ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার খুব ভক্ত ছিলাম।গ্রামে বেড়ে উঠার সুবাদে ছোটবেলায় তেমন খেলা দেখার সুযোগ পাইনি।কারন গ্রামে ছিল না কোন কারেন্ট ছিল ১/২টা টিভি ছিল যেটা ব্যাটারি দিয়ে চলত সেখানে প্রতি শুক্রবার বাংলা ছিনেমা দেখা হত।গ্রামের মানুষ খেলাটা ভাল করে বুজতও না।অনেকে এটাকে ডাংগুলি খেলা মনে করত।
বাংলাদেশ ১৯৯৯ এর বিশ্বকাপে পাকিস্তান কে হারানোর পর থেকে আমার ক্রিকেট এর প্রতি ভালবাসাটা পাগলের পর্যায়ে চলে যায়।বিকালে স্কুল থেকে ফিরে না খেয়েই ছুটতাম মাঠে।বাংলাদেশ এর খেলার দিন স্কুল ফাকি দিয়ে ২মাইল দুরের বাজারে যেতাম খেলা দেখতে।রাতের বেলা ঘুমানোর সময় রফিক, বাশার, মাশরাফি, আশরাফুল হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।তখন থেকেই মাঠে সরাসরি বসে খেলা দেখার স্বপ্ন ছিল।দিনে দিনে যত বড় হতে লাগলাম ক্রিকেটীয় জ্ঞান তত বাড়তে থাকল ভালবাসাটা থাকল আগের মতই।
হাইস্কুলে পড়ার সময় ভাবতাম বড় হলে ঢাকায় পড়াশুনা করব আর মাঠে গিয়ে খেলা দেখব।
কলেজে উঠার পর জানলাম ২০১১ সালের বিশ্বকাপ আমাদের দেশেই হবে।হিসাব করে দেখলাম যদি আমি উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকার কোন বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হতে পারি তাহলে নিশ্চিত ভাবে মাঠে বসে বিশ্বকাপ খেলা দেখতে পারব।সব কিছুই ঠিকঠাক মত হল।আমিও বুয়েট এ ভর্তি হলাম।যথারিতি খেলা দেখার স্বপ্ন মনের মধ্যে পুষে রাখলাম।সময় ঘনিয়ে আসলো টিকিটও ছাড়া হল।চারদিকে খোজ খবর নিলাম কিভাবে টিকিট পাওয়া যাবে।প্রথমে ভাবলাম বাংকে গিয়ে লাইনে দাড়াব।টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার কারনে সেটা সম্ভব হল না।হলের অনেক বড় ভাই মামা চাচা মারফট বিভিন্ন ভাবে টিকিট যোগাড় করছে তাদেরকে খুব করে অনুরোধ করলাম আমার জন্য একটা ব্যবস্থা করতে আমি সমমূল্যের টাকা দিয়ে দেব কিন্তু তারা জানাল টাকা কোন ঘটনা না তাদের নাকি আর অনেক ঘনিষ্ঠ লোক আছে তাদের জন্য তারা টিকেট কিনছে।যাই হক তাদের কথায় যুক্তি আছে।আমার মত সবারি তো প্রবল ইচ্ছা আছে খেলা দেখার।
আর এইভাবে সময়,মামা চাচা ও ক্ষমতার অভাবে ভেঙ্গে গেল আমার মত একজন ক্রিকেট প্রেমিকের বিশ্বকাপ খেলা দেখার মধুর স্বপ্ন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




