somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষা যদি হয় ভাইরাসমুখর,মূর্খতাই তবে কেন শ্রেয় নয়

১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রক্তে মাখামাখি হয়ে কাত্রাচ্ছে ছেলেটি। একটি গুলি তার বাম পাজরকে ফুটোকরে বেরিয়ে গেছে। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। সে তার ডান হাত দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি চেপে ধরে আছে সজোরে। ঘটনাটি ঘটছে পরিস্কার দিনের আলোয়। অনেক লোকের সামনে। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। কেউ এগিয়ে আসছে না! ছেলেটি মা মা বলে চিৎকার করছে।
কোত্থেকে জানি খবর পেয়ে ছেলেটির মা ছুটে এসেছেন। তিনি চেষ্টা করছেন ছেলেটির কাছে যেতে। পারছেন না। পা নাড়াতে পারছেন না। হাত বাড়িয়ে চেষ্টা করছেন আদরের সন্তানটিকে কোলে নিতে একটু ছুঁয়ে দেখতে। তাও পারছেন না। শরীর জমে গেছে ে যেনো। ছেলেটির মা মা আওয়াজটি আস্তে আস্তে ক্ষীণ হয়ে আসছে। কাঁদছে ছেলেটি। কাঁদছেন মা-ও। সন্তানটি তাঁর চোখের সামনেই মারা যাচ্ছে অথচ তিনি কিছুই করতে পারছেন না...।
হঠাৎ মহিলা লক্ষ্য করলেন ঘামছেন তিনি। সারা শরীর ভিজে স্যাঁতসেতে হয়ে গেছে। প্রচন্ড তৃষ্ণা অনুভব করলেন। গলা শুকিয়ে গেছে। তালু পর্যন্ত। পরপর তিনগ্লাস পানি পান করলেন। কিছুক্ষণ ঝিম ধরে বসে থাকলেন তিনি। সবকিছু ঝাপসা দেখাচ্ছে। এলোমেলো লাগছে। চোখ বন্ধ করে পুরো অবস্থাটা পর্যবেক্ষণ করতে চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি তাহলে স্বপ্ন দেখছিলেন! নিশ্চিত হবার জন্য গায়ে চিমটি কাটলেন সজোরে। ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলেন। উফ জাতীয় একটি শব্দ বেরিয়ে আসলো তার মুখ দিয়ে। সঙ্গে একটি স্বস্থির নিঃশ্বাসও। তাহলে তিনি স্বপ্নই দেখছিলেন! স্বপ্নের সেই ভয়ালো আঙিনা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন। এর মানে তার ছেলেটিরও তাহলে কিছু হয়নি।
তবুও মনকে শান্ত করতে পারলেন না। মায়ের মন তো। বালিশের নিচ থেকে মোবাইল ফোন বের করে ফোন করলেন ছেলেকে। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললেন-
হ্যা -----লো।
হ্যালো মা! এত রাতে? কী ব্যাপার, সব ঠিক আছে তো?
তুই কেমন আছিস বাবা?
আমি ভাল আছি। কেনো ফোন করেছে বলো?
সত্যি বলছিস তো তুই? ভালো আছিস?
আহ্ হা মা! কী হয়েছে বলো তো?
আচ্ছা তোর শরীর কেমন?
আচ্ছা মা, তুমি আবারও আমাকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখেছো? সত্যি করে বলো তো ঘটনা কী?
না, বাবা, কিচ্ছু না। তুই ঘুমা। ভালো থাকিস।
ফোনটা রেখে তিনি অনুভব করলেন বুক থেকে যেন শক্ত একটি পাথর নেমে গেছে। সাথে সাথেই হাত তুললেন উপরের দিকে.... হে আল্লাহ আমার এই দুঃস্বপ্ন যেন কখনো সত্যি না হয়। আমার ছেলেটির লেখাপড়া করা হোক আর না হোক, তাকে যেন লাশ হয়ে আমার কাছে ফিরে আসতে না হয়...

এক বাবা, নুন আনতে পানতা ফুরোয় টাইপ আর্থিক অবস্থা যার, মেয়েকে ভার্সিটিতে পাঠিয়ে অস্থির হয়ে থাকেন। অজানা শংকায় বারবার কেঁপে উঠে তার দুর্বল মনটি। তিনি শুনেছেন এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধর্ষণের সেঞ্চুরী উৎসবও ঘটা করে পালন করা হয়! তার মেয়েটি আবার জাহাঙ্গীর নগরেই পড়ছে। অনার্স সেকেন্ড ইয়ার। কখনো ট্রাফিক জ্যামের কারণে মেয়ের বাসায় ফিরতে একটু দেরি হলে ভয়ংকর সব চিন্তা তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। বারবার তার মনে হতে থাকে তার নিষ্পাপ মেয়েটি কোনো মানিকের লোভের শিকারে পরিণত হয়ে যায়নি তো? জোর করে ওর জরায়ূতে পুতে দেয়া হচ্ছেনা তো কোনো লা ওয়ারিসের বীজ!

প্রেক্ষাপট যদি হয় বাংলাদেশ, তাহলে শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড নাকি মৃত্যুদন্ড, রীতিমত গবেষণার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। কে বলেছিলেন কথাটি? ‘শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড’ আজ তাকে আমার কাছে পেতে ইচ্ছে করছে খুব। তাহলে বলতাম, কিছু মনে করবেন না জনাব, আপনার মেরুদন্ডকে আমরা মৃত্যুদন্ড বানিয়ে ফেলেছি। যত দোষ অই ব্যাটা ডারউইনের। বিবর্তনবাদের ভূত মানুষের মাহফিলে পাত্তা না পেয়ে শেষমেস শিক্ষাক্ষেত্রের অতি নিরীহ এই শব্দটির ঘাড়েই আসর করেছে। সম্ভবত!

লেখাটি বিরক্তিকর লাগলে আমি দুঃখিত। আর সহ্য করার মতো মনে হলে এখানে ভিজিটের আমন্ত্রন]



সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৫০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×