নর্ডিক দেশ সুইডেন ও নরওয়ে
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: সুইডেন 1.75, নরওয়ে 1.81
মাতৃত্বজনিত কারণে ইউরোপে নর্ডিক দেশগুলোই সবচে বেশি সুবিধা দিয়ে থাকে। বাবা মায়েরা যাতে আরো বেশি সনত্দান নিতে উৎসাহী হয় সেজন্য নরওয়ে বা সুইডেন সরকার যে পরিবার পরিকল্পনা নীতি অনুসরণ করে তা নর্ডিক মডেল নামে খ্যাত।
নতুন সনত্দানের জন্মলগ্নে সুইডেনে প্রত্যেক বাবা-মা 18 মাস পর্যনত্দ সবেতন ছুটি ভোগ করতে পারেন। সনত্দানদের নিয়ে বাবা-মায়েদের টেনশন ঘোচাতে পাবলিক ডে কেয়ার সেন্টারগুলোকে বিপুল পরিমাণ সরকারি ভর্তুকি দেয়া হয়। সনত্দান স্কুলে যাওয়ার বয়সে না পৌছানো পর্যনত্দ কর্মৰেত্রে মায়েদের কর্মঘণ্টার বিধিনিষেধও অনেকখানি শিথিল রাখা হয়।
নরওয়ের মায়েরা 12 মাস পর্যনত্দ মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতে পারেন এর মধ্যে 10 মাস পূর্ণ বেতনসহ এবং বাকি 2 মাস 80% বেতনে। বাবাদের জন্য কমপৰে 4 সপ্তাহ ছুটি কাটানো বাধ্যতামূলক।
আয়ারল্যান্ড
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.99
জনসংখ্যার দিক দিয়ে ইউরোপে সবচে উর্বর অঞ্চল আয়রল্যান্ড। শিশুপালনের জন্যও আয়ারল্যান্ড ইউরোপের সবচে ব্যয়বহুল স্থান। আয়ারল্যান্ডের মায়েরা 26 সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতে পারেন এবং সেই সঙ্গে পেতে পারেন 14 সপ্তাহের প্যারেন্টাল লিভ, তবে কোনোটাই পূর্ণ বেতনে নয়।
বৃটেন
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.74
বর্তমান আইনে ব্রিটিশ মায়েরা 6 মাস পর্যনত্দ সবেতন ছুটি ভোগ করতে পারেন। চাইলে আরো 6 মাস তারা ছুটি ভোগ করতে পারেন, তবে সেটা বিনা বেতনে। নতুন বাবারা সপ্তাহে 102 পাউন্ড বেতনসহ দুসপ্তার ছুটি কাটাতে পারেন। সম্প্রতি অবৈতনিক প্রাথমিক শিৰার সুযোগ বাড়ানোর জন্যও উদ্যোগ নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
জার্মানি
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.37
দীর্ঘদিন পর্যনত্দ ইউরোপের সবচে কম জন্মহারের দেশ ছিল জার্মানি। সনত্দানহীন বাবা-মায়ের সংখ্যার দিক দিয়েও দেশটি সবারচে এগিয়ে আছে। 2005 এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী 30% জার্মান নারীর কোনো সনত্দান নেই।
জার্মান মায়েরা 14 সপ্তাহ পর্যনত্দ মাতৃত্বজনিত ছুটি ভোগ করার সুযোগ পান। সেই সঙ্গে আরো আছে সর্বোচ্চ 36 সপ্তাহ প্যারেন্টাল লিভের সুযোগ। তবে কর্মজীবী নারীরা তাদের বেতনের ব্যপারে কতোটা ছাড় পাবেন সেটা নির্ভর করে কর্তৃপৰের সিদ্ধানত্দের ওপর। জার্মানিতে ডে কেয়ার ব্যবস্থাপনাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
পোল্যান্ড
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.78
পোলিশ পার্লামেন্ট সম্প্রতি জনসংখ্যার নিম্নগামী হার ঠেকাতে বেশ কিছু অভিনব সিদ্ধানত্দ গ্রহণ করেছে। পোলিশ মায়েরা এখন থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মদানের পর 258 ইউরো বিশেষ ভাতা পাবেন। দরিদ্র মায়েদের ৰেত্রে ভাতার অর্থমূল্য দ্বিগুণ করে দেয়া হবে।
ফ্রান্স
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.9
কর্মৰেত্রে নারীদের আরো বেশি সুযোগ দেয়ার জন্য এবং একই সঙ্গে পরিবার কাঠামোকে আরো সংহত করার জন্য ফ্রেঞ্চ সরকার বেশ কিছু পদৰেপ নিয়েছে। ফ্রান্সের চাইল্ড কেয়ার ব্যবস্থাই ইউরোপে সর্বর্োত্তম। প্রত্যেক মা তার প্রথম সনত্দানের জন্মদানের ৰেত্রে 16 সপ্তাহের সবেতন ছুটি ভোগ করতে পরেন। সনত্দান সংখ্যার ভিত্তিতে ছুটির সুযোগও বাড়তে থাকে। তৃতীয় দফায় সনত্দানের জন্ম দিতে গিয়ে একজন কর্মজীবী মা 26 মাস পর্যনত্দ ছুটি কাটতে পারেন।
স্পেন
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.32
স্পেনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ইউরোপে নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়। এখনকার পরিস্থিতি অবশ্য আগের চেয়ে ভালো, কেননা 1970 সালে স্পেনই ছিল ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সবচে কম জন্মহারের দেশ। 2003 সালে স্পেন সরকার জনগণকে সনত্দান নিতে উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষ পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও দেশের মানুষ সনত্দান নেয়ার বিষয়টিকে তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধানত্দের বিষয় বলে ভাবতেই পছন্দ করে। স্পেনের মায়েরা 16 সপ্তাহ সবেতন ছুটি ভোগ করতে পারেন এবং বিনা বেতনে ছুটির ৰেত্রে সময়সীমা 3 বছর পর্যনত্দ বর্ধিত করা যেতে পারে।
ইটালি
নারী জনসংখ্যার অনুপাতে জন্মহার: 1.33
ইটালির জন্যও জনসংখ্যার নিম্নহার একটি বড় সমস্যা। ক্যারিয়ার আর সনত্দানপালনের হ্যাপা এড়াতে ইটালির নারীরা সনত্দান নিতে অনাগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাবা মায়েদের দ্বিতীয় সনত্দান নিতে উদ্বুদ্ধ করতে ইটালি সরকার এককালীন 1 হাজার ইউরো পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছে। গর্ভবাতী মায়েদের যাতে অ্যবরশনের বদলে সনত্দান নিতে আগ্রহী করা যায় সেজন্য বিশেষ ভাতার বিষয়টিও ইটালি সরকার বিবেচনা করে দেখছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




