somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামুর সম্মানিত ব্লগারগণ সবসময় বিচিত্র সব ছদ্দনাম ব্যবহার করেন কেন? তারা নিজের আসল নামে লেখেন না কেন?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামুতে রেজিস্ট্রেশন করার আগে বেশ কয়েক মাস আমি শুধু সবার লেখা পড়েছি। চমত্কার সব লেখা। অসাধারণ সব লেখা পড়ে একেবারে অভিভূত হয়ে যেতাম (এখনো হই)। মনে মনে ভাবলাম, ‘কে বাজায় (লিখলো আর কি) এমন মোহন বাশি’? তখন লেখক সাহেবের পরিচয় জানার বড় কৌতূহল হতো। যদিও সামুতে ব্লগারগণ তাদের সুন্দর চেহারা একেবারে দেখান না বলা চলে। তাই তাদের নামই ভরসা। ওরে বাবা! শ্রদ্ধেয় লেখক সাহেবের নাম দেখে তো পুরো টাস্কি খেয়ে গেলাম। কি আজব নাম রে বাবা!!

পরে আরো কিছু আজব আজব নাম চোখে পড়লো। এরপর থেকে বলা যায় আমায় নামের নেশা পেয়ে বসল। পাতার পর পাতা ঘুরি আর বিচিত্র সব নাম দেখি! বিশ্বাস করবেন কি না জানিনা, আস্তে আস্তে মূল লেখার চেয়ে লেখকের নামটাই আমার কাছে বেশী আকর্ষণীয় মনে হতে লাগলো! হাহাহা। অবশ্য অল্পদিনেই ব্যাপারটা একদম গা সওয়া হয়ে গেল। তখন ভাবলাম, এটাই হয়ত এখানকার স্টাইল। অবশ্য অনেকেই নিজের প্রকৃত নামই ব্যবহার করেন। তবে বেশীরভাগ ব্লগারই ছদ্দনামের আশ্রয় নেন। আর এই আজব, বিদঘুটে, কোন কোন সময়ে বিচ্ছিরি নামের ব্লগারগণই হয়ত আপনার বেস্ট ভার্চুয়াল বন্ধু হয়ে গেল। লিখতে লিখতে বন্ধুত্ব- সত্যি পরিচয়ের এ এক অদ্ভুত প্লাটফরম।



আচ্ছা বলুন তো, ব্লগারদের আসল নামে না লেখার প্রকৃত কারণ কি? আমার ধারণা, নিজের privacy বজায় রাখা, নিজের মধ্যে ভিন্ন এক ধরণের personality গড়ে তোলা, একটু গ্ল্যামারাস, একটু মিস্টেরিয়াস, এবং কিছুটা ফান করার জন্যই হয়ত সবাই ছদ্দনাম গ্রহণ করেন। তবে এতে কিছুটা অসুবিধাও আছে। যেমন, ছদ্দনামকে একটু বেশী অচেনা লাগে, অনেকটা detached মনে হয়। আমার ত তাই মনে হয়।

অবশ্য নামে বিশেষ কিছু এসে যায় না। ব্লগে এসে হরেকরকম নাম দেখে হাসি পেলেও তাদের লেখা পড়ে কিন্তু মন ভাল হয়ে যায়। যদিও ব্লগে কাউকে সম্বোধন করা আমার কাছে অন্ধকারে ঝাঁপ দেয়ার মত মনে হয়। কারণ আমি ঠিক জানিনা যার সাথে কথা বলছি তিনি মানুষটা কেমন, কি তার আসল পরিচয়, তিনি ছেলে না মেয়ে, বয়স কত, রুচি কেমন ইত্যাদি আরো কতকিছু। একটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ধরুন, একজন ব্লগারের নাম ‘আমি কিছু জানি না’ (এই নামে আবার কোন ব্লগার থেকে থাকলে নির্ঘাত ফেঁসে যাব)। নাম দেখে মনে হতেই পারে ইনি বোধহয় আসলেই কিছু জানেন না। অথচ উনার লেখা পড়তে গিয়ে দেখা গেল, উনি জানেন তো বটেই, সাংঘাতিক ভাল জানেন। তাহলে কেন এমন ছদ্দনাম নিলেন? এর উত্তর শুধু তিনিই দিতে পারবেন। আর জানেন অন্তর্যামী।

যাইহোক, এরপর ভাবলাম ঐ সব অসাধারণ লেখার পাশে নিজের জঘন্য, বস্তাপচা লেখা মিশিয়ে দিলে কেমন হয়? সোনায় খাদ মেশানো আর কি। যেই ভাবা সেই কাজ। কিন্তু আমার নামটা কি হবে? শুরু হলো, “খোঁজ-The Search”. অনেকগুলো নাম জোগাড়ও হলো। কিন্তু একটাও যুতসই মনে হলো না। কি করি, কি করি করতে করতেই একটা নাম দীলে জব্বর চোট দিল। সেটা হলো, “ইছামতির তীরে”। যথাযোগ্য সম্মানের সাথে আল্লাহর নামে এটাকেই লটকে দিলাম।

নামের শানে নুযুল বা পটভূমি হলো, আমি ইছামতি নদী এলাকার বাসিন্দা। এই নদীটিকে আমরা বড্ড ভালবাসি। যদিও ভূমিদস্যুদের কল্যাণে(?)বর্তমানে নদী থেকে এটি জীর্ণ শীর্ণ এক খাল বা নালায় পরিণত হয়েছে। নদীটি স্থানীয় হলেও দেশব্যাপী পরিচিত। ভাবলাম নিজের নামটা যেমন বেশ কাব্যিক হলো পাশাপাশি নদীর পরিচিতিও হবে।

আর একটা দিকও ভেবেছি। তাহলো, নদী জীবনদায়ী। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা তথা সামগ্রিক পরিবেশের উপর একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছে নদী। এই নদীকে ঘিরেই গড়ে ওঠে শহর, বন্দর, গঞ্জ, বাজার প্রভৃতি। আবার নদীতে যানবাহন হিসেবে নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার, স্পীডবোট, ট্রলার এমনকি ভেলাও দেখা যায়। তেমনি আমার নদীতেও মানে লেখাতেও নানান পদের লেখা পাওয়া যাবে।(লেখার মান কোনটা লঞ্চ বা স্টিমার জাতীয় হবে আবার কোনটা হয়ত হবে ভেলার মত)। একটা কথা, আমার প্রোপিকে কিন্তু যে ছবিটা দেখা যাচ্ছে তা এই নদীরই।

সম্মানিত ব্লগারগণ, আমারটা তো দিলাম ফাঁস করে। আপনাদের নামের শানে নুযুল জানতে পারি কি?

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
৫৫টি মন্তব্য ৫৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড্রাকুলা

লিখেছেন সুদীপ কুমার, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১২

কোন একদিন তাদের মুখোশ খুলে যায়
বেরিয়ে আসে দানবীয় কপোট মুখায়ব।

অতীতে তারা ছিল আমাদের স্বপ্ন পুরুষ
তাদের দেশ ছিল স্বপ্নের দেশ।
তাদেরকে দেখলেই আমরা ভক্তিতে নুয়ে পড়তাম
ঠিক যেন তাদের চাকর,
অবশ্য আমাদের মেরুদন্ড তখনও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×