অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম এই বিষয়টা নিয়ে লিখবো। ব্লগ কতৃপক্ষের প্রতিযোগিতার কারণে দ্বিধান্বিত ছিলাম এটা নিয়ে লিখবো কিনা। সব দ্বিধাকে দূরে ঠেলে অবশেষে লিখলাম। তবে এটা কোনোভাবেই প্রতিযোগিতার অংশ নয়।
সময়টা ২০০২ সাল। আমি তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। লেখাপড়ার প্রতি আমার মনোযোগ কোনো কালেই ছিল না।
২০০২ সালে বাংলাদেশে "অপারেশন ক্লিনহার্ট" নামক অভিযান চালিয়েছিল যৌথ বাহিনী। আর তার নেতৃত্ব দিয়েছিল সেনাবাহিনী।
আমার পিতা ছিলেন তখন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা। ২০১৪ সালে বাবা আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতি থেকে অবসর নেন।সবাই আমার বাবাকে অনেকে সাবধানে থাকতে বলতেন। যদিও আমার বাবার নামে কোনো মামলা ছিল না। আমার বাবা শুধুমাত্র গত বছর আমার কারণে একটা পারিবারিক সহিংসতার মামলা খেয়েছিলেন। এটা আমি কোনদিনও ভুলব না।
তখন যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হওয়া মানেই ছিল হার্ট ফেল করে মারা যায়। অনেকের ক্ষেত্রে এমন ঘটেছে। সেই সময় সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছিল বিএনপির নেতাকর্মীরা।
ঐ সময় একদিন বাবা খবর পেয়েছিলেন আমাদের বাসায় সেনা বাহিনী আসবে। বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন ঐ রাতে বাসায় থাকবেন না। সম্ভবত বাবা তার বোনের বাসায় রাতে ছিলেন।
আমার বড় ভাই তখন ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাবা বড় ভাইকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন যদি কেউ আসে তাহলে যেন বলে বাবা ঢাকায় গিয়েছেন। আমার বড় ভাই তখন থেকে ভীষণ দায়িত্বশীল ছিলেন। ভাইয়া বাবাকে বলল, কোনো চিন্তার প্রয়োজন নেই।
আমি এখন যেমন ভীতু, তখনও তেমন ভীতু ছিলাম। তবে তখন আমার মনে হয়েছিল সেনাবাহিনীকে সবাই ভয় পায়। তাই আমিও একদিন সেনাবাহিনী হব। তাহলে বাসার কাউকে আর লুকিয়ে থাকতে হবে না।
বাবা চলে যাওয়ার পর আমরা অনেকক্ষণ জেগে ছিলাম। তবে সে রাতে কিংবা কখনোই আর কোন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আমাদের বাসায় আসে নি।
২০১৪ সাল থেকে আমি সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ব্যক্তির লেখা বই পড়তে শুরু করি। সামরিক বাহিনীতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ক্যু নিয়ে বেশ কিছু লেখা পড়ি।
আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী সবসময় বলির পাঠা। জেনারেল"রা রাজনীতির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে তথাকথিত "ত্রাণকর্তা" হতে গিয়ে সেনাবাহিনীকে কলঙ্কিত করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:২৭