ঢাকা তে সুপার সপগুলোয় কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পন্যের মান ভাল, দামাদামীর ঝামেলা নেই, ভালো পরিবেশে কেনাকাটা করার জন্য অনেকেই এখন আমরা সুপার সপ গুলোর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। আমরা যারা সুপার সপগুলোতে কেনা কাটা করি তারা কি কখনো রিসিপ্ট/ ইনভয়েস গুলো চেক করি? সম্ভবত করি না। অন্তত আমি করতাম না।
আমি একটি অভিজাত সুপার সপ থেকে নিয়মিত কেনা কাটা করি। সপ্তাহ তিনেক আগের ঘটনা। নতুন স্বাদের চায়ের টি-ব্যাগ প্যাক দেখে দামটা দেখলাম। রিজনেবল মনে হওয়ায় অন্যান্য পন্যের সাথে ঝুড়িতে রাখলাম। বাসায় ফিরে পকেট থেকে রিসিপ্ট টি ফেলে দেয়ার সময় ‘মেম্বার শীপ পয়েন্ট’ দেখার জন্য চোখ বুলাতে গিয়ে চোখে বাধলো চায়ের দাম প্যাকেটের গায়ে লেখা দামের তুলনায় ২০ টাকা বেশি রাখা হয়েছে, বাকি গুলো দেখলাম দাম ঠিক আছে। সুতরাং ভুল হতেই পারে ভেবে বাদ দিলাম। পরের সপ্তাহের বাজারের পর রিসিপ্ট টি খেয়াল করে দেখলাম এবং একটি পন্যে প্যাকেটের গায়ে লেখা দামের তুলনায় ১৮ টাকা বেশি লেখা হয়েছে দেখলাম।
পরপর দুইবার ভুল হওয়াটা ঠিক স্বাভাবিক না, তবু মেনে নিলাম। ৩য় দিনের রিসিপ্টে একটা পন্য ৫ কেজি কেনার পর ১০ কেজির বিল করা হয়েছে দেখে আমাকে কাউন্টারে যেতেই হলো। কাউন্টার থেকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে দুঃখ প্রকাশ করা হলো এবং সমাধান হিসাবে আমাকে টাকা ফেরত না দিয়ে বাকি ৫ কেজি পন্য ধরিয়ে দেয়া হলো! ‘স্যার, এটি রেকর্ড হয়ে গেছে। এখন টাকা ফেরত দেয়াটা খুব ঝামেলা হয়ে যাবে!” মেনে নিলাম। এরপর আর সেখানে কেনাকাটা করতে যাওয়া হয়নি।
প্রতিবারের ভুলটা হচ্ছে অনেক গুলো আইটেমের ভেতর শেষের দিকের একটায়। পরপর তিন সপ্তাহে একই ব্যাক্তির রিসিপ্টে ভুল হওয়া কতটা অনিচ্ছাকৃত সে ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এই লেখাটা পড়ার পর আরেকজন জানালেন তার অভিজ্ঞতা। তিনি ৮০০ টাকা দামের একটা টেডি কেনার পর বাড়িতে ফিরে দেখেন ইনভয়েস করা হয়েছে ১১৫০ টাকা। একবার তিনি একটি পন্য ব্যাগে পাননি কিন্তু ইনভয়েসে ছিল। পন্যের সাথে কোন ফ্রি বা গিফট থাকলে সেগুলোও পাওয়া যায় না এই অভিযোগ পুরানো।
অধিকাংশ ব্যবসায়ীই ভালো। তবে বেশ কিছু ব্যবসায়ী এখনো ব্যবসা এবং চুরি, এই দুটো জিনিসের ভেতর পার্থক্য করতে পারেনা। একদিন তারা নিশ্চই এই পার্থক্য টা করে ফেলবে। আমরা যদি সচেতন হই সেই দিন টি খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে নিশ্চিত। তার আগ পর্যন্ত নিজেদের পকেটের ব্যাপারে নিজেরা সচেতন হই।
নোটঃ এই লেখাটির উদ্দেশ্য কোন ভাবেই কোন ব্যবসার ক্ষতি করা নয়। ক্রেতা হিসাবে নিজেদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভালো ও খারাপ ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে পারাটা নিজের এবং অন্যের জন্যও জরুরী।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:১৩