
শক্ত খসখসে, মমতাময় সেই হাত। প্রথমবারের মত সেই স্পর্শে বুঝলাম, এই হাত কত না পরিশ্রমের সাক্ষী, তার
ভাইদের মানুষ করেছে, নিজের ছেলেমেয়েদের জন্য দিনরাত খেটেছে। চেনা অচেনা আরো কত মানুষের জন্য খেটেছে আমার পরোপকারী বাবা।
আজ আমার অনেক জ্বর, শরীরটা কাঁপছে, কপালে হাত রাখার জন্য কেউ নেই। আব্বা, আপনার সেই হাতটা খুব মনে পড়ছে আজ। মনে হচ্ছে আপনার হাতটা মাথায় রাখলেই সব জ্বর কমে যাবে।
আব্বা, আপনি কেন চলে গেলেন?
আমি তো মনের দিক থেকে এখনো ছোট, আপনার ভারী গলায় বলা কথাগুলো, জ্বর এলেই আপনি ডাব কেটে মগ ভর্তি করে রাখতেন, ডাবের শাঁস গুলো আলাদা বাটিতে তুলে দিতেন, বার বার তাড়া দিতেন খাওয়ার জন্য। আব্বা, আপনি কোথাও নেই।
একবার আমার অফিস থেকে ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল। আকাশ জুড়ে বৃষ্টি থেমে থেমে বাজ পড়ছে।
জলমগ্ন গলি পেরিয়ে যখন এলাকার রাস্তায় পা রাখলাম, হঠাৎ সেই চেনা কণ্ঠটা কানে বাজল ছাতা নে ভিজে যাবি ঝড়ের মধ্যে আব্বা ছাতা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। নিজে অনেকটা ভিজে গিয়েছেন সেদিকে খেয়াল নেই, আমাকে বলছেন তুই ভিজলে ঠান্ডা লাগবে!
আর আমি তখন শুধু তাকিয়ে ছিলাম, এই মানুষটা, যিনি নিজের আরাম অসুবিধা কিছু না ভেবে
আমার জ্বরের আশঙ্কায়ও দুঃশ্চিন্তায় কুঁকড়ে আছেন।
আজ অনেক দিন হয়ে গেছে, আমি আবার বৃষ্টিতে ভিজি, জ্বরে পুড়ি। এখন আর আব্বা নেই দুশ্চিন্তা করার জন্য।
আব্বা, আপনি কোথায় হারিয়ে গেলেন?
আমার দুচোখ জলে ভিজে যাচ্ছে আপনার না থাকায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




