সুস্থ সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায় যোগাসন
জীবনে প্রাণের সঞ্চার করতে হলে প্রতিদিন খুঁজে নিতে হয় প্রাণ স্পন্দন আলোড়িত করার সঠিক উপাদান। যে উপাদানে বাহুল্যতা নেই, নেই নিজেকে হারিয়ে ফেলার ভয়। বরং সেই উপাদানেই লুকিয়ে আছে নিজের ভেতরের শক্তিসঞ্চয় করার সহজ কিছু অনুষঙ্গ। এ নতুন আবিষ্কার নয়, বরং পুরনোকে প্রতিদিন নতুন করে চেনার চেষ্টা। অনেকে এই অনুষঙ্গটিকে ব্যায়াম হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন, যদিও তা ব্যায়াম নয়, তা হচ্ছে এ ওয়ে অফ লাইফ, লাইফস্টাইল। আর তার নামটিও ইতিবাচক, যোগফলের সমন্বয় অর্থাৎ যোগাসন। ধারণা করা হয়, শত বছর আগে আমাদের ঐতিহ্যের ধারায় পন্ডিতরা যে যোগাসন সংযুক্ত করে গেছেন তার নিয়মিত চর্চা নানাবিধ রোগ থেকে আমাদের সুস্থ রাখতে পারে। যোগাসন দিয়ে শুধু নানা অসুখ সারে না বরং অনেক মানুষিক সমস্যাও দূর করে দেয়া যায় এক তুড়িতে। আসুন আমরা জেনে নিই কীভাবে এই সহজ অনুষঙ্গকে সঙ্গী করা যায়।
প্রথমেই জানা দরকার যোগাসন কী? আমরা যখন খুব সাধারণভাবে শ্বাস গ্রহণ করি ও প্রশ্বাস ছাড়ি তখন ফুসফুস মাত্র ২ থেকে ৩ ভাগ প্রসারিত হয়। অন্যদিকে নির্দিষ্ট কিছু আসন ভঙ্গিমা রপ্ত করলে সেই সময় আমাদের ফুসফুস প্রায় ১০০ ভাগ প্রসারিত হয়। বোঝাই যাচ্ছে আমাদের প্রাণ শক্তির অন্যতম উপাদান অক্সিজেন যদি এই হারে শরীরে প্রবেশ করে তবে শরীরের উপকার হবে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া আমাদের স্নায়ুতন্ত্র (নার্ভাস সিস্টেম), স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (অটোমেটিক স্নায়ুতন্ত্র) ও রক্ত সংবহন তন্ত্রের (ব্লাড সার্কুলেটরী সিস্টেমে) কাজের গুণগত মান অনেক বেড়ে যায়। ফলে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের কার্যকর ক্ষমতা বেড়ে যায়। শুধু শরীরের ক্ষেত্রে নয় বরং মনের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ে অনেক অনেক বেশি। মন শান্ত ও প্রশান্ত হয়। যোগাসনের মাধ্যমে মনঃসংযোগের ক্ষমতাও বাড়ে। বিভিন্ন রোগের উপসর্গগুলোকে নিরন্তর থামানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা যেমন যোগাসন সমস্যা সমাধান করে দেয় তেমনি মানসিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায়। যোগাসনের মাধ্যমে সন্ধান পাওয়া যায় এক নতুন আলোকিত পরিস্থিতির। এভাবেই আমরা নিজেদের নতুন করে খুঁজে পেতে পারি বিভিন্ন আসনের মাধ্যমে। আসুন জেনে নিই বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনের ধরণ ও উপকারীতার কথা-
বজ্রাসন
হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতার অপর দিক মাটিতে রেখে গোড়ালির ওপর নিতম্ব রেখে সোজা হয়ে বসুন ও দু’হাত থাইয়ের ওপর রাখুন। ৩০ সেকেন্ড এইভাবে থাকুন। গ্যাসের সমস্যা, অজীর্ণ, হাইপার অ্যাসিডিটি নির্মূল তো হবেই সেই সঙ্গে মেয়েদের ঋতুসংক্রান্ত অনেক সমস্যাও কমবে এই আসনের মাধ্যমে। এছাড়াও পেটের নানা অসুখের সমাধান মিলবে এই আসনের মাধ্যমে।
সর্বাঙ্গাসন
চিৎ হয়ে শুয়ে দু’পা সোজা করে ওপরে তুলুন। এবার দু’হাত কোমরে ঠেকা দিয়ে শ্বাস নিতে নিতে বুক, কোমর ও নিতম্ব সোজা করে ওপরে তুলুন। থুতনি বুকে লেগে থাকবে। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাঁটু না ভেঙে পা মাটিতে রাখুন। এই আসনের ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের রক্ত চলাচল ভাল হয়। ফলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পায়।
ধনুরাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পা দুটি হাঁটুর কাছ থেকে ভাঁজ করে গোড়ালি দু’টি জোড়া করে কোমরের কাছে আনুন। এবার দু’হাত দিয়ে পা দু’টি শক্ত করে ধরে বুক ও উরু মাটি থেকে উপরের দিকে টেনে তুলুন। পেট কিন্তু মাটিতে ঠেকে থাকবে আর ঘাড় পেছনের দিকে ধনুকের মতো হেলে থাকবে। স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাসে মনে মনে দশ থেকে ক্রমশ বাড়িয়ে তিরিশ গুণে তিনবার অভ্যেস করুন। এই আসনের পর প্রতিবার উপুড় হয়ে শুয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে। হাড়ের নানা অসুখের ক্ষেত্রে এই আসন কার্যকর হবে।
অর্ধমৎস্যেন্দ্রাসন
পা ছাড়িয়ে সোজা হয়ে বসুন। ডান পা ভাঁজ করে বাঁ পায়ের উরুর উপর দিয়ে শরীরের বাঁ দিকের পিছনে ছোঁয়ান। খেয়াল রাখবেন যাতে পায়ের চেটো মাটিতে এবং গোড়ালি শারীরের পিছনে অংশের সঙ্গে ঠেকে থাকে। বাঁ পা হাঁটু থেমে মুড়ে ডান দিকের শরীরের পিছনে সঙ্গে লাগান। এবার বাঁ হাত ডান হাঁটুর উপর দিয়ে নিয়ে বাঁ হাঁটুর বাঁ পাশে রাখুন। ডান হাত পিছনের দিকে নিয়ে গিয়ে বাঁ উরুর কাছে ধরুন। মাথা ও ঘাড় ডান দিকে ঘুরিয়ে সমস্ত শরীরকে ডান দিকে মোচড় দিন। এ অবস্থায় স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস মনে মনে দশ থেকে ক্রমশ বাড়িয়ে তিরিশ গুনুন। হাত ও পা বদল করে অনুরূপভাবে বাঁ দিকে মোচড় দিন। তিনবার করুন।
যষ্টি-আসন
লম্বা হয়ে শুয়ে পড় ন। হাত দুটো কান ও মাথার পাশ দিয়ে টান টান করে রাখুন। শরীরটাকে শ্বাস গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে প্রলম্বিত করুন ও এই অবস্থায় ২-৩ সেকেন্ড শ্বাস বন্ধ রাখুন। এরপর শ্বাস ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরটাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে এনে বিশ্রাম করুন। দশ বার এটির পুনরাবৃত্তি করুন। শরীরকে প্রলম্বিত করার সময় মাংসপেশীগুলো উদ্দীপিত করতে পর্যায়ক্রমে একবার গোড়ালি, অন্যবার পাতা ডগায় এগিয়ে দেবেন। হাড়ের অসুখ, পেটের সমস্যা আর শরীর ফিট রাখতে এই আসন কাজ করবে চমৎকার ভাবে।
অর্ধ-শলভাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দু’টি শরীরের কাছে রাখুন। প্রথমে ডান পা সোজা করে মাটি থেকে যতোদূর সম্ভব তুলুন। বাঁ পা মাটিতে সোজা অবস্থায় পাতা থাকবে। ১০ - ২০ সেকেন্ড এই অবস্থায় থেকে পা মাটিতে নামান। একইভাবে বা পা ১০-২০ সেকেন্ড তুলুন। তারপর পা মাটিতে নামিয়ে উপুড় হয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিন। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসে এভাবে তিনবার অভ্যাস করুন। মনে রাখবেন ডান পা যতোক্ষণ উপরে তুলে রাখবেন বাঁ পাও ঠিক ততোক্ষণ উপরে রাখতে হবে। এই আসনেও হাড়ের উপকার হবে।
বৃক্ষাসন
দু’পায়ের উপর সমানভাবে ভর রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। ডান পা হাঁটুর কাছে ভেঙে বাঁ দিকে নিয়ে গিয়ে বাঁ থাইয়ের কাছে রাখুন। বাঁ পায়ের উপর শরীরের ভর রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এই অবস্থায় হাত দুটি নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের কাছে রাখুন। ৩০ সেকেন্ড পর পা বদল করে ঠিক একই রকমভাবে আবার অভ্যেস করুন। এই আসন প্রতি পায়ে দু’বার করে ৪ বার অভ্যেস করুন। এই আসনের ফলে আপনার হাড়ের নানা ব্যথা সহজেই সমাধান হবে।
অর্ধচন্দ্রাসন
দু’পা জোড়া করে দাঁড়ান। দু’হাত তুলে কানের দু’পাশে ঠেকিয়ে রাখুন। হাতের তালু দুটি পাশাপাশি রেখে এক হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে অপর হাতের বুড়ো আঙুল জড়িয়ে ধরুন। কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ পিছনে বাঁকিয়ে যেন কোমর থেকে দেহের উপরাংশ মাটির সঙ্গে সমান্তরাল থাকে। হাঁটু সোজা থাকবে। যারা প্রথম করছেন তারা দেয়াল থেকে এক হাত দূরে দাঁড়িয়ে এ আসনটি করবেন এবং পিছনে বেঁকে হাতের আঙুলের ডগা দিয়ে প্রয়োজনে দেওয়াল স্পর্শ করে ভর দিয়ে থাকবেন। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস মনে মনে ১০ থেকে ক্রমশ বাড়িয়ে ৩০ গুনুন। সোজা হয়ে দাঁড়ান। এই আসনের মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন হাড়ের নানা সমস্যার সমাধান মিলবে।
যা মনে রাখতেই হবে
০ আসন করা খুব ভাল কিন্তু যথাযথভাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আসন করার সঙ্গে সঙ্গে নিঃশ্বাস ছাড়া ও প্রশ্বাস নেওয়ার নিয়ম জানাও খুব জরুরি। প্রথম দিকে কোনও ইনস্ট্রাক্টর সাহায্য নেয়া ভাল।
০ আসন করতে হবে বলেই আসন করতে বসে যাবেন না। শান্ত মনে দুর্ভাবনা, দুশ্চিন্তা দূরে সরিয়ে আসন করার চেষ্টা করুন। সব সময় তা হয়তো সম্ভব হয় না, কিন্তু সেই চেষ্টা করতে হবে। আসনের সময় মোবাইল ফোন খুলে রাখা উচিত নয়। বাড়িতে ইনস্ট্রাক্টর এলে দেখবেন সেখানে যেন কেউ আপনাকে বিরক্ত না করে। আসন করার সময়ে ফোন, কলিং বেল ইত্যাদি থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখবেন।
০ যেখানে আসন শিখতে যাচ্ছেন সেখানকার পরিবেশ ভাল লাগলে আসনেও তার প্রভাব পড়বে। নেহাত কোনও অসুবিধা হলে অন্য কোনও যোগ সেন্টারে ভর্তি হন। যার কাছে আসন শিখবেন, দেখে নেবেন নানা আশ্রয় বা স্কুল রয়েছে, আধ্যাত্মিকভাবে তাদের মধ্যে তফাত থাকলেও যোগ ভঙ্গিমায় ও শ্বাস ছাড়া-নেয়ার গতি ভুল হলে শরীরে সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
০ প্রতিটি আসনের পর শবাসন করা জরুরি। চিৎ হয়ে শুয়ে পা দুটি লম্বা করে ছড়িয়ে দিন। হাত দুটি শরীরের দু’পাশে দেহসংলগ্ন রাখুন। দু’হাত মাটিতে শিখিলভাবে থাকবে। এক মিনিট এভাবে বিশ্রাম নিন। এখানে বলে দেওয়ার কারণে পরে আমরা আর বারবার শবাসনের কথা উল্লেখ করব না।
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।