somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শোক দিবসআমাদের ভন্ডামি

০৫ ই জুন, ২০১০ দুপুর ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কতক্ষণ লাগবে ভুলতে এসব ?
নিমতলীতে শত মানুষের মৃত্য।
বেগুন বাড়িতে ২৫ জন।
সড়ক দুর্ঘটনা।
লঞ্চ দুর্ঘটনা।
বন্যা, জলোচ্ছাস।
বিএসএফ এর গুলিতে মৃত্যু।
বখাটেদের উৎপাতে আত্মহত্যা।
রাজনৈতিক হত্যাকান্ড।
ক্রসফায়ার।
ছাত্র রাজনিতী দল গুলোর হ্ত্যাকান্ড।
পাহাড়ে মানুষ হত্যা।
সেনা হত্যা।

অবশেষে সরকার শোক দিবস ঘোষণা দিয়েছে আজ সারা দেশে।
ঢাকার বেগুনবাড়ি ও নিমতলিতে প্রায় দু'শত মানুষের মৃত্যু ঘটেছে কিন্তু ঢাকায় আরও প্রায় দু'কোটি মানুষ বসবাস করে যাদের জীবণের প্রতিটি ক্ষন কাটছে মৃত্যুর আশংকায়। ভেবে দেখুন একটা ভুমিকম্প, বন্যা হলে ঢাকার কি হবে ? কোথায় গিয়ে বাচবে এই বিশাল জনগোষ্ঠি ?

শুধু গতকালের ঘটনায় না সেই পরশু দিন থেকেই কেঁদে চলেছি আমি।
আমার জন্ম ঢাকায় তাই যখন থেকে স্কুলে একা যাই সেদিন থেকেই একা একা কাঁদতে হত প্রতিদিন, কখনও রিক্সা না পাওয়ার জন্যে, কখনও সময় মত স্কুলে বা বাসায় না পৌছতে পারার আশন্কায়। দু বার বাসের সাথে আমি ও আমার মা সহ দূর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম।

যখন আরও একটু বড় হয়েছি মনের ভেতর অসহায়ত্বের কান্নাটা আরও বেড়েছে। নিজের দেশে কত অসহায় আমি এই ভাবনাতে কৈশরেই হাসি মুছে গিয়েছিল আমার জীবণ থেকে। শুরুর দিকে ঢাকার রিক্সাওয়ালারা ছিল আমার প্রধান শত্রু, কিন্তু আত্মমগ্ন হয়ে যখন আমি ওদের কথা ভাবলাম দেশ ছাড়ার আগ পর্যন্ত ওরাই আমার বন্ধু ছিল। ( অবশ্য আমাদের দেশের পুরুষদের দৌড়টা কাজেরলোক, রিক্সাওয়ালা, প্রেমিকা, স্ত্রী, ছোট ভাই বোন আর পাড়ার বেয়াদপ ছেলেটাকে মারা বা বকা দেয়া পর্যন্তই এর বাহিরে এখন ফেইসবুক আর ব্লগ যোগ হইসে না হলে ?? )

আরেকটু বড় হয়েছি যখন, বখাটেদের হাত থেকে এক বন্ধু ও তার সহপাঠি ছোটবোন কে উত্ত্যক্ত্ করার প্রতিবাদে রক্তাক্ত হয়ে ঘরে ফিরি।
তারপর রাজনিতীতে পদার্পণ। কিন্তু বুকের ভেতরে বাংলাদেশী হয়ে জন্মানোর আসহায়ত্বের কান্না থেকে নিজেকে উদ্ধার করতে পারিনি।
মৃত্যর আশন্কা প্রতি মূহুর্তে।

আমার বাবা ব্যাবসায়ী , ঈদের শপিংএর টাকাটা একটু দেরীতেই হাতে পেতাম। সেই টাকা নিয়ে মার্কেটে গেলে নিজেকে আরও অশায় মনে হত।
অনেক বছর সেই অসহায় মন নিয়ে ঈদের বাজারে কোন কেনা কাটাই করিনি। এটা ছিল আমার মনের ভেতরে এক রকম প্রতিবাদ। মাশার কামড়ে যে কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি কে জানে। সবখানেই অসহায় ছিলাম।

৯০ এর বিএনপি সরকার যখন সাবমেরিন ফাইবার অপটিক ক্যাবল কানেকশন থেকে দেশকে রক্ষা করল, দেশের গোপন তথ্য পাচার রক্ষা করল তখনও কেঁদে ছিলাম তৎকালীন আমার মত কোটি কোটি কিশোর দের কি ভবিষ্যৎ হবে ভেবে।

বিজয় বাংলা তখন পেইট্যানট করান জব্বার সাহেব, তার সমর্থকদেরও বলতে শুনি সেই কথা আর হাসি মনে মনে এই ভেবে। যে তার বিজয় কে তার নামে পেইট্যানট করানোর রায় দিল, সেই আদালতের বা উকিলের কি সামান্য তম আইডিয়া ছিল এই ব্যাপারে না কোন আইন ছিল। এত বড় প্রতারণা করে কিভাবে একটা লোক দেশে ঘুরে বেড়ায় আবাক লাগে।

আরও বড় হই ব্যবসা করি বন্ধুদের সাথে শেয়ারে। ব্যাবসা ভালই চলছিল।
হটৎ বন্ধুদের মধ্যে একজন খুন হল। টাকার লোভে নিজেদের মধ্যে শত্রুতা। আবার সেই মৃত্যু শন্কা।

যাই হোক। এখন দেশের বাহিরে আছি, এখানে ৭ বছরে ৭ সেকেন্ডের জন্যে কারেন্ট যেতে দেখিনি। মশার কামড় খেতে হয়না। এদেশের সরকার অনেক করাপ্টেড কিন্তু জনগন সচেতন। এরা নেতাদের পা চাটা তোষামোদ কারীনা। এখানে আগুন লাগলে তা নিবারণের ব্যাবস্হা আছে।
যাতায়াত ব্যাবস্হা মোটামুটি ভাল। খাবারের দাম অনেক কম। এদেশের সবচেয়ে গরীব মানুষটাও না খেয়ে থাকে না।
এমন আরও অনেক কথা আছে যা লিখে শেষ করা যাবেনা।
কেন লিখলাম ?

কারণ,
শুধু শোক দিবস পালন করে আরও একটা দিন ছুটি কাটানো ছাড়া আমরা আর কি করছি আর সরকারকেই বা কি কাজে বাধ্য করতে পেরেছি ?

সড়ক দূর্ঘটনা, অগ্নিপাত, ব্ন্যা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, দুর্নিতী, বাক স্বাধিণতা ?? আমাদের কোন অধিকার আমরা রক্ষা করছি শোক দিবস পালন করে ?বসুন্ধরা শপিং মলে যদি আবার আগুন লাগে ?
কাল যদি ভুমি কম্প হয়
?

সামুতে কাজী নজরুলের লোগো দেখলাম না জীবণে, ফুটবলের লোগো প্রতিযোগিতা চলছে।

বিডিআর কেন্দ্রে হত্যার বিচার হলকি ? আর কত ? কতদিন ?
রাজাকাররা গালী দিয়েও ঘুরে বেরাচ্ছে। ভারতের সাথে চুক্তিগুলো কি পড়ে দেখেছিলেন ?

যাক পারলে আসুন সচেতন হয়ে কিছু করার চেষ্টা করি। গণপ্রজাতন্ত্রী দেশে জনগণ ই সকল ক্ষমতার উৎস। যাদের দায়িত্ব দিয়ে নিজেরা ঘুমিয়ে আছেন তারা যে সুই হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে তার খবর কে রাখবে ? এভাবে পারবেন ?
আর কত দিন ? কেন দূর্ঘটনার অপেক্ষায় দিন যাপন ? দু টাকা ভাড়া বেশি চাইলে যদি রিক্সা ওয়ালা থাপ্পর খায়, দু'শ টাকা চুরি করলে যদি গণপিটুনিতে পকেটমারের লাশ পড়ে তাহলে হাজার হাজার টাকা চুরি, বেঈমানি করে যারা আপনাদের ঠকাচ্ছে বার বার কেন তাদের কিচ্ছু বলেন না। কেন যারা দায়ী তারা বেচে যাচ্ছ বার বার ?
আমরা আসলেই ভন্ড একটা জাতি। মারাত্মক ভন্ড। আমাদের জেগে উঠা দরকার খুব।আসবোনা আমি এই পরাধিন দেশে যেখানে সাধারণের বেঁচে থাকার অধিকা
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১০ সকাল ৮:৩১

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১০ বিকাল ৪:৪০
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×