somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবিতাঃ আমিও মানুষ

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সবাই ভাবে আমার সস্তা জীবন
কিভাবে অতিবাহিত করি।
আমি তো তাদের মত না,
না কোনো স্বপ্নময় উন্নত সম্মানিত জীবনের অধিকারী।
অথচ আমি যখন তাদের সত্যিটা বলতে চাই
তারা ভাবে আমি বুঝি শুধু শুধু ওরকম বলি,
কিংবা আমার দুর্দশায় তাদের অন্তর আরো কঠিন
আমি বলি,
আমি অনেক কষ্টে থাকি,
আমার নীরব চাহনিতে
আমার হাঁটার ধীরভঙ্গিমায়
আমার চোখের নীচের কালি নিয়ে
আমি একজন মানুষ।
ভাঙাচোরা মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

আমি যখন কারো সাথে কথা বলি
সমবেদনার বদলে তিরস্কার করে ওরা
অথবা
দেখামাত্র সবাই চোখ ফিরিয়ে নেয়
কেমন যেন দূরে সরে বসে
হাঁটে কথা বলে নিজেদের সাথে।
তারা টের পায় না
আমার ভেতরের হাহাকার।
আমি বলি,
আমার ক্লান্তিতে
আমার ব্যর্থতায়
আমার কাঁধের ভারে
আমার পায়ের থেমে থাকা বাঁধায়
আমার হাসির পিছনের অশ্রুতে
আমি একজন অসহ্য দুঃখে ভরা মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

এখন কেউ কেউ বুঝবে
কেন আমার চোখে এত জল,
কেন আমি আর আশা করি না,
কেন আমি কারো দৃষ্টি কাড়ার চেষ্টা করি না।
কেন এই জীবনে আর ভালো কিছু হবে না,
অজস্র অপমান আর যন্ত্রণার মাঝে আমি
হাঁটি চলি কাজ করি
আমি বলি,
আমার দূর্বল কন্ঠে
আমার চুলের ছায়ায়
আমার হাতের শূন্যতায়
আমার ভাঙা হৃদয়ের তাগিদে
আমি একজন মানুষ।
অসহ্য দুঃখে ভরা মানুষ।
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

লোকেরা ভাবে আমি কেমন করে টিকে আছি এতদিন।
আমি তো ভাগ্যবান না,
না কোনো সহজ জীবনের আদর্শ উদাহরণ।
অথচ আমি যখন তাদের বলতে চাই
কীভাবে প্রতিদিন বেঁচে থাকি যুদ্ধ করে
তারা হাসে, ভাবে; আমি বাড়িয়ে বলছি।
আমি বলি,
এটা আমার বুকের ভেতর রক্তক্ষরণে,
আমার নিঃশ্বাসের ভারে,
আমার রাতের ঘুমহীনতায়,
আমার ভাঙা স্বপ্নের ধ্বংসস্তূপে
একজন কোনরকম বেঁচে যাওয়া
যন্ত্রণায় ভরা মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

আমি যখন একা কোনো রাস্তায় হেঁটে যাই
ছায়ারাও দূরে সরে যায় আমার থেকে।
মানুষের ভিড় আমাকে এড়িয়ে যায়,
যেন আমি নেই,
যেন আমি কেবল যন্ত্রণার আর্তনাদ।
আমি বলি,
এটা আমার চোখের অশ্রুতে
আমার ঠোঁটের নিস্তব্ধতায়
আমার হৃদয়ের ভারী ঢেউয়ে
আমার কপালের অভিশপ্ত দাগে
আমি একজন মানুষ।
অসহ্য যন্ত্রণার মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

অপমানেরা আমার প্রতিদিন নতুনভাবে অপমান করে
শব্দেরা হয়ে ওঠে ধারালো ছুরি।
প্রতি মুহূর্তে নতুন সমস্যা
আকাশ থেকে পড়ে;
যেন আমার মুক্তি নেই এ থেকে।
আমি বলি,
এটা আমার শরীরের ক্লান্তিতে
আমার চোয়ালের শক্ত দাঁতে
আমার ডানা ভাঙা পাখির একাকীত্বে
আমার চিরন্তন হাহাকারে
আমি একজন মানুষ
একজন হতাশ মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

এখন কেউ কেউ বুঝবে
কেন আমার মাথা নিচু!
ঝুঁকে থাকে মাটিতে;
কেন আমি হাসি না
কেন আমি কারো কাছে শান্তি চাই না আর।
যখন কেউ আমাকে দেখে
তারা জানুক
এই জীবনে শান্তি নেই আর, নেই কোনো সমাধান,
শুধুই কষ্ট, অপমান আর নিঃশেষিত স্বপ্ন।
আমি বলি,
এটা আমার হাঁটার নিঃশব্দতা
আমার চুলের জটিল জট
আমার হাতের শূন্য আঙুল
আমার হৃদয়ের অপমানিত আঘাত
আমি একজন মানুষ।
অসহ্য দুঃখে ভরা মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

মানুষেরা ভাবে আমি কেবল মুখ বুজে সহ্য করি,
তারা বোঝে না
আমি প্রতিদিন ভেঙে যাই ভেতরে।
আমি তো সুখের কবিতা নই,
না কোনো আলো ঝলমলে জীবনের কাহিনী।
আমি যখন তাদের বলি,
অসহ্য অপমান আমাকে ছিন্নভিন্ন করে,
তারা তখনো ভাবে আমি বুঝি নাটক করছি।
আমি বলি,
এটা আমার শিরায় জমে থাকা ব্যথায়,
আমার বুকের ধুকপুকে,
আমার নিঃশ্বাসের ক্লান্ত রোদে,
আমার চুপচাপ রাতের আর্তনাদে
আমি একজন মানুষ।
যন্ত্রণার মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

প্রতি মুহূর্তে নতুন সমস্যা
ঝড়ের মতো এসে আছড়ে পড়ে
কোথাও কোনো আশ্রয় নেই,
কেউ শান্তির হাত বাড়ায় না।
আমি বলি,
এটা আমার চোখের নিভে যাওয়া আলো,
আমার ঠোঁটের ফ্যাকাশে নীরবতা,
আমার ভাঙা ডানার অক্ষমতায়,
আমার প্রতিটি দিনের অনন্ত হাহাকারেই
আমি একজন ক্লান্ত মানুষ।
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন।

জীবন আমাকে দেয়নি কোনো সমাধান,
দেয়নি কোনো স্নিগ্ধ বাতাস,
শুধু অগণিত আঘাত, অপমান, যন্ত্রণা।
আমি যখন এগোতে চাই,
পায়ের মাটি সরে যায়;
আমি যখন দাঁড়াতে চাই,
আকাশ ভেঙে পড়ে মাথার ওপরে।
আমি বলি,
এটা আমার পায়ের ক্লান্তিতে,
আমার কপালের ঘামে,
আমার মুঠোর শূন্যতায়,
আমার অসহ্য দুঃখের ভারেই
আমি একজন মানুষ।
অসহনীয় দুঃখের মানুষ,
সবখানে সবার কাছে অবহেলিত একজন। ছবিঃনেট
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৫৪
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×