somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ইয়াবার সবচেয়ে বড় বাজার

২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস। ১৯৮৭ সাল এর ২৬ জুন থেকে জাতিসংঘ ঘোষিত মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী দিবস বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।প্রতি বছর আমরা বেশ ঘটা করে মাদক বিরোধী দিবস পালন করলেও বাস্তবে অবস্তা বরই করুন।বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ইয়াবার সবচেয়ে বড় বাজার।এখন প্রতিদিন ১০ লাখের কাছাকাছি ইয়াবা হাতবদল হচ্ছে। পানির মতো ইয়াবা আসার কারনে ইয়াবা এখন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক।এই ভয়ংকর মাদক ব্যবসার সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে দ্রুত বাংলাদেশে ইয়াবা আসা এবং এর ফলে ব্যবহার বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী পাঁচ বছরে ইয়াবার ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যাবে। কয়েক দিন আগে ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিজস্ব ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় সাত লাখ ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক সহকারী উপপরিদর্শক।

দেশে গত পাঁচ বছরে মাদকদ্রব্য ইয়াবা বড়ির পাচার ও ব্যবহার বেড়েছে ৭০১ শতাংশ, অর্থাৎ ৭ গুণ। একই সময়ে দেশে ইয়াবা আটকের পরিমাণ বেড়েছে ৫ হাজার শতাংশ, অর্থাৎ ৫০ গুণ।২০১০ সালে বছরজুড়ে দেশে ইয়াবা বড়ি কেনাবেচা হতো চার কোটির মতো। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০১৪ সালে তা ২৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ এই সময়ে ব্যবহার বেড়েছে ৭০১ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে ২০০৯ সালে ইয়াবা আটকের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৯ হাজারটি। আর ২০১৪ সালে ইয়াবা আটকের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ১২ হাজারটি। পাঁচ বছর আগের চেয়ে যা প্রায় ৪ হাজার ৯২৪ শতাংশ বেশি।প্রতিবছর যে পরিমাণ ইয়াবা আটক হচ্ছে, তার চেয়ে ৪২ গুণেরও বেশি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক ইয়াবার পরিমাণ ৬৫ লাখের কিছু বেশি। অথচ এই সময়ে কমপক্ষে ২৬ কোটি ইয়াবা দেশে কেনাবেচা হয়েছে।

মিয়ানমার থেকে আসা প্রতিটি ইয়াবা টেকনাফে বাংলাদেশের চোরাকারবারির কাছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য এটা নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। এই ইয়াবা কয়েক দফায় হাতবদল হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ইয়াবা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঢাকায়। এরপর চট্টগ্রাম। এ ছাড়া দেশের বড় শহরগুলোতেও এর চাহিদা রয়েছে। ঢাকায় প্রতিটি ইয়াবা বড়ি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে গেলে বা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হলে প্রতিটি ইয়াবার দাম হয় ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা।বাংলাদেশে ইয়াবার বাজার ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার। অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে হত্যাও করা হয়।

বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ ইয়াবা বড়িই আসে মিয়ানমার থেকে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদীসংলগ্ন স্থানে গড়ে ওঠা সাতটি কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবা চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসে। এসব কারখানায় প্রতিদিন দুই লাখ ইয়াবা বড়ি বাংলাদেশে পাচারের জন্য তৈরি করা হয়। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে গড়ে ওঠা ইয়াবা তৈরির আরও শতাধিক কারখানা রয়েছে। এগুলো থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশে ইয়াবা ঢুকছে। বড় চালানগুলো মূলত এসব কারখানা থেকে সমুদ্রপথে আসে। এর বাইরে ভারতের কয়েকটি সীমান্ত দিয়েও ইয়াবা আসে। থাইল্যান্ড থেকেও কেউ কেউ ইয়াবা কিনে এনে থাকেন। তবে এর পরিমাণ অনেক কম।বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গড়ে ওঠা ইয়াবা তৈরির ৩৭টি কারখানা ও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মিয়ানমারের ৪৭ জন নাগরিকের ব্যাপারে সুস্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয় মিয়ানমার সরকারের কাছে।

মিয়ানমারের ২৭ কারখানায় উত্পাদিত ইয়াবা চোরাচালান কোনো অবস্থাতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। বরং ইয়াবা চোরাচালান নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মিয়ানমারে স্থাপিত ২৭টি ইয়াবা কারখানা বন্ধ করার জন্য পতাকা বৈঠকে বিজিবি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) কর্মকর্তাদের অনুরোধ করলেও তারা ইয়াবা বিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনার কথা দিলেও তা করেনি.

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মাদক সেবন করলে মস্তিষ্কে এক ধরনের উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়, তবে সেটা স্থায়ী হয় না। এরপর আসে মানসিক অবসাদ। ঘুম হয় না। আচরণে ও চিন্তায় বৈকল্য দেখা দেয়। ন্যায়-অন্যায়বোধ লোপ পায়। মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। অনেকে যৌন উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য ইয়াবা সেবন করে থাকে। তবে এটার কোন ভিত্তি নেই বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন।চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এন হুদা বলেন, ইয়াবা সেবনে প্রথম একটু উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে সেটা সাময়িক। পরে এসব সেবনকারী চিরতরে যৌন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। প্রতিদিন ২০/৩০ জন এমন রোগী তার কাছে আসে বলেও জানান তিনি।

আমরা যদি মাদকের থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারি তে হোলে সামনে ভয়াবহ খারাপ দিন অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য মাদকের বিস্তারের ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই অপরাধ অনেক গুন বৃদ্ধি পাবে। ঘরে ঘরে অশান্তি সৃষ্টি হবে। মাদকের হাত থেকে বাচতে হোলে এই মুহুর্তে অনেক শক্ত আইন প্রয়োজন।সাথে সাথে আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ক্রীড়া বেক্তিত্ব ,সাংস্কৃতিক বেক্তিত্ব এমনকি স্তানীয় মসজিদের হুজুররা বিশাল ভুমিকা পালন করতে পারেন তা হচ্ছে মাদকের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন তৈরী করা মানুষ কে সাবধান করা। আমার বিশ্বাস দেশ বেপি সব হুজুররা যদি প্রতিটি মসজিদে শুক্র বারের জুম্মার নামাজের ওয়াজের সময় মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরে তা হোলেও মানুষ মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:১১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×