অনুচ্ছেদ টির এমন নাম বড় দুঃখে পড়ে দিয়েছি। সুন্দরি মেয়েরা যেমন সঙ্গী হিসাবে অসুন্দরি দের সাথে রাখে তেমনি এই অভাগা’র সাথে লেডি কিলার দের বন্ধুত্ব হয়। আর তারা আমার ব্যাবস্থা করবে কি নিজেদের সাফল্যের গল্প করে আমার ঈর্ষার সলতেতে আগুন লাগায়। কত আর সহ্য করা যাই, তাই মাঝে মাঝে একটু ট্রাই করি, আর বিব্রতকর কিছু অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতার ভান্ডারে জমা হয়।
যদিও এটি এমনই একটা বিব্রতকর অভিজ্ঞতার গল্প, তবুও বলে- রাখা ভাল আলোচিত মহিলা টিকে সামান্যতম অশ্রদ্ধা করবার সাহস আমার নেই, এবং প্রার্থণা করি কখনো যেন আমার এমন দূর্মতি না হয়।
শুরুতেই নিজের ঢোল একটু নিজে পেটাব। আমি মোটামুটি আহংকারি টাইপের ছেলে। ফলে পাম্পিং বা হাওয়া দেওয়া আমার দ্বারা হয় না, আর এটা সর্বজনবিদিত যে মেয়েরা হওয়া ছাড়া পটে না, ফলে যা হওয়ার তাই হল- আজ পর্যন্ত ফুল ফোটা তো দূরের কথা প্রেমের গাছের পাতা পর্যন্ত গজাই নি।
আমার কলেজের বিশেষ একটা দুর্নাম আছে, সুন্দরি মেয়ে বড় কম। ঘটনা সত্য, কিন্তু সুন্দরি একেবারেই নেই এমন না। বুঝতেই পারছেন ফলাফল- হাতে গোনা দুই একজন সুন্দরি, আর তাদের প্রচুর শুভার্থী সঙ্গকামী। সিনিয়রদের ভিড়ে জুনিয়রদের নাভিশ্বাষ উঠে যাই। এই হাতে গোনা দুই একজনের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি, এবং তিনি আমার সিনিয়ারও বটেন। দুই একবার তার দিকে তাকালেও জানতাম এ আমার সীমার বাইরে। তাই দুই একবার দীর্ঘশ্বাষ ফেলেই চ্যাপ্টার টা শেষ করেছিলাম।
আমি অফিস শুরু করি শিক্ষানবীশ হিসাবে, তিন বন্ধু একসাথে। ভাইয়া এবং বোনেরা আপনারা বলবেন এটা নিতান্তই কাকতালীয় কিন্তু আমি বলব ভাগ্যের পরিহাস, আরো পরিষ্কার করে বললে নিষ্ঠুরতা- সেই সিনিয়র সুন্দরিই এখানেও আমার সিনিয়র। কিন্তু মজাটা কি জানেন এখানে কোন ডিস্টার্বিং বড় ভাই বা প্রতিযোগি নেই, আর এ জন্যই এটা নিষ্ঠুরতা কেননা আমি মাঠ পরিষ্কার দেখে লাফ দেব এবং দেখব মাঠ পরিষ্কার কিন্তু প্রচুর গর্ত, আমার খেলার আনুপযোগি।
যাই হোক, যার জন্য ঢোল পেটান, আমার এই অহংকারের জন্য, আমার বন্ধুরা তাকে আপা বলে ডাকলেও আমি তাকে নাম ধরে ডাকতে শুরু করলাম। এবং তিনি কিছু মনে করলেন না! অবশ্য দেবতারা পর্যন্ত যখন মেয়েদের মন বোঝেন না, সেখানে আমার মতন নাদান আদমি কত টুকু আর বুঝবে।
আমাদের সখ্যতা গড়ে উঠল! জীবণে এই প্রথম বারের মতো উপলব্ধি করলাম আমি পাম্প না করতে পারলেও যথেষ্ট স্মার্ট(এবং এর চেয়ে দুঃখের ব্যাপার আর কি হতে পারে জীবণের ২১ টা বছর পরে এসে আমি বুঝলাম যে আমিও পারি!)।
তিনি রোজ তার অসাধারণ ঠোঁট দুটি নাড়িয়ে আমার সাথে কথা বলতেন, মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতেন (আর আমি ভাবতাম আমার দ্বারা কিভাবে এটা সম্ভব ?) বিনিময়ে আমি তাকে শুনাতাম চুটকি।
আমাদের ভিতর সখ্যতা আর একটু বাড়লে, আমার একজন অভিজ্ঞ প্রেমিক বন্ধুর শরণাপন্ন হলাম। সে আমাকে বুদ্ধি দিল এই অবস্থাই আমার প্রথম কাজ হল কিছুদিন ডুব মেরে থাকা, ডুব টা শেষ করে তাকে অল্প করে পাম্প করা। জীবণে প্রথমবারের জন্য কাউকে পাম্প করতে রাজি হলাম। ডুব দিয়ে থাকার সময় টা খুব একটা খারাপ কাটবে এমন টা আশা করিনি। কিন্তু, হাই, এযে দুঃসহ!
এক সময় দুঃসহ এই যন্ত্রনার শেষ হল, আবার দেখা হল আমাদের, যেন প্রচন্ড খরার পরে মৃদু শাওন ধারা! কিন্তু সেটা শুধু আমার আনূভুতি, তার প্রতিক্রিয়া আমাকে সত্যিই হতাশ করল। তিনি জিগালেন না আমি কোথায় ছিলাম, কেমন ছিলাম। কেন? কেন? কেন?
কিন্তু আমার ভাগ্য তখন কমলাকান্ত ‘র মত গাঁজা টানছে, তা না হলে কিভাবে এত সব অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে এক সাথে? পরদিন থেকে আবার তার সেই স্নেহময়ী রূপ। সেই মিস্টি কথামালা, সেই গুন গুনানি সব আবার আমার জীবণে ফিরে এল। শুধু কি তাই, তিনি তার দুপুরের খাবার থেকে আমাকে অফার করলেন। আমার চাচা বলতেন মিস্টি কথা খওয়ার সময় বললে তা বেশি ফলপ্রসু হয়, এই থিওরি আনুসারে খাওয়ার সময় আমি পুরোপুরি রবী ঠাকুর হয়ে যেতাম (এবং লক্ষ্য করলাম ধারণাটা আসলেও ফল প্রসবিনী)।কত না মিস্টি কথা তখন হয়েছে, কত মিস্টি নামে তাকে ডেকেছি, কত না রোম্যান্টিক সব উপহারের স্বপ্ন দেখিয়েছি। কিন্ত, তখন যদি বুঝতাম তিনি এসব শুধুই উপভোগ করেছেন, অনুভব করছেন না, কত যন্ত্রনা থেকেই না বেঁচে যেতাম। শুধু কি রবী, তাবত ক্ল্যাসিক প্রেমিকাদের প্রেমিক তখন আমি। লক্ষ্য ছিল তাকে চিরন্তন প্রেমিকাদের স্বপ্ন দেখার প্যাটার্ণ’র সাথে পরিচিত করান।
হয়ত আমি ভুল পদক্ষেপ নিয়েছিলাম কিংবা তিনি সচেতন ভাবেই আমার সেই ভাবনা টাকে এড়িয়ে গেছেন এবং খুব ঝানু কূতনিতিক’র মত তিনি সরাসরি আমাকে প্রতাখ্যান না করে আমার মেধার (আথবা আতলামির) প্রসংসা করতে শুরু করলেন। আমিও বোকার মত দুই দিন আল্লাদিত থাকলাম এবং দুম করে আমার বাস্তব বুদ্ধির উদয় হল- আমি তো নিতান্তই একজন সাদামাটা প্রেমিক, যে শুনতে চায় হাল্কা চটুল প্রসংশা, বুদ্ধির প্রসংশা নয়।
যতটা সহজে আমার বাক্তিত্যে আঘাত লাগে ঠিক ততটা সহজেই আমি আশাহত হই, ব্যর্থতা স্বীকার করে নি(আপনারা হয়ত বলবেন অধৈর্য হলে চলবে কি করে?)। কিন্তু আমি এমনই । আমি ভেবে নিলাম আমার ভাগ্য তার গাঁজা খাওয়া শেষ করেছে এবং আবার আমাকে ঠকানর কথা তার মনে পড়ে গিয়েছে এবং আমিও দ্বিতীয়বার চেষ্টা না করে হার মেনে নিলাম।
আপনারা বলবেন আমি দূর্বল মানুষ বলেই কপালে বিশ্বাষ করি, (হয়ত তাই তবে এই একটা ক্ষেত্রে আমি কপালে বিশ্বাষ করি, কিংবা হয়ত মেয়েদের কাছে সরাসরি প্রত্যাখ্যত হতে ভয় পাই।) না করেই বা করব কি বলুন- প্রায় দেড় মাস পরে একদিন মেইল চেক করতে গিয়ে দেখি একটা hi 5 ইনভাইটেশান, আন্দাজ করুন ত প্রেরক কে? ঠিক ধরেছেন এনিই তিনি। সাথে একটা এ্যটাচমেন্ট , তার ছবি-পরে আছেন শাড়ি। জবাবে আমি আমার আন্তরিক অনুভুতি টিই বল্লাম “শাড়িতে আপনাকে খুব ই হট”। কি হল বলুনতো- আবার যোগাযোগ বন্ধ!
আবারও আনেকদিন পর তিনি একদিন আমাকে ফোন করে বললেন এই মাত্র আমি তাকে যে এসএমএস টা পাঠিয়েছি তা তার ভাল লেগেছে, থ্যংকস বলার জন্য ফোন করেছেন, বিশ্বাস করুন তাকে আমি লাস্ট কবে এসএমএস করেছি আমার মনে নেই, এই মাত্র করার ত প্রশ্নই উঠে না কারণ আমি তখন “নো রিজার্ভেশন” দেখছি (আমি তাকে দোষ দিচ্ছি না, হয়ত আমার ফোন কোম্পানির সার্ভারে এ এসএমএস টা কোন কারনে আটকে ছিল)। কিন্তু আমার এসএমএস টার দায় আংশিক স্বীকার করে আমি যা বললাম তা পড়ে আপনারা ভাববেন ছেলেটা গাধাঁ নাকি? আমি তাকে সত্যি কথাটা বলে ফেল্লাম, বলে ফেল্লাম তাকে আমি সম্প্রতি কোন এসএমএস করিনি, অর্থ টা কি দাড়াল- আমি তাকে ইদানিং আর ভাবিনা। কোন সুন্দরী কি এরকম একটা সত্তি কথা তার এক সময়কার রুপমগ্ধের কাছ থেকে আশা করে, আমি ঠিক জানিনা, তবে আমার কমন সেন্স বলছে উত্তর টা সম্ভবত “না”। তার পরও আমি তাকে এটা বলেছি, কারণ প্রেম সম্ভবত সত্তিই আমার কপালে নেই!!!!!!!
[email protected]

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




