
ছোট গল্প সিরিজ -১
চোখ খুলে আরাফ পাশেই বসে থাকতে দেখলো মাহুবুবা কে , আরাফ জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছিলো আমার , মাহবুবা বললো না কিছু ই হয় নি তোমার এই একটু অসুস্থ ছিলা তাই হাসপাতালের ভর্তি করে রাখছি ।
মাহবুবা এই মনে করে কান্না করতে ছিলো ওর স্বামী কাওসার জানতে চাইলো কান্না করছো কেন , আজকাল খুব ঘনঘন ই কান্না করছো , হয়েছে কি তোমার বলো আমাকে ........
মাহবুবা বললো , কিছু বলার নাই তোমাকে কিছু নাই এই বলে আবার ও কান্না করছে করতে করতে সেন্স হারা অবস্থা তাড়াতাড়ি করে কাওসার মাহবুবা কে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে নিয়ে যায়, হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করতে গেলে
জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছিলো মাহবুবা আর চিৎকার করে বলতেছে আরাফ এরকম তিন বার ডেকে চোখ বন্ধ করে দিলো । মাহবুবার স্বামী খুব টেনশনে পরে গেলো হঠাৎ কি হলো ,, দীর্ঘ ঘন্টা খানিক পরে ডাক্তার বললো
আপনার স্ত্রীর পুরাতন স্মৃতি জেগে উঠেছে , আপনার সাথে আমার কথা আছে এই বলে ডাক্তার তার চেম্বারে ডেকে নিলেন কাওসার কে , ডাক্তার কয়েকটা প্রশ্ন জানতে চাইলেন
আচ্ছা কাওসার সাহেব আপনাদের বিবাহের কত দিন ?
আপনারা কি সুখী ?
কখনো ঝগড়া হয় দুজনার ?
কাওসার বললো ৩ বছর হতে চললো , না ওতো খুব ভালো মেয়ে কখনো ঝগড়া ই করে নি
আচ্ছা আপনাদের বিবাহ টা কি লাভ ম্যারেজ না এরেন্জ ম্যারেজ , কাওসার বললো এরেন্জ ম্যারেজ, বাড়ি থেকে দেখে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলো আমি আর এতো দেখতে চাই যাই নি ভাবছি মা বাবার চয়েস করা বৌ এতো দেখে কি হবে ।।
তাইলে আপনাকে একটা অবাক করা তথ্য বলতে চাই ,
আপনার স্ত্রীর এমন একটা রোগ হয়েছে যা তাকে অতীতের দিকে টেনে নিবে বর্তমানের কিছু ওর মনে থাকবে না, সুতরাং আপনার স্ত্রী আর আপনাকে চিনবেন না আরাফ বলে চিৎকার দিতে শুনেছেন নিশ্চয় ই
এখন আপনার কাছে একটাই চাওয়া আপনার স্ত্রী কে বাঁচাতে হলে অতীতে ও যার সাথে বেশি সময় ছিলো তাকে ওর পাশে লাগবে না হলেআপনার স্ত্রীর সুস্থ হওয়া প্রায় অসম্ভব। এখন আরাফ কে উনাকে খুঁজতে হবে ।।।
কাওসার তো মহা টেনশনে পরে গেলো আরাফ টা কে?
ও ওর শ্বশুর বাড়ি গেলো ওরা বললো বাবা আমরা তো প্রিয়া কে ওর সাথেই বেশী দেখেছি , ওকে জিজ্ঞেস করো প্রিয়ার কাছে গেলে প্রিয়া বললো ও আরাফ সে তো দীর্ঘ দিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলো প্রতিদিন ই মাহবুবা ওকে দেখতে যেতো এরকম চলতে থাকে একদিন
আরাফ মারা যায় আমার জানা মতে দুজন খুব ভালো বন্ধু ছিলো তার বাইরে আমি আর কিছুই জানি না সারাদিন তো আমি মাহবুবার সাথেই থাকতাম কলেজ লাইফে আরাফের সাথে পরিচয় হয় । আরাফ ছিলো অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী। ভালো বন্ধুত্ব ছিলো এতটুকু তার বাইরে আর কিছুই জানি না আমি
অবশেষে আরাফের বাড়ি যায় গিয়ে জানতে পারে কাউসার আরাফ আর মাহবুবার বিয়ে হয়েছিলো কিন্তু আরাফ করতে চায় নি মাহবুবা জোর করে করেছিলো যেন আরাফের শেষ সময় ওর কাছে থেকে সাপোর্ট দিতে পারে , আরাফ শতবার না করা শর্তে ও বিয়ে করেছে , আরাফের একটা শর্ত ছিলো যে, ওই যেনো আরাফের জন্য অবিবাহিত না থাকে মরে গেলে আবার বিয়ে করে , সেই শর্তে রাজি হলে আরাফ বিবাহের জন্য রাজি হবে , কিন্তু পরিবারের কেও জানতো না ওদের বিবাহের কথা
বাড়িতে বিবাহের প্রস্তাব আসলে ও মাহবুবা বলতো পড়াশোনা শেষ হোক তারপরে বিয়ে করবো এভাবে পড়াশোনা শেষ হবার পর ওর আরেকটা বিয়ে হয়ে যায় তারপর থেকে আর ওর সাথে আমাদের যোগাযোগ নাই ।
সব কিছু অনুধাবন করতে পেরে কাউসার চোখ বন্ধ করে ভাবলো একটা মানুষ আমার সাথে তিন টা বছর কেমনে সংসার করলো
এতো কষ্ট বুকে জমা নিয়ে , আসলেই মেয়েদের মন বোঝা কারো পক্ষে সম্ভব নয় , হয়তো প্রকৃত ভালোবাসা কখনো পূর্ণতা পায় না এই ভাবতে ভাবতে কাওসার চলতে থাকলো (অসমাপ্ত)
কাওসার কি পরে পেরেছিলো মাহবুবা কে ভালোবাসতে
আপনারাই নির্ণয় করুন ।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



