়ে আনে। নিজেদের মধ্যে জানা-অজানা কিংবদন্তি গপ্পো নিয়ে মেতে ওঠে। জিরানো আবার কাজের মধ্যে ডুব দেয়। এ গায়ের বুড়ো দাদুটার বয়স একশ ছাড়িয়েছে ছয়মাস আগেই, তার দুপুর বেলাটা কাটে এই গাছের ছায়ায়। কাঠফাটা গরমে একটু হাওয়া খেতে হাতের দীর্ঘ বেতের লাঠিতে ঠুকঠুক করে এই গাছটির তলায় এসে ঝিমুনি দেয়। তাকে জিজ্ঞেস করা হলে, সে বলে এ গাছ যে কত পুরুষ ধরে টিকে আছে তা বলা দুরুহ। তবে ছোট্টবেলা থেকেই ওটার চেহারা সুরত এরকমই দেখে আসছি। বুড়োর কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়।
বিকালের সূর্যটা পশ্চিম দিকে গড়াগড়ি শুরু করলেই ছেলে-মেয়েরা ঝাক বেধে এই গাছের তলায় খেলাধূলা করতে চলে আসে। বউ ছি, ডাংগুলি, গোল্লা ছুট, চোরপুলিশ আরও আরও সব বিচিত্র খেলা নিয়ে তারা সন্ধ্যা অবধি হৈ চৈ করে। কিশোরি বধূরাও জা’দের সঙ্গে হাটতে হাটতে আসে মাটি ফুড়ে উঠে আসা বিকট শিকড়ে বসে দিনের শেষ বেলাটা কাটিয়ে দিতে।
বছর ঘুরলেই বৈশাখ মাসে মেলা বসে এই গাছের তলায়। সবাই এটাকে রেইনন্ট্রি তলা বলে। জারি-সারি গানের আসর জমে সন্ধ্যা নামলেই। ছেলে বুড়োরা সবাই গানে তাল দেয়, গান শুনতে শুনতে রাত কেটে যায়, ঘুমিয়ে পড়ে অনেকেই। বাড়িতে বাড়িতে ডাল-চাল উঠিয়ে রাতে খেচুরি করা হয়। যাদের একটু নেশা টেশা আছে, তাদের জন্য একটু সুবিধাই হয় এই কটা দিন। নির্বিগ্নে জুয়া-গাজার আসর বসে যায় অহরহ। অন্য সময় হলে গায়ের মুরুব্বিরা গাল-মন্দ করে। বলে, তোরা এলাকার ছেলে পেলেদের নষ্ট করবি দেখি। মেলার এই দিন কটায় কেউ কিছু বলে না। মুরুব্বিরাও এ কটা দিন একটু আধটু আনন্দ ফূর্তি করে।
দীপু পাশ-টাশ করে ঘরে বসে আছে, কুয়োর ব্যাঙের মত। চাকরির জন্য হাজারের ওপর দরখাস্ত করেছে। কিন্তু চাকরি বেচারা যে ধরা দিতে চায় না। দীপু গান ধরে, সে যে ডাক দিয়ে যায়, পালিয়ে বেড়ায় ধরা দিতে চায় না...। ঘরে বসে বউয়ের সঙ্গে আলাপ জমায়, দেশের বড়ই দূর্দিন চলছে, মন্দা-টন্দা আরও কতকিছু ধেয়ে আসছে। অদূর ভবিষ্যতে তাই চাকরি নামক দূর্লব জিনিসটি কি তা চেখে দেখার সুযোগ হবে না। দীপু মনকে সান্তনা দেয়, বউকেও সান্তনা দেয়। শশুর মসাই বলে, বেকার বসে থেকে আর কয়দিন ঘরের পয়সা নয়ছয় করবি? ব্যবসা পাতি কিছু একটায় নেমে পড়, অকুল দরিয়ায় ঝাপ দে, ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই কর। বিদ্বান শশুরের কথায় দীপু টাসকী খায়। মনে মনে শশুরে ওপর রাগ করে। তার মেয়েকে বিয়ে করেছি তাই বলে সব কথা শুনতে হবে, এমন কোন চুক্তিপত্রে সই করিনি। বরং তার মেয়েটি বেশ ভালই আছে, স্বাস্থ্য দেখেই বোঝা যায়, আগের চেয়ে বেশ মুটিয়ে যাচ্চে।
দীপুর ব্যবসা-ট্যাবসা ভাল লাগে না। সময়ের বড় দাম, ছোট্টখাট ব্যবসা করে দামি জিনিসকে নষ্ট করে লাভ নেই কোন। করলে অবশ্যই বড়সড় কিছু একটা করতে হবে। বিল গেটস-বাফেট মার্কা না হলে ভাল কিছু করতে চেষ্টা করবে। শুধু চাকরি-বাকরি কিছু একটা হয় কিনা সে অপেক্ষায় আছে।
শশুরের মহার্ঘ উপদেশ কানে ঢোকার পর মনে হচ্ছে ধরাটা যেন সত্যিই দ্বিধা হয়ে গেছে। জানলার কাছে গালে হাত দিয়ে বসে আছে। হীরা দেখে মাথায় হাত দিল, মনে হয় সপ্তাশ্চর্য দেখেছে, তোমার গালে হাত কেন? শুনেছি বউ মরলে মানষে গালে হাত দেয়। তোমার বউটাতো এখনও মরেনি, সামনেই দাড়িয়ে আছে। নিজের অজান্তেই গাল থেকে হাত সরে যায় দীপুর। আসলে বিয়ে করলে মানুষ কেন মরহুম হয়ে যায় তা এখন দীপুর চেয়ে কারও বেশি ভাল জানার কথা না।
রেইনট্রি তলায় পুরোদমে মেলার আয়োজন চলছে। মেলা হবে, গ্রামের সবার কেমন একটু হাসিখুসি টাইপের মুখ। তবে অন্য সময় থেকে এবারের মেলাটা আলাদা রকমের হবে। ওই সব জারি সারি কিছু হবে না। বয়াতীরাও আসবে না। আসবেন একজন পীর সাহেব, চোরামুনির কামেল পীর। মেলার প্রথম দুইদিন তার চেলারা ওয়াজ-নসিহত করবে, শেষ দিনে এলাকাবাসী পীর সাহেবের সোহবত পাবে। রাস্তা-ঘাটে বাজারের চায়ের দোকানে এ নিয়ে কথা-বার্তা, কথা-কাটাকাটি চলছে। মেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবেই। পীর সাহেব খুব কম কথা বলেন, তিনি কম কথার মানুষও। ছিচ কাদুনির মত ওয়াজ করতে করতে কেদে ফেলে, মুরিদের ভক্তি তাতে বেড়ে যায়। বলে, হুজুরের এসক উঠেছে। কাদার সময় নাকে সর্দি এসে জমে, নাক বেয়ে জামায় পড়ার আগেই নাক ঝারেন। তখন সর্দি গিয়ে কোন মুরিদের জামায় গিয়ে পড়ল। শিষ্যরাও এলেমদার। সর্দি গায়ে পড়লে তারা মনে করেন পীর সাহেবের অনুগ্রহ পড়েছে তাদের ওপর।
পীর সাহেব এলাকা ভিত্তিক তার খলিফা নিয়োগ করেন। খলিফা নিজ এলাকায় পীরের নতুন মুরিদ তৈরি করে এবং পীরের বাণী আম মানুষের কাছে পৌছয়। এই গ্রামে পীরের খলিফার নাম মোন্তা আকন। এলাকায় বেশ নাম-ডাক আছে, এক নামে চেনে। ক’দিন আগেও সিদেল চোরদের কাতারে তাকে দেখা যেত, এখন আর দেখা যায় না। খাটি পীরের সোহবতে খাটি হয়ে গেছে, পরশ পাথরের ছোয়ায় লোহা সোনা হয়ে যায়। কেউ কেউ টিজ দিয়ে বলে, চুরিটা রাতের আড়ালে করে, দিনে ভাল কাজ করলেই হল। মোন্তা অবশ্য উড়ো কথায় পাত্তা দেয় না। রাতে স্বপ্নের মাধ্যমে পীর সাহেব তাকে এই সোহবত দিয়েছেন। তার ভয়ের কিছু নেই।
পীরের মুরিদরা গ্রামে গ্রামে মাহফিলের জন্য চাদা তুলছে। মাহফিলের প্যান্ডেল করার জন্য চাষিদের গাছ-বাশ যা লাগে কেটে নিচ্ছে, ডাল জালও কালেকশন করছে। গ্রামবাসী কিছু বলে না। যদিও তাদের ঘাম ঝড়া সম্পদ নিয়ে নিচ্ছে। তাদের মনে প্রশান্তি খেলা করছে, হুজুরের খেদমতে তারা দান করছে। হুজুরের মন সামান্য খুশি করতে পারলে তাদের ভাগ্য হয়ত চিরদিনের জন্য খুলে যাবে।
দীপুর বাড়ির পিছনে দুটো বাশ ঝাড় আছে। আরও অনেক ছিল। গত বছর সিডরে এই দুটো বাদে আর সবগুলো ভেঙে চুরে মুছরে দিয়ে গেছে। খা খা দুপুর। দুপুরের খা খা রোদে প্রচন্ড গরম পড়চে। ঘরের ভিতরে থাকা যাচ্ছে না। দীপু বাশ ঝাড়ের তলায় মাদুর বিছিয়ে শুয়ে পড়েছে। খালি গায়ে, মাথার নিচে শিমুল তুলার বালিশ। গাছের পাতাটি পর্যন্ত নড়ছে না। বাতাসের চিহ্নমাত্র নেই। নিঝুম দুপরে দীপু ঘুমিয়ে পড়েছে। কান দুটো শুধু জেগে আছে, বাইরের টুকটাক শব্দ কানে আসছে। বাশের গোড়ায় রাম দায়ের কচাত কচাত শব্দে ওর ঘুম ভেঙে গেল। কাচা ঘুম ভাঙলে মেজাজ বিগরে যাওয়ার কথাই। দেখল,সবুজ পাগড়ি মাথায়, হাটু অবধি লম্বা কোর্তা গায়ে দুজান মানুষ ঝাড়ের বাশ কাটছে । মোন্তাকে দেখেই দীপুর মাথায় আগুন লেগে গেল। শালার বদমাস কোথাকার, না বলে, না কয়ে পরের জিনিস নিচ্ছ। এটা কি তোর পীরের বাপের সম্পদ?
কিন্তু মোন্তা দীপুকে দেখা মাত্রই হাসল, মনে হয় দীপুর সঙ্গে ওর কতকালের খাতির। দীপু একটু ধন্দে পড়ে গেল। চোরের গায়ে লম্বা কোর্তা, তাকে দেখে আবার মিটমিট করে হাসছে। দীপু উঠে ওদের কাছে গেল, ঘাড়টা বাদিকে একটু ঝুকিয়ে হিরো মার্কা ভাব নিয়ে বলল, পরের জিনিসে হাত দিতে হলে পারমিশন লাগে, চুরি করতে করতে একেবারে সবই ভুলে গেছ। বলা নাই, কওয়া নাই ঝাড়ের বাশে দা চালালে। পীর বাবাজি কি তোমাদের এসবই শিখাচ্ছে। মোন্তা খানিক আমতা আমতা করল। সে আসলে এটা আশা করেনি। কারণ, পীরের নামে সবাই কম বেশি দান সদকা করে, সে দান সদকার পিছনের অনেক কিছু চাওয়া পাওয়া থাকে। পীরের দেয়া কবুল হয় সহজে, পীরকে খুসি করলে বালা মুসিবাত কম আসে। মোন্তা আমতা আমতা বিনয়ের সুরে দীপুকে বলল, তুমি রাগ করছ কেন, বাপু? হুজুর কারো দান গ্রহণ করলে তার সাত পুরুষের ভাগ্যের দ্বার খুলে যাবে। আর তুমি কিরকম বাজে আচরন করছ। জান, হুজুর অখুশি হলে কত বিপদ আপদ নেমে আসে। মোন্তার কথায় দীপুর গা জলে গেল, ছ্যাচোরটায় এসব কী কয়, ওর হুজুরের মাথা খায় কে, শালা নিজে যায় কোথায় তার কোন হদিস নেই, ও অন্যের ভাগ্য খুলতে চায়। দীপু দাতে কিরিমিরি দিয়ে বলল, তোমার পীর বাবাজি যদি এতকিছু পারে, তবে তোমার ভাগ্যের কপাট খিল আটা কেন? যা বেটা, জোচ্চর কোথাকার, তোর পীরকে গিয়ে বল, যা পারে করুক। শালার পীর, অখুশি হলেই দুনিয়া লয় হয়ে যাবে।



মোন্তা সঙ্গের সাগরেদকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। হিরা ঘর থেকে বেরিয়েছে, রান্নার জল আনতে যাবে। হিরাকে দেখে মোন্তা একটু খুসি হল, যাহ, ওর বউটাকে ধরলে একটা কিছু হবে, শালার ঘর জামাই’র ক্যাচাল শুনে কে?

মোন্তা হিরার কাছাকাছি এসে কিছু একটা বলবে এই ভঙ্গিমায় হাত কচলাচ্ছে। হীরা ওদের দিকে তাকিয়ে বলল, কি ভাই কিছু বলবেন? মোন্তা কাচুমাচু করে সামনে পিছে তাকিয়ে তারপর বলল, সামনের হপ্তায় পীর সাহেব হুজুরে আসবেন ওই রেইনট্রিতলা ময়দানে, ওয়াজ নসীহত করবেন, তাই সবার কাছে সাহায্য চাইতে আসছি। এখন যদি আপনি কিছু খুসি করেন, তাহলে ভালই হয়, নাহলে হুজুর অখুশি হতে পারেন।
হীরা বলল, ঠিক আছে, কী লাগবে বলেন, দেখি পারি কিনা?
না, মানে আমাদেরকে তো প্যান্ডেল-লাইটিং করতে হবে। এজন্য অনেক জিনিস পত্রের দরকার পড়বে। আপনাদের পিছনের ঝাড় থেকে যদি দুটি বাশ দান করেন, তাহলে হয়ত হুজুর খুসি হবেন।
তা বলার দরকার কি, হুজুরের খেদমতে নিবেন, পছন্দ মত বেছে দুটো নিয়ে যান? হীরা বলল।
কিন্তু আপনার স্বামীতো বলল, ওই সব হুজুর-টুজুরের কোন মোজেজা নেই। সব ভুয়া। আমাদের দুরদুর করে তাড়িয়ে দিল।
ঠিক আছে আমার সঙ্গেই চলেন, ও কিছু বলবে না। হুজুরের খেদমতে সামান্য একটা জিনিস নিবেন, তাতে আবার নিষেদ-ফিছেদ কিসের।
মোন্তার বুকের মধ্যে মেঘের গুরুগুরু আওয়াজ হচ্ছিল। স্বামী-স্ত্রী ঠোকাঠুকিতে ঘটনার মোড় কোন দিকে নেয়, তা কে জানে। দীপু কোথায়ও চলে যাওয়ায় ঠোকাঠুকি আর হল না। মোন্তা সাগরেদকে বলল, ব্যাটা তাড়াতাড়ি কর, ওই শালা দেখলে কপাল থেকে আম তো যাবেই, ছালার খোজও পাবি না।
বিকাল থেকেই গুনগুন শোনা যাচ্ছে। হুজুরে আসবেন, তিনি শিং মাছের ঝোল ছাড়া ভাত খান না। সকালে এক ছটাক শরীষার তেল শরীরে মেখে রোদে দাড়িয়ে থাকেন। মুরিদরা বালতি ভরে জল এসে গোছল করিয়ে দেন। ঢাউস একটা পাখা আনা হয়েছে। কাছের মাদরাসার এক তালবে এলেম এল, সে পাখা নাড়িয়ে হুজুরকে বাতাস করবে। হুজুরের ভুড়িটা নাকি বিদেশি পাঙ্গাসের মত। শরীর থেকে নূরের ঝলক বেরোয়। দীপু এসব শুনে বলে, পরের জিনিস খেতে খেতে শরীরটাকে পাঙ্গাস মাছের মত রুপোলী করে ফেলেছে। পুচকে তালবে এলেমের দিকে তাকিয়ে দীপুর মনে হল, এ ছেলেটি পাখাটি নাড়াতে পারে কিন সন্দেহ।
মাঠ সাদা আলোর ফকফকানি। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা একটু আগে ভাগেই এসে সামিয়ানার নিচে বসেছে। কিছু খুচরো দোকান পাট এসে জুটেছে। হুজুরের চেলা চামুন্ডার মাইকে বারংবার ঘোষণা করছে। পীরের নামের আগেই যোগ করছে বহু পদীয় কিছু বিশেষন। এমনকি এক নিশ্বাসে নাম উচ্চারণ করাটাও দায় হয়ে যায়। যাক, চলছে, যখন চলুক। দীপু শুধুু দেখবে, ভন্ডামির হালচাল।
প্যান্ডেলের নিচে ছোটখাট একটা জনস্রোত। জোয়ারের মত গ্রামের মানুষ ভিড় করছে, কামেল পীরকে এক নজর দেখবে বলে। এ রকম কামেল পীরের দর্শনেও কোটি কোটি সওয়াব আমল নামায় জমা হবে।

রাত আটটার দিকে পীর সাহেবকে দেখা গেল। দামি পাজেরোতে চড়ে এসেছে। সঙ্গে সেনাবহীনির মত একটা রিক্রুট। হুজুরের এতিম খানার ছাত্র এরা। হুজুর এদেরকে জেহাদি তামিল দেন। প্যান্ডেলের মাঝ দিয়ে লম্বা সরু একটা আলের মত রাখা হয়েছে, হুজুর এ আল দিয়ে স্টেজে উঠবেন। কলো রঙের লুঙ্গি পরনে, তার ওপরে টাকনু অবধি লম্বা গোল জামা। হুজুরের হাতেও একটা দামি বেতের লাঠি। থলথলে ভূড়ির দরুন হাটতে বেগ পেতে হচ্ছে। তালবে এলেম ছেলেটা ঢাউস তালের পাখাটা নিয়ে আগেই স্টেজে হাজির। হুজুরে বসা মাত্রই তাকে বাতাস করতে লাগল। পাখাটা নাড়াতে পুচকেটার সত্যিই কষ্ট হচ্ছে। মানুষ কতটা অন্ধকারে থাকলে এসব আজগুবি কান্ডে বিশ্বাস করতে পারে দীপু তাই ভাবে। পীরসাহেব তার জন্য স্টেজে রাখা রিভলভিং চেয়ারটিতে বসল। সামনে মাউথ পিস। আলগোছে মাউথে ফু দিল। মাইকের ভিতর থেকে ভো করে একটি বিকট শব্দ বের হল।
হুজুর নাকি সুরে ওয়াজ শুরু করল। কি যেন একটা শের তুলল। দীপু ওসব শের-টের বুঝেনা। আম মানুষও বুঝে কিনা সন্দেহ। হুজুর ওয়াজ শুরু করল। বাবারা, কান্দো.....কান্দো.....কানতে থাক। সেই দিন যখন আসবে, তখন কেউ কাউকে চিনবে না। হুজুরের নাকে সর্দি জমেছে। নাক ঝারবে। কিন্তু কি জানি, তার আগেই হুজুরের রিভলভিং চেয়ার থেকে একটু দূরে বসে থাকা এক মুরিদের এসক উঠে গেল। সে কি যেমন তেমন এসক! এশকের তাড়নায় শুশুকের মত লাফিয়ে উঠে আবার স্টেজে ধপাস পড়ে গেল। স্টেজ ভাঙার বিকট শব্দ হল । হুজুরের বয়ানে বাধা পড়ে গেল একটু। রাগে তার চোখমুখ টুকটুকে লাল হয়ে গেছে, মুরিদের ডান গালে বা হাতের এক চটকানা বসিয়ে দিলেন। এসকে দেওয়ানা মুরিদ ছিটকে স্টেজ থেকে নিচে পড়ল। দীপু দূর থেকে দেখে মজাই পেল, এই তো সেই মোন্তা আকন। চটকানা খেয়েও মোন্তার এসক এতটুকু কমেনি। হুজুরের সর্দি তার সাদা কোর্তায় লেপ্টে আছে। পীর সাহেব বেশি সময় স্টেজে থাকেন না। খুবই কম কথা বলেন। মুরিদদের মতে যতটুকু বলেন, কাজের কথাই বলেন, কাজও হয় বটে। এ রকম চললে পীরের মুরিদে দেশ ছেয়ে যেতে বেশিদিন লাগবে না। মানুষগুলো হুরমুর করে বেরিয়ে যাচ্ছে। সকালে মেয়েদের জন্য আলাদা বয়ান করবেন। প্যান্ডেলের আশপাশে ছোটখাট অনেকগুলো দোকান বসছে। দীপু একটা দোকানে গিয়ে বাদাম আর জিলেপি কিনল, হিরা বাড়িতে একা বসে আছে, ওর জন্য বাদাম নিলে খুসি হবে। দুজনে বসে বসে বাদাম খুটবো আর রসের গল্প করবো। দীপু বাদামের মোচা হাতে নিয়ে বাড়িতে আসলো।
নির্জন বাড়িতে আলোর ছিটেটি পর্যন্ত নেই। হিরা বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়েছে মনে হয়। একা একা জাগতে না পেরে হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে। দীপু দরজায় টোকা দিল। ভিতরে কোন সাড়া নেই। বার কয়েক নক করার পরও দরজা খুলল না, তিড়িং করে মাথায় রাগ চড়ে গেল। কিরে দরজা খুলছে না কেন, ভিতরে কি কেউ নেই। দুই পাল্লার মাঝ বরাবর জোরে লাথি কষল। হালকা ভেজান ছিল দরজা। প্রচন্ড ধাক্কা লাগায় খুলে গেল। দীপু ভিতরে ঢুকল। পিন পতনেরও কোন শব্দ নেই। বাতি জ্বাললো, ঘরে কোন মানুষ জনের চিহ্নটি মাত্র নেই। খাটের ওপর বসে পড়ল। দাড়িয়ে থাকতে থাকতে পায়ের গোড়ালি ব্যাথা হয়ে গেছে। দীপু আবার প্যান্ডেলের দিকে ছুটলো। বহুবছরের রেইনট্রি তলা প্রায় ফাকা হয়ে গেছে, সবাই এক এক করে ঘরে ফিরছে। লাইটের ফকফকা আলোতে শকুন-পেচাদের আজ রাতের ঘুমে একটু অসুবিধা হবে। ডানা ঝাপটানোর ছটফটানি শোনা যাচ্ছে। দীপু একটু ঝিম হয়ে দাড়াল। তারপর হুজুরের বিশ্রাম হাউজের দিকে আবার ছুট লাগাল।
বাড়িটা এই এলাকার মেম্বার ছত্তার মুনশির। গ্রামে বড় মাপের কোন অতীথি আসলে তার আপ্যায়ন হয় এই বাড়িতেই। এটাকে তিনি নিজের একান্ত দায়িত্ব মনে করে আসছেন সব সময়ই। । না নিলেও বা কেমন দেখায়। কোন ছোট লোকের ওপর এই গুরু দায়িত্ব পড়লে ঠিকঠাক যতœ আত্তি করতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত তারই দুর্ণাম হবে। দীপু মেম্বারের ঘরে ঢুকল। রাত ন’টার একটু বেশি বাজে। হুজুর এখনও বেশ ব্যস্ত আছেন, মুরিদরা যে যা পারে হুজুরের খেদমতে হাজির করছে। হুজুর তাদেরকে দোয়া করছে, বিড়বিড় করে কি জানি পড়ে মাথায় হাত বুলিয়ে ফু দিচ্ছেন। মেয়েদের জন্য আলাদা কোঠা করা আছে। সেই কোঠায় বসে তারা হুজুরের সঙ্গে বসচা করছে। দীপুর শশুর মশাইকে দেখলে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট কাজটি করতে। পীর সাহেবের পা টিপে দিচ্ছেন। দীপু তাতে যারপরনাই আশ্চর্য হল, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না। পীর সাহেবের বয়স কতই বা হবে। ক’দিন আগে বড় পীরসাহেব অর্থাৎ বর্তমান পীরের বাবা মারা যাওয়ার পরই তার জেষ্ঠ্য পুত্র পীর হিসেবে গদিতে বসলেন। বড় পীর সাহেব তার তিন সন্তানের মাঝে তিন ধরনের সম্পত্তি বন্টন করলেন। বড় ছেলেকে তিনি পীরগিরি দিয়ে গেলেন, মেজ ছেলেকে ঢাকা শহরে তার সমস্ত সম্পত্তি উইল করলেন। আর ছোটটাকে সব ধরনের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স দিয়ে যান। শশুর মশাই একদিন বলেছিলেন, দেখলি পীর সাহেবের কি চমৎকার বন্টনরীতি, তিন ছেলের কাউকেই তিনি ঠাগাননি।
শশুরের কান্ডকারখানায় দীপুর বমি বমি ভাব আসছে। এক মুহুর্তও আর এ জাগায় থাকতে ইচ্ছে করছে না। ওর নিজের বউ ওকে না বলেই পীরের খেদমতে হাজির। বউ শায়েস্তা করতে হলে শশুর বাড়ি ছাড়তে হবে। কাধ থেকে ঘর জামাইয়ে তকমা সরাতে হবে। এতদিন চাকরির অপেক্ষায় ছিল দীপু, এখন চাকরি ছাড়াই বেরুতে হবে। শশুরটার রুচি দেখে পিত্তি জ্বলে যায়। পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত কত আজব কান্ডই না ঘটে। এটাও একটা আজব কান্ড, বেশ মজারও বটে। আচ্ছা পৃথিবীতে আর কোন কোন দেশে পীর আছে, খোজ নেয়া দরকার। দীপু বাইরে বেরিয়ে আসল। খুবই খারাপ লাগছে। বাসায় গিয়েও বা কি করবে। রাস্তার পাশে চা’র দোকানে বসল। দোকনটা অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে। কিছুখন বসল। হঠাৎ দেখল পায়ে ঝিঝি মেরে গেছে। দাড়িয়ে হাটার চেষ্টা করল। হঠাৎ বাড়ির কথা মনে পড়ল দীপুর, বিয়ে করার পর বাবা-মা কে ছেড়ে শশুর বাড়ি এসে ওঠা। হীরার সঙ্গে প্রেম করতে গিয়ে বাড়িতে তাকে কম নাকানি চুবানি খেতে হয়নি। শেষপর্যন্ত বাড়ি ছাড়া। বড় আপু বলেছিল, ও মেয়েটার ভিতরে কি আছে, যে জন্য তুই দেওয়ানা হয়ে গেলি। শরীরে ধবধবে সাদা চামড়া ছাড়া এমনি কি আছে দেখার মত। জমিদার আমল হলে তোকে গাধার পিঠে উল্টো করে বসিয়ে সারা এলাকায় ঘুরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা যেত। আস্ত গাধা।

বড় আপুর এই গা জ্বলুনি বাক্যবান সইতে পারেনি দীপু, তেড়ে উঠেছিল, বিয়ে করলে আমি করবো, তাতে তোমাদের কী? তোমাদের ঘাড়ে না চাপলেই হল। হীরাকে বিয়ে আমি করবই। আমার চোখে হীরাই সব।
বড় আপু কেমন ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে বলেছিল, আহা, তোর বিয়ে তুই করবি, তাতে আমাদের কী, আমারা নাক গলাই কেন? তবে ভুল আমরা করেছি, অনেক বড় ভুল। খেয়ে না খেয়ে তোকে বড় করেছি, এ কষ্টের সংসারে তোকে মাস্টার্স পর্যন্ত পড়িয়েছে। এই ভুলগুলো বাবা-মা, আমরা না করলেই পারতাম। সংসারের কিছু আয় রোজগারও বাড়ত। বাইরে কাগজ বিক্রেতা আসছে, শুনতে পাচ্ছিস। তোকেও এতদিনে এরকম কা..গোজ, কা..গোজ বলে চিল্লাপাল্লা করতে হত। যাক, তুই এখন লেখাপড়া জেনে অনেক বড় হয়েছিস। তোকে কি আমাদের মত অশিক্ষিত গেয়ো মেয়েদের জ্ঞান দেয়া সাজে। ওই ধিঙ্গি মেয়েটাই তোর চিরদিনের আপন ছিল। তোকে পেলে পুষে বড় করেছে।
বিয়ের আগে দীপু কাউকেই জানায়নি, বাড়িতে প্রচন্ড ঝগড়া ঝাটি হল। বাবার সাফ কথা এ বাড়িতে আমি জ্যান্ত থাকতে এই ছেলে এবং তার ওই ভটকু বউটার কোন স্থান হবে না। ওইসব প্রেম প্রীতির ভাইরাস থেকে সংসারকে মুক্ত রাখতে হবে। আরও তিন তিনটে মেয়ের বিয়ের আয়োজন বাকি আছে।

শেষে শশুর মসাই জায়গা দিলেন। তার বাড়িতে এসে উঠল দীপু। বলছিল, চাকরি পেলেই শহরের প্রান্তে অল্প খরচে বাসা ভাড়া নিয়ে উঠে যাবে। কিন্তু শালার কপাল, কয়েক হাজার দরখাস্ত পাঠানো হল, চাকরির গন্ধ নেই কোন, চাকরির জন্য দুরন্ত ষাড়ের চোখে লাল কাপড় বাধতেও রাজি আছে। কিন্তু চাকরি বেচারার কোন পাত্তা নেই। সব জাগায়ই চাকরির বড় আকাল। দীপুর সন্দেহ হয়, এটা বাবা-মা’র অবাধ্যতার ফল নাকি।
দীপু কিছুটা হেটে রেইনট্রি তলায় ফিরে আসল। চারদিকে যেন ঝিম ধরে গেছে । ঠিকাদাররা প্যান্ডেল খুলছে, ভোরের আলো ফোটার আগেই তারা প্যান্ডেল গোছ গাছ করে অন্য জায়গায় ভাড়ায় দিবে।
পৃথিবীটা সহজ-সরল কোন জায়গা নয়, বন্ধুর পথই তাকে পেরুতে হবে, এ ছাড়া যে আর গতি নেই। হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে সে। পীর সাহেব ভন্ড হোক বা উত্তম চরিত্রের হোক, তাকে মাুনষে ভাল বাসুক বা না-ই বাসুক, তাতে তার কিছুই যায় আসে না, তাকে দুবেলা খেটেখুটেই আহার যোগাতে হবে। নইলে দাসত্ব এসে তার পায়ে বেরি বাধবে, অলরেডি বেধেছে। মায়ের কথা খুবই মনে পড়ছে, কিন্তু বাড়ির দরজায় খিল আটা, তাতে লেখা, গফুর মিয়ার একমাত্র সন্তান দীপু, এম এ ( বাংলা) এ বাড়িতে প্রবেশ নিষেধ। তবুও বাড়ির দিকেই মুখ করল দীপু। যাওয়ার আগে পালিয়ে হলেও মা’র সঙ্গে একটু দেখা করবে, বড় আপুও তাকে জান দিয়ে ভাল বাসত। যতই অপরাধ করুক না কেন দীপু এই মনুষ দুটো চিরদিনই তাকে ভালবাসবে, চিরদিনই তার আপন থেকে গেল।


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০০৯ বিকাল ৩:০২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×