শরীয়ত সরকার বয়াতি নিয়ে পোস্ট দেওয়ার পর আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী আমাকে নাস্তিক ভাবতে শুরু করেছেন । ম্যাসেন্জারে ইনিয়ে বিনিয়ে অনেকে সে কথাই বলতে চেষ্টা করেছেন । আমার কথা হচ্ছে, আমি নাস্তিক না আস্তিক সেটা একান্তই আমার এবং আমার সৃষ্টিকর্তার ব্যাপার । যেহেতু আমার কবরে আপনি বা আপনার কবরে আমি যাবো না সেহেতু অন্যদের এখানে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই ।
আমি সাদাসিধে জীবন যাপনে অভ্যস্ত । যে টা অন্যায় মনে হয় তার প্রতিবাদ করি , আর সেটা করি অনেকটা নিজেকে স্বচ্ছ রাখার জন্যই । পারিবারিক সূত্রে ধনী না হলেও সততা স্টোরের নামের একটি স্টোরের মালিক হয়েছি বলেই অন্যায়, অন্যায্য কিছু দেখলে সেটার প্রতিবাদ করি । এখানে ধার্মিক, অধার্মিক হওয়ার কিছু নেই ।
জ্ঞানের যুদ্ধটা জ্ঞান দিয়েই করা উত্তম বলে মনে করি । রসুল স: সেটাই সারা জীবনে করে গেছেন । তিনি নিজে আক্রান্ত না হয়ে কোন যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন নাই।
দেশের সকল আলেম-ওলামাগন যদি এক হয়ে শরীয়ত সরকার বয়াতির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তাকে মিথ্যে প্রমাণিত করে দিতেন তা হলেই আর এই ধরনের প্রশ্ন উঠত না । শরীয়ত সরকারও তার গান বাজনা ছেড়ে দিয়ে আলেম ওলামাগনের অনুসারী হয়ে যেতেন । উল্টো তার কাছে থেকে পাওয়া চ্যালেঞ্জের ৫০ লাখ টাকায় আলেমগন ওয়াজ মহফিলের আয়োজন করে মোরগ পোলাও খেতে পারতেন । তাদেরকে ও আর ফাওখোর অপবাদ শুনতে হতো না । আমার মতো অজ্ঞানীরাও এসব নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেতো না । কিন্তু হায় ! তাদের এতো সময় কোথায় ? তারা ব্যস্ত নিজেস্ব কামড়া কামড়িতে ।
ভাইরে, মাইরা লামু, কাইটা লামু এই সবের দিন শেষ হয়ে গেছে মক্কা বিজয়ের পরেই । কিন্তু হায় ! কিছু মুসলিম নামধারী প্রাণী সেটা কিছুতেই বুঝতে পারে না বা বুঝতে চায় না । একটা প্রাণ যদি আপনি সৃষ্টি না করতে পারেন তবে সেটা হনন করার কোন অধিকার আপনার বা আমার নেই । এ জন্যই সেটা কবিরা গুনাহ । হত্যা, কাটাকাটি, মারামারি হচ্ছে মূর্খদের কাজ, জ্ঞানীদের নয় । তাই ধর্মের নামে যারা হুমকি ধমকি দেন তাদের মুসলিম ভাবার কোন কারণ নেই । কারণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কোন দল নেই ।
গান বাজনা হারাম বা নিষিদ্ধ কি না, সে বিষয়ে বেশ কয়েকটি হাদিস রয়েছে । সম্ভবত দু'টো । ঘুরে ফিরে আলোচনায় সেগুলোই আসে । তবে কুরআনের কোথাও পরিষ্কার ভাবে গান বাজনা নিষিদ্ধ কিনা সে সংক্রান্ত কোন আয়াত নেই । আর সেটা প্রকৃত আমেল ওলামগন ই বলতে পারবে । আমি না ।
তবে একটা জিনিষ কি একটু খেয়াল করে দেখবেন ? একটু কান পাতুন তো বাতাসে , দৃষ্টি দিন গাছের পাতার দিকে, নদীর জলের দিকে, মেঘের দিকে, পর্বতের প্রকৃতির দিকে,পাখির কলকাকলির দিকে, তাদের কিচির মিচির সুরের দিকে, কি ? কি শুনতে পারছেন ? কি বুঝতে পারছেন ? সব কিছুই একটা ছন্দে চলছে । একটা রিদমে চলছে । অর্থাৎ সর্বত্র সুর ছন্দ বিরাজমান । যে স্রষ্টা সব কিছু এমন সুরে, ছন্দে তৈরি করেছেন তিনি কেন সুরকে পছন্দ করবেন না ? এমনকি পবিত্র কুরআন ও তো ছন্দে , সুরে তৈরি ? কি পারবেন কোনআনের আয়াতগুলো থেকে সুর ছন্দ বাদ দিতে ? পারলে আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহন করুণ । সারা জীবন তা হলে আপনাদের গোলামী করবো । না পারলে বলবো , ভালা হয়ে যান , হারাম খাওয়া বাদ দিতে সত ভাবে জীবন যাপন করুন । সমাজে শান্তি বজায় রাখুন ।
কুরআনে আল্লাহ বলেছেন,প্রকৃতির সব কিছুর মধ্যে রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য নির্দেশন । মুর্খেদের জন্য নয় । যে স্রষ্টা সব কিছু ছন্দে,রিদমে তৈরি করেছেন তিনি কেন গান বাজনা নিষিদ্ধ করবেন ? তিনি নিষিদ্ধ করেছেন সকল প্রকার অশ্লীলতাকে যা শালীন এবং মানবের জন্,য পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় তা তিনি নিষিদ্ধ করেন নাই । এটাই সরল ইকুয়েশন । ভাবুন, ইসলাম কুরআন মানুষকে ভাবতে বলেছে । মূর্খের মতো তর্কে লিপ্ত হয়ে, কাটাকাটি করতে বলে নাই । এজন্যই কুরআনে বলা হয়েছে,
"শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর তোমরা সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করো না ।"
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩১