somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের শহর দার্জিলিংয়ে-৪

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেঘের শহর দার্জিলিংয়ে-৩

>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

লেখার এই জায়গাটাতে এসে মনে হচ্ছে শিরোনামটা ঠিক যথার্থ হয়নি, কারন দার্জিলিং আস্ত একটা জেলা, যার ভেতরে শিলিগুড়ি, কালিম্পং, কুরসেং আর মিরিক শহরও পড়ে।

যাই হোক, নেপাল বর্ডারে হতচ্ছাড়া একটা রাত কাটিয়ে আবার ভারতে ঢুকে শিলিগুড়ি হয়ে যাত্রা করলাম কালিম্পংয়ের দিকে... আমার একটা দোষ হলো, মাথায় কোন গানের কলি ঢুকলে তা সহজে নামতে চায়না। ভেবেছিলাম অঞ্জনের কাঞ্চনজঙ্ঘা গানের সুর বুঝি ভাজতেই থাকবো, কারন কালিম্পংয়ের সাথে প্রথম পরিচয় ঐ গানের সূত্রেই, কিন্তু পথের দৃশ্যাবলি আমাকে কোন একটা কিছুতে আবদ্ধ থাকতে দিলনা...

এই পথটা দার্জিলিং যাওয়ার পথের মতোন পাহাড়-বাওয়া নয়, বরং অনেকটা ক্রমশ উঁচু হতে থাকা আপাত সমতলই যেন। শুরুতেই পথের পাশে পেলাম আমার দারুন পছন্দের বানর...



চলতে চলতে হঠাৎ বেশ গর্জনের শব্দ, এখানে তো সাগর থাকার কথা না, তবে... চোখ চলে গেল তিস্তা নদীর দিকে, প্রচন্ড খরস্রোতা পাহাড়ি তিস্তা দেখে বিমোহিত হয়ে গেলাম





কিছুক্ষন পরে ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে জানান দিল যে লাঞ্চ সারবে... এতো না চাইতেই যেন স্বপ্নপূরণ!! আমরাও গাড়ি থেকে নেমে ছোট্ট কুঁড়েঘরের মতোন হোটেলে ঢুকে মেনু দেখেই লাঞ্চের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম



আর নিচে নেমে তিস্তার নীল পানির স্পর্শ...



অনেক উঁচু একটা সেতু পেরিয়ে সামনে যাত্রা



অবশেষে দুপুর নাগাদ কালিম্পংয়ে ঢোকা...

হোটেলে উঠার পরে অঞ্জনের শংকর হোটেলের কথা মাথায় এলো, কিন্তু কী আর করা:(

বিকেল করে বেরুলাম ঘুরতে, হোটেল থেকেই সব ম্যানেজ করে দিলো...

জানতাম না কত বড় চমক অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য সামনে...

একটা রেস্ট হাউস চত্বরও যে ট্যুরিষ্ট স্পট হতে পারা আগে ভাবিনি কখনো... দেওলো রিসোর্ট চত্বরে ঢুকেই তাই এর রিসিপশনের দিকে গেলাম ভাড়ার খোঁজ জানতে, হঠাৎ পেছন থেকে আরেক বন্ধুর চিৎকার, "দৌড় দেও, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাইতেছে।"

আর কিসের কি, ঊর্দ্ধশ্বাসে দৌড়ে দেখি শেষ দুপুরের মোলায়েম আলোয় মেঘের চাদর সরিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে আছে সে...এতক্ষনে গানটা গুঞ্জরিয়ে উঠলো যেন আমার মাথায়, কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে ক্যামেরা বের করতে... ফলে সেই অনন্য শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা শুধু আমার স্মৃতিতেই।

নিচের ছবিটা দেখুন, মেঘের আড়ালেও কত অনন্য সে...



হঠাৎ করে আল্লামা ইকবালের শায়েরি মনে হলো

আয়ি হিমালা, আয়ি ফাসিল-ই-কিশোয়ারই হিন্দুস্তান
চুমতা হ্যায় তেরি পিশানি-কো ঝুককার আসমান।

(ও হিমালয়, তুমি যেন মাতৃভূমি হিন্দুস্তানের দুর্গরূপ দেয়াল
নতজানু হয়ে আকাশ অনুরাগের চুমুতে ভরিয়ে দেয় তোমার কপাল)--দুর্বল অনুবাদের সম্পূর্ণ দায় আমার।

এরপরই আচ্ছন্ন হলাম এক গভীর হতাশায়, আজ আমি ইতিহাসের এক পাকচক্রে বাঁধা পড়ে, বর্তমানের ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নানা সমীকরনের ফলে নিজেকে আর বিশাল, মহান ভারতবর্ষের অংশ মনে করতে পারিনা... গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের খন্ডিত এক ছোট্ট মায়ায় ঘেরা সমস্যাসংকুল ভূ-খন্ডই আমার দেশ... আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।

কালিম্পং খুব বিখ্যাত এর ক্যাকটাসের জন্য...





পরদিন সকালে এমন কয়েকটা নার্সারি দেখে ফিরে আসি দেশের পথে...

(সমাপ্ত)
৩৬টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×