somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

গায়েন রইসউদ্দিন
আমি রইসউদ্দিন গায়েন। পুরনো দুটি অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করতে না পারার জন্য আমি একই ব্লগার গায়েন রইসউদ্দিন নামে প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছি এবং আগের লেখাগুলি এখানে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য আবার প্রকাশ করছি।

দানবের পেটে দু'দশক (মূল গ্রন্থ- IN THE BELLY OF THE BEAST) পর্ব-২৭

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(৬) মকর সংক্রান্তি
একে পৌষ সংক্রান্তি বা তিল সংক্রান্তিও বলা হয়। এ সময় সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে, দক্ষিণায়ণ শেষ করে সূর্য আবার উত্তর দিকে যাত্রা শুরু করে। এর পর থেকে উত্তর গোলার্ধে দিনের আলো বাড়তে শুরু করবে।
এ দিনটিকে আরএসএস নানা জাতির হিন্দুদের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখাতে চায়। তাদের মতে, এ দিনে সব জাতের লোক গঙ্গায় একত্র হয়। বাস্তবে কিন্তু এক এক জাতের এক এক শ্রেণীর মানুষ এক এক জায়গায় জড়ো হয়ে আলাদা আলাদাভাবে তাদের নিজস্ব আচারবিচার পালন করে। নানা জাতের মানুষের মধ্যে কোনও সচেতন মেলামেশা হয় না।
ওপরে যে ছ’টি উৎসব পালনের কথা বলা হল সেগুলো সম্পূর্ণভাবে হিন্দু উৎসব। আরএসএস কোনও অ-হিন্দু উৎসব পালন করে না। মুসলমান বা খ্রিস্টানদের কথা বাদ দিন, এমন কি শিখ, বৌদ্ধ, জৈন—যাদের আরএসএস হিন্দু ধর্মের অংশ মনে করে, তাদের কোনও উৎসবও সঙ্ঘ পরিবার পালন করে না। তবে ১৯৯৭ সালে বিজেপি একটা “মেরি খ্রিস্টমাস” পোস্টার বের করেছিল। গুরু নানকের বা গুরু গোবিন্দ সিংহের জন্মদিন পাঞ্জাবে পালন করা হয়। কিন্তু তাদের জাতীয় ক্যালেন্ডারে অ-হিন্দু, বিশেষত মুসলমান, খ্রিস্টান অথবা আধুনিক-ধর্মনিরপেক্ষ কোনো উৎসব প্রায় নেই।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, আরএসএস উৎসবের ক্যালেন্ডারে ভারতের স্বাধীনতা দিবসও অনুপস্থিত। নেতাজী সুভাষ বসু, গান্ধী, তিলক, ভগৎ সিং ইত্যাদিদের স্মরণ করা হয় বটে, কিন্তু প্রথমত, তা নামমাত্র। তাছাড়া, চরম ইতিহাস বিকৃতকরণের মধ্য দিয়ে আরএসএস আজকে সুভাষ বসু, ভগৎ সিং—এঁদেরকেও হিন্দুত্ব সৈনিক হিসেবে প্রমাণ করতে চায়। এর চেয়ে হাস্যকর আর কিছুই হতে পারে না। সূর্য সেন, প্রীতিলতা থেকে বিনয় বাদর দীনেশ বা বাঘা যতীন—সঙ্ঘ সার্কলে ব্রাত্য। আরএসএস যে স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে ছিল, সেই আলোচনা তারা মোটেই চায় না। অবশ্র ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসির দিনটি তারা উল্লেখ করে থাকে।
এমনটা হতেই পারে যে ভবিষ্যতে আমরা দেখতে পাব উৎসবরে দিনগুলো পালটে যাচ্ছে, বা নতুন নতুন উৎসব যোগ হচ্ছে—যেমন কৃষ্ণের জন্মদিবস বা জন্মাস্টমী, কিংবা দলিতদের পাশে পেতে হয়ত বা বীরসা’-র জন্মদিবস (যদিও এটি হওয়ার সম্ভাবনা কম)। অন্যান্য গোষ্ঠীকে সাথে পেতে হয়ত পালন করা হবে শিখদের অকালি উৎসব, গুজরাট থেকে আসবে রাম নবমী উৎসব, হয়ত যোগ হবে দক্ষিণ ভারতের সুবিধাজনক কোনও উৎসব। ভারতে তো হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসবের কিছু কমতি নেই—তবে আর্থিক সঙ্গতি না থাকার ফলে ও নানা সামাজিক-ধর্মীয় কারণে দরিদ্র ও দলিতরা সেসব উৎসব পালন করতে পারেন না।
নীচে সঙ্ঘের সারা বছরের একটা ক্যালেন্ডার দেওয়া হল, যাতে সমস্ত উৎসবের দিনগুলি দেওযা আছে। মূলত হিন্দু উৎসব, তবে দু’-একটা শিখ, বৌদ্ধ ও জৈন উৎসবও এতে স্থান পেয়েছে। খেয়াল করার বিষয় হল, ঈদ বা মহরমের মতো সমস্ত মুসলিম উৎসব বা খ্রিস্টমাসের মত খ্রিস্টধর্মীয় উৎসব এতে অনুপস্তিত। যদিও ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে এই উৎসবগুলি আনন্দের সঙ্গে পালন করা হয়। এছাড়াও বাদ গেছে মে দিবসের মত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দিবসগুলি।
সঙ্ঘ চায়, এ দেশের শ্রমিকরা মে দিবসের বদলে বিশ্বকর্মা পূজা পালন করুক। সবচেয়ে বড় কথা, ১৫ অগাস্টও আরএএস-এর উৎসবের তালিকায় স্থান পায়নি।...(ক্রমশ)

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×