somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিফ্রাক্শন
আমি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে চাওয়া নকল মানুষ। নিজ ধর্মে বিশ্বাসী ধার্মিক। নিজ কাজে নির্ভরশীল শ্রমিক। দেশকে ভালবাসা এক দেশপ্রেমিক।মানুষে মানুষে সচেতনতা বাড়ুক, দেশ হোক উন্নত, সমৃদ্ধশালী। মানবতা আশ্রয় নিক হৃদয়ে।

শুন্যতার ব্যাসার্ধ

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকালে যখন ঘুম ভাঙল ঘড়িতে তখন ১১ টা বাজে। লেট হয়ে গেছে। ১২ টায় একটা ছাত্রের সাথে মিট করার কথা আছে। এখানে সময়টাকে খুব মেনে চলতে হয়। আমি প্রফেসর, তার মানে এই নয় যে, আমি ১২ টায় সময় দিয়ে আধাঘন্টা লেট করে যাব্, তা হয় না। যেটা সচারচার দেশে থাকতে অভ্যাস হয়ে গেছিলো। ১২ বছর আগে যখন দেশ ছেড়ে এখানে এসেছিলাম তখন প্রথমের দিকে আমার প্রফেসরের কাছে অনেক কথা শুনেছি এই লেট করার জন্য। তবে মাঝে একদম পাঞ্চুয়াল হয়ে গেছিলাম। নো লেট নো ঝারি। ইদানিং নতুন একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু হওয়াতে অনেক সময় ধরে কাজ করতে হচ্ছে। দুটো ছাত্র আমার আন্ডারে পিএইচডি করছে। তাদের সময় দেবার জন্য সময় বের করতে পারছিলাম না। খুব সময় করে আজ ১২ টাতে ওকে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু গতকাল ও প্রায় সারারাত ধরে কাজ করেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠেও যেন আলসেমি যাচ্ছিলো না। ইচ্ছা করেও খুব এনারজেটিক হতে পারি না।

যাই হোক উঠেই ল্যাপটপ টা অন করতে দিয়ে বাথ্রুমে গেলাম ফ্রেশ হতে। কারন ল্যাপটপ টা ওপেন হতে হতে আমার ফ্রেশ হওয়া হয়ে যাবে। এই ল্যাপটপে অনেক স্মৃতি জমে আছে, তাই পুরোনো হলেও এটাই চালাই। মাঝে কয়েকবার একদম অচল হয়ে গেছিলো কিন্তু রিপেয়ার করে করে এখনো এটাই চালিয়ে যাচ্ছি। প্রসেসর টা একটু স্লো এই আর কি। আমিও নিজেকে স্লো করে নেই এই সময়।

বাথরুম থেকে এসে আগে ছাত্রকে মেইল করব ভাবলাম। ভাবলাম কোন একটা এক্সিউজ আজকে আবার দেয়া লাগবে। মেইল এ ঢুকে সোজা কম্পোজ এ গেলাম।

‘ আই হ্যাভ সাম ওয়ার্ক ইস্যু সো আই কান্ট মিট উইথ ইউ এট ১২। ইফ উ ফ্রি দেন প্লিজ কাম মাই ল্যাব ইন দ্যা ইভিনিং শার্প।‘’ এই লিখে পাঠিয়ে দিয়ে কামিং মেসেজ গুলো চেক করতে গেলাম।

গতরাতেই যে এতো মেসেজ আসছে যা সচারচার আসে না। ইউ হ্যাভ ২৩ নিউ ম্যসেজেস শো করছে। সব কিছু চেক করার মুড ছিলো না। ইউটিউবে গান ছেড়ে দিয়ে সাব্জেক্ট দেখতে লাগলাম। ২২ নং মেসেজ টা দেখে অবাক হয়ে গেলাম।

নো সাবজেক্ট। এইটা দেখে মনে পড়ে গেলো আমার প্রথম দেশি ছাত্রী যে আমার আন্ডারে পিএচডি করেছে তার কথা। সে আমাকে প্রথম মেইল করেছিলো কিন্তু সেখানে কোন সাবজেক্ট ছিলো না। তারপরেও আমি এক্সেপ্ট করেছিলাম এই বলে যে নিজের দেশের মানুষের সাথে কাজ করার খুব শখ ছিলো। প্রাণ খুলে বাংলায় কথা বলতে পারব। এর আগে আফসোস একটাই ছিলো যে নিজের দেশের কেউ আমাকে মেইল করত না। যদিও ফুল ফান্ডেড আরো সাথে জব অফার দিতাম কিন্তু ওরা হয়ত ভাবত যে বিদেশে যাব আবার দেশি প্রফেসরের আন্ডারে কাজ করব!!! যাই হোক ব্যাপারটা নিয়ে আমি অতো ইন্টারেস্টেড না। আমাকে ভালো লাগেনি করেনি ব্যাস।

যাই হোক আমি মেসেজ টা ওপেন করে দেখলাম এবারো ঐ মেয়েটাই মেইল করছে। মেইলের বডিতেও তেমন কিছু লেখা ছিলো না। শুধু এটাচমেন্ট আছে একটা। ক্লিক করে দেখলাম দুটো ছবি।

প্রথমটাতে ক্লিক করতেই লেখা দেখালো স্পেশিয়াল ফর ইউ। তারপর সেকেন্ড টা খুলে দেখি সুন্দর করে ডিজাইন করা একটা বিয়ের কার্ড। মনে হয় নিজের হাতে ডিজাইন করা। এই বুদ্ধিটা আমিই ওকে দিয়েছিলাম। ওপেন করতেই দেখলাম কার্ডের একপাশে বরের একটা হ্যান্ডসাম ছবি, কিন্তু ছবির নিচে লেখা ‘ ইওর ফোটো শুড টেক দিস প্লেস বাট ব্যড লাক ফর ইউ।‘’ ছেলের বায়োডাটা তেমন লেখা ছিলো না।

অন্যপাশে নিজের যায়গায় ও যে ছবিটা দিয়েছে সে ছবিটা আমিই তুলে দিয়েছিলাম। তখন ও যখন ল্যাবে কাজ করতে ছিলো। একই রকম ভাবে ওর ছবির নিচে লেখা ‘ আই ওয়ান্টেড টু বি ইউর লাইফ পার্টনার বাট ব্যাড লাক ফর ইউ।‘’

ওর এই দুটো লেখা দেখে আসলেই মনে হচ্ছিলো আমার লাক টা আসলেই খারাপ। কিন্তু আমার কিছু করার ছিলো না। এটা ঠিক যে আমি ওকে ভালবেসেছিলাম হয়ত এখনও ভালোবাসি। কিন্তু এসব তুলে লাভ নেই তাই বাদ থাক কেননা আমার সাথে আবার এসব ইমোশন যায় না। হয়ত আমার আবেগ টা বেশি তাই এসব বলে নিজেকে সান্ত্বনা দেই।

তারপরেও কেন জানি একটা খারাপ লাগা কাজ করছিলো। খুব জানতে হচ্ছিলো ছেলেটার কি যোগ্যতা যেটা আমার নেই? নিজেকে তখন প্রেমিক কাতারে ফেলে খুব হিংসে হচ্ছিলো। ল্যাপটপের স্ক্রিন টা নামিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। হঠাতই সকল স্মৃতি আমাকে আকড়ে ধরল।

কি যেন হারিয়ে যাচ্ছে, আমি দেখতে পাচ্ছি, তাকে যেন যেতে দিতেই হচ্ছে। প্যাসেঞ্জার ব্যান্ডের গান টা মনে পড়ছে। শুধু এইটুকু জানি একটা শুন্যতা ক্রমশ ব্যাসার্ধে বেড়েই যাচ্ছে।

১ম পর্ব
অনেকদিন ব্লগ লেখা হয় না। ফিরে আসলাম অনেকদিন পর।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:৪৮
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×