ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ, কাজেই তারা যুদ্ধের ময়দানে ঢাল তলোয়ার বিহীন আনন্দভ্রমনের মতন চলাফেরা করে করোনা ভাইরাস দেহে ধারন করছেন হাসি খুশিতে , ভাইরাস অদৃশ্য বলে সহজেই এর উপস্থিতি অস্বীকার করছেন দরিদ্র জনগণ।
আবার ধার্মিক নন, ধর্ম কর্ম রোযা তেমন পালন করেন না এমন সব মানুষ করোনা কাল শুরু হবার পর ধর্মের দোহাই দিয়ে বলছেন জন্ম মৃত্যু আল্লাহর হাতে , অতএব এত মৃত্যু ও আক্রান্তের হাড় বেড়ে যাওয়ার পর ও তারা মাস্ক না পড়ে দাঁত বের করে হেসে হেসে কথা বলেন মাস্ক পড়লে এখনো তাদের দম বন্ধ হয়ে আসে, তাদের আরেকটা কমন কথা তারা ভালো মানুষ তাই তাদের করোনা হবে না, করোনা গজব তো খারাপ মানুষের জন্য।
এক সপ্তাহ আগে একদিন আমি পাবলিক বাসে উঠেছিলাম, আমাকে সহ ৪/৫ জনের যাত্রী নিয়ে ফার্স্ট স্টপ থেকে বাসটি চলতে শুরু করার কিছুক্ষণ পর বাসের ড্রাইভারের পরিচিত সন্মানীয় ভাই, যার মুখের উপর হেল্পারদের কথা বলার সাহস নাই! যে ড্রাইভারের পাশের মহিলা আসনে আয়েশ করে বসে দাঁতে খিলান করতে করতে বললেন, এই যে বোকা শোঁকা পাবলিকদের করোনার কথা বলে সরকার ঘরে আটকায়ে রেখে নিজের কর্ম হাসিল করতেছেন; পাবলিকরা সেটা ধরতে পারতেছেন না, এমনি বোকা পাবলিকের দল দেশে।
হেল্পার জবাবে বলল ভাই করোনা তো আছে, তিনি মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মতন চেহারা করে হেল্পারের দিকে ফিরে বললেন, তুই কোনোদিন করোনা রোগী দেখছোস? হেল্পার বলল জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি এইগুলাই করোনা। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন বিরক্ত হয়ে বলল জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি আগে হয়নাই? এইগুলা হইলেই করোনা? হেল্পার কোন জবাব দিতে পারলোনা আবার তার কথা ও মানলো না, হেল্পারের হয়ে জবাব দিলো আমার মতন অফিসগামী একজন, সে গলা খাকারি দিয়ে বলল জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি হলো করোনার উপসর্গ, আগের ঠাণ্ডা কাশি আর এখনোর ঠাণ্ডা কাশি এক না। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন মুখ ঘুরিয়ে যাত্রীটির দিকে এমনভাবে তাকালো যে সে এই মাত্র তার সামনে বসা সাক্ষাৎ গাধা দেখতে পাচ্ছেন।
মান সন্মান বাঁচাতে লোকটি চুপ হয়ে গেলো। এখন এই করোনা না মানা লোক আমাদের সমাজে দুই তৃতীয়াংশ এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে, কোন লকডাউন তারা মানবে না, মাস্ক তারা পড়বে না, যেখানে সেখানে কফ, থু থু ফেলবে, এবং নিজের অজান্তেই অনেককে আক্রান্ত করবে।
যাদের এখনো করোনা হয়নাই, কিংবা হয়ে গিয়ে সুস্থ হয়েছেন, কিংবা হয়ে থাকতে পারে বুঝতে পারেন নাই তারা সবাই (কিছু জানা কথা)--
১। নাক কান মুখে যখন তখন হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন, মুখ হচ্ছে করোনা শরিলে প্রবেশের প্রধান মাধ্যম, মুখ ঢেকে রাখুন, নিয়মিত মাস্ক পরিধান করুন।
২। বাইরের খাবার পরিহার করুন।
৩। কিছু খাওয়ার পূর্বে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন,
৪। ফ্রোজেন ফুড পরিহার করুন,
৫। নিজেকে পরিষ্কার রাখুন, ভালো করে সাবান অথবা সাওয়ারজেল দিয়ে দৈনিক গোছল করুন,
৬। আদা ও অন্যান্য মশলা দিয়ে চা পান করুন,
৭। মধু কালি জিরা দৈনিক একবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, মধু খাওয়ার নিয়ম ফলো করে খান, মধু গরম পানিতে মিক্সড করে কখনোই খাবেন না, এক চামচের বেশি না খাওয়াই ভালো
৮। এলাচি ফুশফুশ ভালো রাখে, দৈনিক একটি এলাচি মনে করে খেতে পারেন,
৯। শাক সবজি বেশি করে খাবেন, দৈনিক এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করুন। দুগ্ধজাত খাবার ফলমূল খান।
১০। নাকে বাস্প নিন, ভাইরাসটা নাকি নাকের পারানাসাল সাইনাসের পেছনে প্রথমে অবস্থান নিয়ে থাকে, আমার তো এত কাজের পর আলাদা বাস্প নেয়ার সুযোগ হয় না , আমি ফু দিয়ে কিছু খাবার এমন ভাবে খাই যেন খাবারের গরম ভাপ নাক দিয়ে যায়, তাই বলে অতিরিক্ত গরম খাবার খেয়ে ফেলবেন না।
আমি সহ সকলের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করছি।
সিচুয়েশন এমন যাচ্ছে যে মনে হচ্ছে এই বুঝি শেষ পোস্ট। আল্লাহ সবাইকে নেক হায়াত দান করুক।
ছবিঃ নেট
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১৭