স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে পেজে লিখেছে “ অথচ তারা সেদিন নাকি স্বাধীন হয়েছিলেন ! আগে পরাধীন ছিলেন কেন, সেটার কথা বলেননি কাওকেই। জনগণ মুচকি হাসছে ! আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।”একেবারে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা নিশ্চই ভাবছেন হঠাৎ আওয়ামীলীগ তাদের অফিসিয়াল পেজ থেকে মেহজাবীনের গীবত গাচ্ছে কেন ? রাজনীতিতে মেহজাবিন এতো গুরুত্বপূর্ণ হলো কবে থেকে ? আরাফাত গং বুড়ি শমী কায়সার ,রোকেয়া প্রাচীকে ফেলে এরে টপ বানাচ্ছে কেন ?
ঘটনার সূত্রপাত চট্টগ্রাম নগরের স্টেশন সড়কের রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় খুকি লাইফ স্টাইল নামের একটি শোরুমের উদ্বোধন করাকে কেন্দ্র করে। উদ্বোধনের দিন ৫০ - ৬০ জন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মুসল্লি শোরুমের সামনে জড়ো হয়ে ‘ব্যবসায়ী-তাওহীদি’ জনতার ব্যানারে প্রতিবাদ জানতে থাকে। পরে জানা যায় চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফের হুজুর আগের দিন উপস্থিত হয়ে শো রুমের উদ্বোধন উপলক্ষে মিলাদ মাফিল পড়ান। তার সাথে থাকা লোকজন যখন শুনতে পরে পরের দিন একই শো রুম আবার মেহজাবীন চৌধুরী কে দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করানো হবে তখন তাদের কাছে বিষয়টি অবমাননাকর মনে হয়েছে ।সেই জন্য তারা পরের দিন শো রুমের সামনে দাড়িয়ে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে মেহজাবিন যথেষ্ঠ বুদ্ধিমান যখনি বুঝতে পারছে এখানে ভেজাল আছে তাৎক্ষণিক গাড়ি ঘুরিয়ে আবার এয়ারপোর্ট ফেরত চলে গেছে।
আপনারা যদি এই ঘটনাকে আর দশটা ঘটনার মতো স্বাভাবিক ঘটনা মনে করেন তেহলে ভুল করবেন। এটা গভীর ষড়যন্ত্রের একটা অংশ ছিল। সাম্প্রতিক সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করলে সহজেই বুঝে যাবেন কি ঘটছে ।গত মাসে ফেসবুকে কর্তৃপক্ষ সক্রিয় ভক্তসংখ্যার বিবেচনায় বিশ্বসেরা তারকাদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় মেহ্জাবীন এর নাম সেরা ২৫ এর মাঝে ২৪ তম স্থানে রয়েছে। তার নামের আশেপাশে রয়েছে হিউ জ্যাকম্যান, ডোয়াইন জনসন ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো তারকাদের নাম।তার মানে বর্তমানে ফেইসবুকে বাংলাদেশী তারকাদের মাঝে মেহ্জাবীন এর এখন সর্বাধিক ভক্ত রয়েছে। এই প্রাপ্তি মেহজাবিনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মূলত ফেইসবুকে সর্বাধিক ভক্ত থাকার কারণেই স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ মেহজাবীনকে টার্গেট করছে। আওয়ামীলীগ এর উদ্দেশ্য ছিলো দেশের জনগণ কে বুঝানো যে দেশে একটা অরাজক পরিস্থতি চলছে ইউনুস সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সেটার জন্য তারা মেহ্জাবীন কে টোপ হিসাবে ব্যবহার করেছে। তারা হিসাব করে দেখেছে মেহ্জাবীন এর উপর যদি কোনো হামলার চেষ্টা হয় তাহলে তা তড়িৎ গতিতে ছড়িয়ে যাবে । যদি আওয়ামীলীগ সফল হতো তে হলে এখন দেশের মানুষ বলতো ,দেখছেন দেশে কি চলতেছে ইউনুস সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মেহ্জাবীন ফিরে যাওয়াতে আওয়ামীলীগের পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে গেছে।
আওয়ামীলীগের আরাফাত গং তারপর ও এটাকে একটা ইস্যু বানানোর চেষ্টা করেছিলো । তারা মেহজাবীনের মাথায় বেন্ডেজ পড়া ছবি সব জায়গায় শেয়ার দিয়ে বলেছে মেহ্জাবীন চৌধুরী তৌহিদী জনতার আক্রমণে আহত হয়েছে। পরে জানা যায় ছবিটি মেহজাবীনের নাটক এর সময় শুটিং সেটে তোলা। মেহ্জাবীন যখন বুঝছে একটি গোষ্টি ইচ্ছাকৃত তাকে নিয়ে গুজব ছাড়াচ্ছে সাথে সাথে ফেসবুকে স্টেটাস দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে “আমার সকল বন্ধু-বান্ধব, পরিবার এবং ভক্তদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার খোঁজ নেওয়ার জন্য। আমি ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছি এবং নিজের বাসায় আছি, চিন্তার কিছু নেই। “শেষমেশ আওয়ামীলীগ যখন দেখলো কোনো পরিকল্পনাই সফল হয় নাই তখন তারা তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে মেহজাবিন এর সেই কমেন্ট এর নিচে লিখছে “আমরা মেহজাবীন চৌধুরীর পাশে আছি। সাম্প্রদায়িক শক্তি নিপাত যাক। সুদিন ফিরে আসুক, মানুষ মুক্তি পাক।”
বয়স্ক হুজুর নতির বয়সের মেহজাবিনের এর সাথে তালতলী করতে যাবে কেন ? এমন যদি হতো ঢাকা থেকে আরেকটা হুজুর যাচ্ছে তে হইলে বুঝতাম স্বার্থে ঘা লাগছে একজন অভিনেত্রী তো তার প্রতিযোগী না ।আবার এই ৫০ - ৬০ জন লোক যারা নিজেদের তৌহিদী জনতা বলে পরিচয় দিচ্ছে ,তারা করা ? এরা আবার পোস্টার তৈরী করছে প্লেকার্ড তৈরী করছে সেটা আবার রিয়াজউদ্দিন বাজার এর বিভিন্ন ব্যাবসায়ীদের ফেইসবুক গ্রুপে শেয়ার দিছে । অথচ রিয়াজউদ্দিন বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি বলছেন এর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই ।নিশ্চই বুঝতে পারছেন বাইরের একটা ৫০ জনের গ্রুপ এটাকে ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে ।এর সাথে হুজুর বা ব্যাবসায়ীদের কোনো সম্পর্ক নেই ।
আওয়ামীলীগ এর মতো স্বৈরাচারী রাজনৈতিক দল এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অন্য সব রাজনৈতিক ইস্যু বাদ দিয়ে মেহজাবীনের বিষয়ে অফিসিয়াল পেজ থেকে ঘন্টায় ঘন্টায় বিবৃতি দিচ্ছে। মাহজাবীন জাতীয় রাজনীতিতে এতো গুরুত্বপূর্ণ কেউ না।গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা না থাকলে আওয়ামীলীগ এমন কাজ করার কথা না। পরিকল্পনা দেখেই বুঝা যাচ্ছে এখানে raw এর ইনপুট আছে , মেহজাবীন নিজেই চট্টগ্রামের মে কাজেই এটাকে ইস্যু বানিয়ে সহজেই চট্টগ্রামের লোকজনকে বিভ্রান্ত করা যাবে ,অন্যদিকে ইসকনের হিন্দু জনগোষ্ঠী কে ব্যবহার করে ভারত অনেক দিন থেকেই চট্টগ্রামে একটা ভেজাল লাগানোর চেষ্টায় আছে কিন্তু বেটে বলে হচ্ছে না মেহ্জাবীন ইস্যুতে হয়তো সেটা চাঙ্গা হবে ,মেহজাবীন এর ফেসবুকে প্রচুর ভক্ত আছে তাদের সবাইকে ইউনুস সরকার এর উপর ক্ষেপায় দেওয়া সম্ভব । এভাবে একেক বার একেক ইস্যু সামনে এনে মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেওয়াটাই (RAW ) এর কাজ। ( RAW ) মূলত মানুষের মনোজগৎ নিয়ে খেলে তারা মেশিনগান দিয়ে মাঠে যুদ্ধ করে না।