somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনের মনোরম উদ্যানে তাৎপর্যময় নৃত্য

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিত্র প্রদর্শনীতে জনৈক দর্শণার্থী

আদিমকালে যখন ভাষা মানুষের অধিগত ছিল না, তখনো যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে—অভিব্যক্তি আর নানা ভঙ্গির মধ্য দিয়ে। কিন্তু ওই সামান্য কসরত সবার কাছে যথেষ্ট মনে হয়নি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বেছে নিয়েছে ভিন্ন পন্থা, ভিন্ন মাধ্যম। আর তখনই সৃষ্টি হয়েছে শিল্পের, তা সে হোক দৃশ্য অথবা শ্রাব্য কিংবা আঁচড়ে। মূলত সেই কালপর্ব থেকেই শিল্পের নানা রূপের বিধিলিপি অলক্ষ্যে নির্ধারিত হয়ে যায়। পরবর্তীকালের মানুষ তার নিজস্ব সৃজনভাবনা আর প্রতিভায় সেই পৃথকত্বকে করে তুলেছে বিশিষ্ট। কিন্তু মূলে সেই একই প্রণোদনা—অন্যদের কাছে নিজেকে প্রকাশক্ষম করে তোলা। অবশ্য সবাই প্রকাশক্ষম নন, কেউ কেউ সেই অতুলনীয় যোগ্যতার অধিকারী হয়ে ওঠেন, নিজস্ব সত্তায় আর চর্চায়।


বলছি মিথুন আহমেদের কথা। আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন কিংবা শহীদজননী জাহানারা ইমামের একাত্তরের ঘাতক-দালালদের বিচারের অহিংস সংগ্রাম—যুক্ত ছিলেন নানা কিছুতে। ছিলেন বলছি কারণ, এ ভূমির মেধাবী এই সন্তান দুই দশক ধরে বাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু তারপরও স্বদেশ তাঁকে আঁকড়ে আছে, তাঁর চিন্তায়-মননে এবং অবশ্যই সৃষ্টিশীলতায়।


মিথুন আহমেদ

নানা মাধ্যমে কাজ করেন মিথুন আহমেদ। তবে এখন বলব তাঁর চিত্রকলা নিয়ে। (২২ নভেম্বর-০৫ ডিসেম্বর ২০১৫) আর্টকনের তত্ত্বাবধানে ধানমন্ডির গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানে হয়ে গেল তাঁর একক চিত্র প্রদর্শনী। ‘আত্মবিভাজনের খেলা’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচিত চিত্রগুলোয় মূলত শিল্পীর বিমূর্ত লক্ষণই প্রকাশিত। মিথুন এঁকেছেন জলরং, তেলরং, অ্যাক্রিলিক, রেখাচিত্র ইত্যাকার নানা মাধ্যমে।


ছবির ক্যানভাসে লাল, সবুজ আর হলুদের প্রাচুর্য আমাদের মনের মধ্যে চিরায়ত বাংলার প্রকৃতির যে মৌলচিত্র, তার আভাস জাগায়। বোঝা যায়, স্থানিক দূরত্ব স্পর্শরহিত করে বটে, তবে মনের গমনাগমন তাতে থেমে থাকে না। রঙের এই সিম্ফনি কখনো কখনো বাংলার সংগ্রামী চৈতন্য আর মানবিক সৌন্দর্যের পাঠও হয়ে ওঠে যেনবা। কোনো কোনো চিত্রে আছে ক্রন্দনের আভাস। আর অপরাপর চিত্রভাষ্যে জেগে ওঠে নানা কালপর্বে আমাদের অন্ধকারযাত্রার কথা। ধর্মে-বর্ণে আর নানা জাতিগোষ্ঠীগত বিভাজন আমাদের তাড়িয়ে বেড়িয়েছে দীর্ঘ সময়। কখনো কখনো আমরা বোধ করেছি নিঃসীম একাকিত্ব আর বিষাদ।


মিথুন আহমেদের তুলি কিংবা কলমের আঁচড়ে জেগে ওঠা চিত্রে সেসব গুপ্তকথন লুপ্ত নয়, এসেছে নানা রঙে, বিচিত্র প্রকাশে। আত্মবিবেচনায় নয় মোটেও, মিথুনের চিত্রকর্ম দেখার পর স্বীয়বোধের তন্ত্রীতে বেজে উঠেছে নানাবিধ সুর। কারণ, কোনো কোনো শিল্প তীব্র ইন্দ্রিয়ের বাইরেও অন্য কোথাও আশ্রয় খোঁজে, সেখানেই ঘটে যায় বোঝাপড়া। অক্ষর কিংবা শব্দের ঝংকারে তার প্রকাশ ক্লিশে, বরং মনের মনোরম উদ্যানে তার নৃত্য অনেক বেশি তাৎপর্যময়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×