somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওরা কেন শিশু শ্রমে জড়িত ।

১৩ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস, যদিও বিশ্ব বাসি সবাই চায় শিশু শ্রম বন্ধ
করতে । কারণ শিশু শ্রম অনেক ঝুকি পুর্ণ এই বাস্তব কথাটি আমিও বিশ্বাস
করি,কিন্তু এর মূল রহস্য সবারই অজানা । যারা সাধারণত হত দরিদ্র
কিংবা দু বেলা দুমোঠো ভাত খেতে পারে না তারাই এই কাজে জড়িত
আমাদের বাংলাদেশে ।

অনেক দিন আগে এক ছোট্র বালকের সাথে কথা বলছিলাম, সে এক
প্লাসটিকের কারখানায় কাজ করে, এত আগুনের তাপদ্বাহ হাতের কাছে
একটি পানির বোতল ছাড়া কিছুই নেই, তাও গরমে চা এর মত হয়েছে
কিছু হ্মণ পর পর সেই পানি পান করছিল ।

আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম
আচ্ছা তুমি এত ছোট্র, কাজ কর কেন ?
ছেলেটি বললোঃ স্যার কাজ না করলে খামু কি ! আমরা গরীব জায়গা
জমি নাই তাই কাজ করি । এক বছর আগে বাবা আমাকে এই দোকানের
মালিকের সাথে কথা বলে রেখে যায়, মাঝে মাঝে আসতাম না বাবা
রাইতে মারতো খাবার দিত না, মায়ে চুরি করে আমাকে পয়সা দিত,
তা দিয়ে দোকানে গিয়ে পাউয়া রুটি কিনে খাইতাম ।
তারপর থেকে রোজ এখানে কাজ করি টাকা নিয়ে বাবার হাতে দেই,
এখন বাবা অনেক খুশি আমাকে আদর করে । আবার মাঝে মাঝে বাবা
কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে বাবা আমরা গরীব মানুষ কামনা
করলে চলবো কেমনে !!

২য় প্রশ্নঃ এত গরমে তুমি কাজ কর কেমনে ?
সে বলে- পরতম পরতম গরম লাগছিল, এখন আর লাগে না ।স্যার
পেটের আগুনের চেয়ে এই আগুন অনেক ঠাণ্ডা । আমি লহ্ম করলাম
তার হাতে অনেক জায়গায় আগুনে পোড়া দাগ রয়েছে,
জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার হাতে এই গুলো কিসের দাগ ?
জবাবে সে বললো-আগুনে পোড়া প্লাসটিকের অংশ লেগে পুড়ে গেছে ।
আমি বললাম যখন পুড়ে তখন তোমার জ্বলে না ?
সে বললো- আগে জ্বলতো এখন জ্বলে না ।

আমি বললাম তোমার বয়স কত ?
জবাবে সে বললো আমি তো জানি না তয় মায় কইছে বার বছর দুই
তিন মাস চলছে ।
আমি তার দিকে অবাগ হয়ে তাকিয়ে রইলাম, এই বয়সে এত পাকা
পাকা কথা বলতে পারে ।

তারপর একদিন এক মোটর মেকানিকের সাথে কথা বলছি, তার
দোকানেও ৭/৮ বছরের এক শিশু, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ,
শিশুটি কার ?
তিনি বললো আমার, আমি আবার বললাম তবে সে এখানে কেন ? স্কুলে
পাঠান না !
তার জবাব না
আমি বললাম কেন ?
তিনি বললেন-স্কুলে গিয়ে কি করবে ! সেখানে গেলে বড় হতে না হতেই
রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়বে ।তখন আর মা বাবার কথা শুনবে না ।
আমি বললাম আপনার ছেলেকে মেট্রিক পর্যন্ত পড়ালেখা করার পরও
আপনার এই কাজে লাগাতে পারেন,

তিনি বললেন-আমাদের দেশে যারা আধা শিহ্মিত তারাই কিন্তু মরছে ধুকে
ধুকে,না করছে ছোট কাজ আবার না পাচ্ছে বড় চাকুরী । তবে আমার মতে
কোন কাজই ছোট্র নয় যাদের টাকা পয়সা আছে তারা দামী দামী গাড়ি
ব্যবহার করছে আর আমরা যারা আছি স্ক্রু আর মবিল খুলে সংসার চালাচ্ছি
।আমি যখন ছোট ছিলাম আমাদের খাবার জুটতো না বাবা পরের বাড়িতে
কাজ করতো,একদিন বাবা বাজার থেকে একটি সাইকেলের পাম মেসিন
এনে দিয়ে বলে কাল থেকে তুই এটা নিয়ে বাইরে বসে থাকবি পথে
আসা যাওয়া মানুষর সাইকেলে হাওয়া দিয়ে একটাকা করে নিবি ।

আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম,
তিনি আবার বলতে লাগলো ভাই সে আর এক কাহিনি শুনেছি দাদার নাকি
অনেক সম্পদ আছিল, নদীতে সব গিলে খাইছে তারপর আমরা রাস্তার পাশে
গিয়ে ঠাই পাই, সেখানেই আমি মানুষের সাইকেলে হাওয়া ভরতাম, পরে
লিকও সেরে দিতাম অনেক ছোট ছিলাম তাই সবাই আমাকে পিচ্চ কইয়ে
ডাকতো আবার আদর করতো ।তারপর আমি একদিন আমাদের বাড়িতেই
সাইকেলের গ্যারেজ খুলি এই ভাবেই আজ আমি একজন মটর সাইকেল
ম্যাকানিক ।

তার কথা গুলো শুনে আমার মনের মাঝে খুব কষ্ট অনুভব করছি,ভাবলাম
কাউকে দেখে তার মনের দুঃখ গুলো বুঝা সম্ভব নয় ।

আমার মতে আজ যারা এ্যায়ার কন্ডিসনের নীচে থেকে নতুন নতুন আইন
তৈরী করছে, তারা হয়তো জানেনা শিশুরা কেন এত অল্প বয়সে কাজ
করছে।যে সময়ে তাদের স্কুলের মাঠ আর মা বাবার আদর পাবার কথা
সে সময়ে তাদের মাথায় সংসারের ঘানি টানতে হয় ।আর পরিচয় হয়
কঠিন কঠিন কাজের সাথে সামান্য একটু ভুলের কারণে তাদের জীবন
হয়ে যায় দূর্বিসহ নয়তো সারা জীবনের জন্য বরন করতে হয় পঙ্গুত্ব ।

শিশু শ্রম বন্ধ হোক এটা সবাই চায়, তবে তাদের পূনঃবাসনের ব্যবস্হা
না করে, হঠাৎ করে যদি কোন পদহ্মেপ নেয়া হয় তবে হয়তো অনেক
কে না খেয়ে মরতে হবে নয়তো তারা জীবন বাচাঁনোর তাগিদে বড়
ধরনের খারাপ কাজের সাথে জড়িয়ে পরতে পারে ।।

*** এই বিষয়ে কর্তিপহ্মের দৃস্টি আকর্ষণ করছি***
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:৫৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×