ধৃষ্টতা ক্ষমা করবেন।
আমি বাংলাদেশ এর ট্যাক্স সিস্টেম নিয়ে কিছুদিন কাজ করে আর আব্বুর যাকাত এর টাকা গরিব নিঃস্ব দের মাঝে বিতরণ করতে যেয়ে লক্ষ্য করলাম কেও যদি তার সম্পদ এর উপরে সঠিক পরিমানে যাকাত আদায় করে তাহলে তা বাংলাদেশ সরকারকে প্রদেয় কর এর চেয়ে অনেক বেশি হয়। আপনার বাবা মা কে বলুন সঠিক পরিমানে যাকাত আদায় করতে। দেশ থেকে দারিদ্র্য কমে যাবে।
মার্জিত ও শালীন পোশাক পরে আপনি সবার কাছ থেকে সম্মান আদায় করে নিতে পারবেন। ইভেন্ট এর কিছু ছবি তে দেখলাম কিছু মেয়ে হিজাব পরেছে যা প্রশংশার দাবিদার। কিন্তু অনেক মেয়েদের দেখলাম তা করে নি। আপনারা যখনি এই ধরনের ইভেন্ট এ যাবেন মনে রাখবেন আপনারা আপনাদের চিরাচরিত পরিবেশ ছেড়ে অন্য রকম পরিবেশে যাচ্ছেন যেখানে সাধারন মানুষ আপনাদের পরিধেয় পোশাক নিয়ে সমালোচনা করতে পারে। আপনি একা রাস্তার মধ্যে নিজের পছন্দ মত পোশাক পরতে পারেন। সেটা অশালিন এবং অমার্জিত হলে লোকে আপনাকেই দায়ী করবে। আপনি যখন কোন একটি প্রতিষ্ঠান অথবা সংস্থার ইউনিফর্ম পরে কোন অনৈতিক বা অন্যায় কাজ করবেন, তখন আপনার কৃতকর্মের জন্য আপনার ওই প্রতিষ্ঠান কেই দায়ী করা হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী যদি আপনাদের পোশাক নিয়ে সমালোচনা করে আর আপনারা যদি তা আমলেই না নেন, তাহলে আপনারা প্রথমেই সমাজ কে অবজ্ঞা করলেন। এটা সমাজ সেবা হল কিভাবে?
আমি গত ২ দিন ধরে জাগো কে কাজ করা ছেলে মেয়েদের কথা শুনে ও লেখা দেখে বুঝলাম, এরা জাগো কে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে। এদের মধ্যে কোন সন্দেহ কাজ করে না। এইরকম বিশ্বাস থাকা ভালো কিন্তু সবসময় না। । নিজেদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যেসব প্রতিষ্ঠান এর নাম তারা দিয়েছে, আমার মনে হয় না এদের সাহায্য এর পরেও রাস্তায় যেয়ে মানুষের কাছে থেকে আর্থিক সাহায্য চাইবার দরকার আছে। জাগো এর সাথে যেহেতু অনেকগুলো কোম্পানি কাজ করে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য, অনেক বড় অংকের আর্থিক লেনদেন ও হয়ে থাকতে পারে। এইসব ক্ষেত্রে আর্থিক স্বচ্ছতা অনেক বেশি দরকার।
দাতা সংস্থা গুলোর উচিৎ অর্থ সহায়তা প্রদান করবার আগে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান দিয়ে অডিট করানো।
যারা কাজ করল তারা বুঝতেও পারলোনা টোটাল ইভেন্ট টাই ছিল "ব্র্যান্ডিং ক্যাম্পেইন"।
একটু গবেষণা করে মনে হল জাগো তাদের ইভেন্ট এর দিন দুপুরের খাবারের পর বিতরণ করা ২৫০মিলি পেপসির বোতলগুলো স্পন্সর দের কাছে থেকে পেয়েছে। ট্রান্সকম গ্রুপ এর কেএফসি, পিজ্জা হাট "জাগো" কে স্পন্সর করছে। পেপসি ও ট্রান্সকম গ্রুপ এর। যাই হোক। নিজেদের খরচে টি শার্ট বানানোর দাবীটাও আমার কাছে বানোয়াট বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
যারা দেশ, সমাজ,আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ধর্ম নিয়ে কম উৎসাহী তাদেরকে বোকা বানানো অথবা অন্যায় কিছু করিয়ে নেয়াটা তুলনামূলক সহজ। জাগো তে কাজ করা অনেকেই আমাদের মতো সমালোচক দের বলছেন "আগে নিজেরা চ্যারিটি করে আসেন, তারপরে কথা বলেন" অথবা "নিজেরা কিছু করতে পারেন না, অন্যরা করছে তাতেও সমালোচনা করছেন" ইত্যাদি।
কারো কি বুয়েট এর "হৃদয়" অথবা আইডিয়াল এর "অমিত" এর কথা মনে পড়ে? এইরকম আরও অনেকের নাম এই মুহূর্তে মনে পরছেনা। আমি নিজেও কাজ করেছি এবং এখনো করছি।
আমি জানি না আপনারা ঠিক কতদিন ধরে জাগো এর সাথে কাজ করছেন। তবু আপনাদের বলছি জাগো এর আর্থিক প্রতিবেদন না প্রকাশ করায় এবং বার্ষিক নিরীক্ষা না করানোর কারনে আমি জাগো কে বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমি ACCA এর ফাইনাল পার্ট এর স্টুডেন্ট। নৈতিকতা এবং পেশাদারিত্ব এর উপরে আমাদেরকে উচ্চশিক্ষা দেয়া হয়। আমার মতে জাগো এখনো পেশাদারিত্বর পরিচয় দিতে পারেনি। সমালোচনার জবাব দেয়ার আদর্শ পন্থাগুলোর একটিও তারা প্রয়োগ করেনি। আমি আর্থিক খাতে দুর্নীতি অথবা অনিময় এর উপরে বিশেষায়িত পড়ালেখা করবার কারনে, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতার গুরত্ত অনুধাবন করতে পারি। নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অর্থ সগ্রহ এবং খরচ না করলে সেখানে অনিময় হবেই। আমি জাগো এর বার্ষিক অনুষ্ঠান এর কিছু ছবি দেখেছি ফেসবুক এ। একটি অলাভজনক দাতব্য সংস্থার বার্ষিক অনুষ্ঠানে এতো ব্যাপক আয়োজন এবং খরচ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
সবশেষে, ধর্মীয় অথবা সামাজিক যেদিক থেকেই দেখি না কেন, একজন আত্মমর্যাদাশীল মানুষ, সকলের সামনে নিজেকে মার্জিত এবং শালীন পোশাকে উপস্থাপন করেন।
আসুন আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমাজের সেবা করবার চেষ্টা করি এবং সামাজিক বৈষম্য দূর করি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




