নগর পরিকল্পনাবিদ এই আমার কাছে চন্ডীগড় শহরটি পরিকল্পনার অন্যতম একটি আদর্শ। শুধু আমি নয়, প্রতিটি পরিকল্পনাবিদ এবং স্থপতির কাছে এটি একটি মান স্বরূপ। তো সেই আদর্শ শহর ভ্রমনে গিয়েছিলাম ২০১২তে। সেই ভ্রমনের স্মৃতিগুলো চার পর্বে তুলে ধরছি ব্লগে।
আজ প্রথম পর্বে থাকছে চন্ডীগড়ের জন্মদাতা স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ লি কর্বোসিয়ার মিউসিয়ামের বর্ননা। এটি চন্ডীগড়েই অবস্থিত। পরিকল্পনাকালীন সময়ে এটি ছিল লি সাহেবের অফিস যা এখন মিউসিয়ামে পরিনত হয়েছে।
দেরাদুন থেকে চন্ডীগড় মাত্র ৩ ঘন্টা দূরে। কিন্তু চন্ডীগড়ে বেশী সময় কাটাতে চাই বলে সকাল ৬টায় বেরিয়ে পড়লাম হোস্টেল থেকে। আমি, আমার সহপাঠিনী এবং একজন ডিপার্টমেন্টাল সাইন্টিস্ট.....এই তিনজনের যাত্রা শুরু হয়ে গেল। গাড়িতে উঠেই ঘুম দিলাম। তাই খুব বেশী ছবি তোলা হয়নি যাত্রাপথে। তবে পথে পোয়ান্টা লেকে নজরে এল অতিথি পাখির দল।
হিমাচল প্রদেশ পাড়ি দেওয়ার পথে দেখলাম শিখ ধর্মালম্বীদের উপাসানালয় গুরুদুয়ারা। দেখে মনে হয় রাজ প্রাসাদ!
ঠিক ৯টায় পৌছে গেলাম চন্ডীগড়ে। টি-৬০ মডেলের একটি ট্যাংক আমাদের স্বাগত জানাল। চন্ডীগড় একটি ইউনিয়ন টেরিটরি যার গভর্নর জেনারেল সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হন আর তাই বোধহয় ট্যাংক দিয়ে স্বাগত জানানো (মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল জ্যাকব একসময় চন্ডীগড়ের গভর্নর জেনারেল ছিলেন)।
আমরা উঠলাম আই.টি.পি.আই গেস্ট হাউসে। কিছুটা বিশ্রাম এবং সকালের নাস্তার পর শুরু হল চন্ডীগড় ভ্রমন। প্রথমে গন্তব্য মিউসিয়াম। আমাদের ড্রাইভার দেরাদুনী তাই চন্ডীগড় তার অচেনা। আর সে কারনেই ট্যাবের জিপিএসই সই। ঘুরতে এসে নিজেই গাইড বনে গেলাম। পথে যেতে যেতে দেখলাম চন্ডীগড়ের বিখ্যাত স্থাপত্যকলা ওপেন হ্যান্ডের রেপ্লিকা।
মিউসিয়ামে পৌছোতেই মিউসিয়ামের ট্যাগ এবং মডেল আমাদের স্বাগত জানাল। যেদিকেই তাকাই একটা থিমেটিক ব্যাপার।
মিউসিয়ামের শুরুতেই লি সাহেবের জীবনকাহিনীর সচিত্র বর্ননা। তার নানা বয়সের ছবি, কর্মকালীন ছবি, লি সাহেবের ব্যবহার করা ড্রয়িং ইন্সট্রুমেন্টস, ইত্যাদি খুবই সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা এখানে।
এরপর এল চন্ডীগড়ের ইতিহাস। চন্ডীগড়ের পরিকল্পনা তৈরিতে জড়িত কর্তাব্যক্তিদের নাম, প্রথম সার্ভে প্লান, প্রথম তৈরিকৃত গাইড ম্যাপ, ইত্যাদি সব কিছু সাজিয়ে রাখা হয়েছে এমনভাবে যাতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেউ দেখলেই চন্ডীগড় সম্পর্কে জেনে যাবে।
কর্তাব্যক্তিদের নাম:
প্রথম সার্ভে প্লান:
প্রথম তৈরিকৃত গাইড ম্যাপ:
চন্ডীগড়ের ইতিহাস:
ইতিহাস জানবার পর সময় এল চন্ডীগড়ের কিছু স্থাপত্যকলার আসল ডিজাইন দেখার। ওপেন হ্যান্ড, এসেম্বলী হল এবং সুকনা লেকের মূল নকশা যা লি সাহেব করেছিলেন তা দেখতে পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হল।
ওপেন হ্যান্ড:
এসেম্বলী হল:
সুকনা লেক:
মিউসিয়ামের শেষ অংশ ছিল এটি। এরপর সুভ্যেনুর শপে গিয়ে টুকটাক শপিং করলাম।বাইরে এসে দেখলাম একটি ভাষ্কর্য কিন্তু থিমটা ঠিক বুঝতে পারলামনা। আমি বরাবরই ডিজাইন সেন্সে অপরিপক্ক তাই সৌন্দর্য দেখারর সার। থিম বুঝে হবে টা কি??
লি কুর্বেসিয়ার মিউসিয়াম দর্শন সমাপ্ত। পরিকল্পনাবিদ সাইফুল আজীম তার গুরুর কর্মদর্শনে ধন্য।
*২য় র্পবে থাকবে পরবর্তী গন্তব্য রোজ গার্ডেন এবং ওপেন হ্যান্ড ভাস্কর্যেরর বর্ননা।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




