খবর-2: শৃলংকার উত্তরাঞ্চলীয় এলটিটিই মিলিটারি কমান্ডার কর্নেল থেপান গত বুধবার ভানি্ন অঞ্চলের এক তামিল সমাবেশে বক্তৃতাদানকালে বলেন, তামিল জাতির ভবিষ্যত, তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের জয়-পরাজয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে এলটিটিইর সামরিক শক্তির ওপর নির্ভর করছে। শত্রম্নপৰকে (শৃলংকার সরকারি সেনাবাহিনী) প্রতিটি যুদ্ধে পরাজিত করে এগিয়ে যাওয়াই হতে পারে তামিল জাতির নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার স্বপ্নের একমাত্র রৰাকবচ।
_ কেবল এ দুটো খবর থেকে কোনো সিদ্ধানত্দে পৌছানো যৌক্তিক হবে না। কিন্তু আনত্দর্জাতিক বিশেস্নষকরা যখন অনুমান করেন যে শৃলংকা আবারো একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন তার পেছনে কিছু যুক্তি নিশ্চই থাকে।
তামিলরা তাদের বর্শফলা আকৃতির ভূখ-ের সার্বভৌমত্ব জিতে নিতে না পারলেও বাসত্দবিক অর্থে তারা শৃলংকা রাষ্ট্রের মধ্যেই নিজেদের একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি অনেকখানি পরিষ্কার করা যায়। তামিলদের অঘোষিত রাজধানী কিলিনোকচির রাজপথে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব এখন পুরোপুরি এলটিটিই সদস্যদের হাতে ন্যাসত্দ। রাডারগান হাতে প্রহরারত তামিল সৈন্যরা গতিসীমা অতিক্রমকারী যে কোনো যানবাহনকে আটকাচ্ছে এবং জরিমানা করছে। কেউ যদি বারবার গতিসীমা লঙ্ঘন করে তাহলে তাকে সুদৃশ্য ল্যান্ড ক্রুজারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তামিল আদালতে। তাদের ব্যবহৃত গাঢ় নীল টয়োটার বনেটে সাদা হরফে লেখা আছে 'পুলিশ', দড়জায় আছে এলটিটিইর ইনসিগনিয়া। অভিযুক্তকে যে আদালতের বিচারের সম্মুখিন হতে হয়, সেখানকার প্রতিটি কর্মদিবস শুরম্ন হয় তামিল জাতীয় পতাকাকে স্যালুট জাননোর মধ্য দিয়ে।
তামিলদের নিজস্ব জাতীয় সঙ্গীত আছে। আছে জাতীয় ফুল কার্থিগাইপু (গেস্নারিওসা লিলি)। কার্থিগাইপুর বিষাক্ত ফল এলটিটিইর আত্মঘাতী স্কোয়াডের প্রতিটি সদদ্যের নিত্যসঙ্গীভ এই ফলই তাদের সুইসাইড ক্যাপসুল।
ইয়ালি (25) যখন 16 বছরের তরম্নণী, শৃলংকান সৈন্যরা তার বাবাকে হত্যা করে, বোন হয় ধর্ষিতা। ইয়ালি এখন তামিল আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। 'নেতার নির্দেশ পেলে মাতৃভূমির জন্য আমি জীবন দিতে প্রস্তুত'_ ইয়ালির এই প্রত্যয়ী বক্তব্যে একই সঙ্গে ফুটে ওঠে ঘৃণা আর দেশের জন্য ভালোবাসা। 1983 সালে যে সংগ্রামের শুরম্ন তা সফল হলে শৃলংকার 15 শতাংশ ভূমি নিয়ে গঠিত হবে স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র 'ইলম'। 2002 সালের সাময়িক যুদ্ধবিরতী চুক্তি তামিলদের সেই স্বপ্নের সমার্থক ছিল না। আর তাই সে চুক্তি আজো বাসত্দবায়ন করা সম্ভব হয়নি। কর্নেল থেপান কিংবা এস. এলিলানের বক্তব্য থেকে এ ধরাণা হওয়া স্বাভাবিক যে এবছর ফেব্রম্নয়ারিতে ঘোষিত অস্ত্রবিরতীর স্থায়িত্বও যে খু্ব বেশিদিন হবে না। শৃলংকা সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিকদলগুলো যে নরওয়েজিয়ান মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে একমত নয় মার্কসবাদী নেতা ভিমল ভেরাভানসির বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। এ মাসের শুরম্নতেই তিনি অভিযোগ করেছেন যে নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদল এলটিটিইকে আনত্দর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেয়ার জন্যই সময় ৰেপন করে চলেছে। আনত্দর্জাতিক চাপের মুখে এলটিটিই নেতৃবৃন্দ আলোচনার টেবিলে বসলেও তারা তাদের স্বাধীনতার দবি থেকে কখনোই সরে আসেনি। দেশের ভেতরে আরেকটি দেশ প্রতিষ্ঠা করে স্বাধীন ইলম রাষ্ট্র পরিচালনার প্রস্তুতি তারা অনেকখানি এগিয়ে রাখছে। চূড়ানত্দ বিজয়ের জন্য প্রয়োজনে আরো রক্তপাতে জড়াতে তাদের আপত্তি আছে বলে মনে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




