somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরকারগুলোর হঠকারি পদক্ষেপ আর কথায় কথায় (হালের বাকশাল) নানা জুজুর সাথে তুলনা

০২ রা জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই সরকারের অনেক পদক্ষেপকে কোনরকম সন্দেহ ছাড়াই বলা যায় হঠকারিমূলক। ক্ষমতায় এসেই নিজেদের ঘরানার লোকদের গোটাদশেক টিভি লাইসেন্স দিয়েছে মহাজোট সরকার, যার স্বচ্ছতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। হতাশার বলি আর উদ্বেগের বলি, ভয়টা হলো এই সরকার তার আগের আমলে একুশে টিভির উদাহরনটাও ভুলে গেছে। লাইসেন্স দেয়ার ত্রুটিগুলোকে ধরিয়ে না দিয়ে বা শুধরানোর কোন নির্দেশনা/সময়/নোটিশ না দিয়ে গত বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার আইনের শাসনের কথা বলে একুশে টিভি বন্ধ করে দিয়েছিল। এমনটা যে ভবিষ্যতেও ঘটা সম্ভব, তা বর্তমানে সরকার মাথায়ই আনছে না। ক্ষমতার মোহে এই যুগে অন্ধ হয়ে যাওয়ার মাশুল কিভাবে দিবে এরা, তা ভবিষ্যতের কাছেই তোলা থাকুক আপাতত।

আমার মূল ফোকাসটা অন্যখানে। সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই যেকোন সুযোগে বাকশাল বা ভারতসহ অন্যান্য জুজু তুলে কথা বলা বিএনপিসহ অন্য সমমনা দলগুলোর পুরোন নীতি। বেগম জিয়াও কদিন আগে তরুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে যারা বাকশাল দেখেনি তাদেরকে এই সরকারের কর্মকান্ড দেখেই বাকশালি শাসন সন্মন্ধে ধারনা পেয়ে নিতে।

আবার বিএনপি আমলে আমরা কথায় কথায় আওয়ামি লীগ বা সমমনাদের কাছে শুনতাম স্বাধীনতাবিরোধি শক্তিসহ নানান কথাবার্তা।

আমার আপত্তি এখানেই........

বাকশাল ছিল একটি প্রকাশ্য রাজনৈতিক পদক্ষেপ। ঘোষনা দিয়ে সংবাদপত্র বন্ধ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাহরণ সহ নানা কর্মসূচি ছিল সেখানে। এসব কারনে এদেশের মানুষের একটা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিমধ্যেই আছে বাকশাল নিয়ে, সেই সাথে এটাও ঠিক যে অনেক প্রপাগান্ডাও যুক্ত হয়েছে সময়ের সাথে। ঠিক তেমনিভাবে বাকশাল যে তার সাফল্য প্রমাণের সময়/সুযোগ পায়নি এটাও বাস্তব। আমাদের সামনে অজস্র উদাহরন আছে যেখানে বাকস্বাধীনতাসহ অন্যান্য মানবাধিকার খুবই সীমিত। কিন্তু তাদের নেতৃত্বের সততা বা জাতিগত উৎকর্ষতা ইত্যাদি, কারন যাই হোক, তারা আমাদের সামনে আজ বড় উদাহরন। ঘরের কাছের মালয়শিয়া, চীন হওয়ার আপাত অবাস্তব স্বপ্ন দেখা বা তাদের উন্নতি দেখে আফসোস করা আমাদের প্রাত্যহিক নিয়তি।

আজকের বাস্তবতায় বাকশাল আমাদের দেশে আদৌ কার্যকরি হতো কিনা, তা কখনোই জানা যাবেনা। তাই এ নিয়ে তর্ক অর্থহীন। একইভাবে এ প্রশ্নও এসে যায় এত স্বপ্ন/শখের 'গণতন্ত্র' আমরা কতটা উপভোগ করতে পেরেছি, না পারলে কেন পারিনি। এত মুক্ত তথ্যপ্রবাহের যুগে স্রেফ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে প্রকাশ্যে মানুষ পিটিয়ে হত্যা কি বন্ধ করা গেছে?? আমাদের নেতৃবৃন্দকে শোধরানো গেছে, প্রকাশ্য মাস্তানিকে প্রতিরোধ করা গেছে?? অথবা ঢাকার অনিবার্য মৃত্যু ঠেকানোর কোন প্রতিকার করা গেছে, নদীগুলোকে বাঁচানো গেছে?? যদি উত্তর নেতিবাচক হয়, তবে কি দরকার আমাদের এত স্বাধীনতার, এই প্রশ্ন করাটা কি অযৌক্তিক?? কোন শক্ত শাসকের কব্জা থেকে আমরা তথাকথিত দুটি ইজারাদারের ইচ্ছাধীন হয়ে গেছি........

আজকে কথায় কথায় শুনি এরশাদের আমল নাকি অনেক ভালো ছিল, আমাদের আজকের গনতন্ত্রের জন্য এরচেয়ে বড় উপহাস আর কি হতে পারে??

সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমাদের সবক্ষেত্রেই দেশপ্রেমের অভাবটা প্রকট হয়ে গেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থরক্ষায় আমরা অনৈতিকতাকে মেনে নিয়েছি। তাই মিথ্যা আর ভন্ডামিকে আশ্রয় করে দিন চলতে অভ্যস্ত এখন আমরা। সেক্ষেত্রে বাকশাল হোক আর না হোক, তা নিয়ে মাথা ঘামানোর আদৌ কিছু নেই.......

আমাদের প্রয়োজন ধান্দাবাজি থেকে মুক্ত হবার চেষ্টা করা, শর্টকাটে উপরে উঠার ইঁদুর দৌড় আমাদের কোন সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা উপলব্ধি করা। তা না করে যদি আমরা স্বাধীনতার চেতনা জুজু, সার্বভৌমত্ব জুজু, ভারত জুজু, পাকিস্তান জুজু, বাকশাল জুজু, ভাঙ্গা সুটকেস জুজু, স্বৈরাচার জুজু বা হালের যুদ্ধাপরাধী জুজু নিয়ে লম্ফঝম্ফই করতে থাকি, তাহলে লাভ ঐ গোষ্ঠিরই হবে যারা চায় জনগন আসল ব্যাপারে দৃষ্টি না দিয়ে এসব নিয়ে পড়ে থাকুক........লাভের গুড়ের ভাগাভাগি সময়মতো/জায়গামতো ঠিকই তারা করে নেবে।
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×