ঝকঝকে শীতের সকাল। লস এঞ্জেলেসে বসে দিনের প্রথম কফিতে চুমুক দিতে দিতে পত্রিকা পড়তে শুরম্ন করেছি। লস এঞ্জেলেস টাইমসের প্রথম পৃষ্ঠার ওপর রেডারের মতো চোখ ঘুরছে আমার। রেডারের লৰ্য একটাই - মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতাদের কাছে সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ ইসু ইরাক সম্পর্কিত খবর।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের সংবাদদাতা জুডিথ মিলারের ইরাকের ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র থাকা না থাকা সম্পর্কিত খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দেশটিতে বৃটিশ-আমেরিকান হামলা শুরম্ন হয়েছিল তিন বছর আগে। কিন্তু আমেরিকার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে প্রকাশিত ওই খবরগুলো যে আদৌ সঠিক ছিল না তা আজ প্রমাণিত। এ কারণেই আমেরিকান প্রেস সেসব মিথ্যাকে চ্যালেঞ্জ করবে - সেটাই স্বাভাবিক। অথচ তা কি আদৌ হচ্ছে?
হাতের পত্রিকাটির প্রধান খবরের শিরোনাম পাঠককে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো - বুদ্ধিমত্তার লড়াইয়ে আমেরিকার চেয়ে এগিয়ে আছে ইরাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠির মদদদাতা। এ শিরোনামই পাঠককে খবরটির ভেতরে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। খবরটি লেখা হয়েছে ওয়াশিংটনে বসে। এর প্রথম প্যারা পড়ে আপনার হয়তো এমন ধারণা হতে পারে, ওয়াশিংটনে বসে এক সংবাদদাতা ইরাক সম্পর্কে কি বা জানাতে পারেন! ওই প্যারার প্রথম লাইনটি এমন, আবু মুসাব জারকাবির কয়েক সহযোগী ইরাকে ও সম্ভাব্য আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী তার এক অনুসারীকে জর্ডানে গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও বিদ্রোহী গোষ্ঠির মদদদাতা ওই ব্যক্তি এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। সূত্র আমেরিকান কতর্ৃপৰ। কতর্ৃপৰের মতে, জারকাবির নেটওয়ার্ক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে আমেরিকানদের চেয়ে উন্নতমানের তৎপরতা চালাচ্ছে।
আসল সত্যটা হলো আমার মতোই অনেক ইরাকি - এককভাবে, এটা আমাকে স্বীকার করে নিতেই হবে - জারকাবি নামের ব্যক্তিটির অসত্দিত্ব নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান। জারকাবি যদি সত্যিই এক বাসত্দব চরিত্র এবং আল কায়েদার সদস্য হন তবে তাকে বিদ্রোহীদের মদদদাতা বলা কতোটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
খবরটির যে বিষয়টি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সেটা হলো আমেরিকান কতর্ৃপৰের উদ্ধৃতি। খবরটি শেষ পর্যনত্দ পড়ার পর আমি লৰ্য করলাম কিভাবে লস এঞ্জেলেস টাইমস এ চমকপ্রদ গল্পটি আবিষ্কার করেছে। আমার ধারণা ছিল আমেরিকার রিপোর্টাররা, বিশেষ করে ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্রের মিথ আর 11 সেপ্টেম্বরের হামলার মাধ্যমে মানবতার বিরম্নদ্ধে আনত্দর্জাতিক অপরাধ ও সাদ্দাম হোসেনের মধ্যকার মিথ পর্যায়ের যোগাযোগ খোজার চেষ্টা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া পর নিজ দেশের প্রশাসনকে বিশ্বাস করেন না। বলতে দ্বিধা নেই, আমি ভুল ভেবেছিলাম। প্রেসের মতো আমেরিকান বার্তা সংস্থা কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়া এখনো প্রশাসনকে উদ্ধৃত করেই খবর প্রকাশ করে যাচ্ছে। প্রশাসন কোনো খবর প্রকাশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তাদের কিছুই করার থাকে না। কারণ তারা তথ্য সংগ্রহের জন্য এখনো প্রশাসনের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




