ভাস্কর্য জায়েজ নাকি নিষিদ্ধ সে তুলনা করতে গিয়ে অনেককে দেখছি নামকা ওয়াস্তে মুসলিম দেশগুলোর ক্ষমতা দখল করে থাকা অবৈধ সরকার প্রধানদের বিভিন্ন ভাস্কর্যের ছবি দিয়ে জায়েজ সার্টিফিকেট লিখে ফেলছেন। যা হাস্যকর। ভেবেছিলাম এই ইস্যুতে লিখবো না। কিন্তু লিখতে বাধ্য হলাম।
প্রশ্ন হচ্ছে, যে দেশগুলোর ভাস্কর্যের ছবি পোস্ট করে ভাস্কর্যের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালনা হচ্ছে সেই রাষ্ট্রগুলো কতোটুকু কুরআন, সুন্না অনুযায়ী চলছে?
সৌদি আরবের নাম শুনলেই যারা চাটতে শুরু করেন, তাদের মতোই সৌদির বর্তমান ঈমানের অবস্থা। সৌদি একটি ইহুদি, নাসারা পরিবেষ্টিত রাষ্ট্র। ইসলামে রাজতন্ত্রের কোন জায়গা না থাকলেও সৌদিতে তা চলছে যুগের পর যুগ। ধর্ষণ সৌদিতে খুব স্বাভাবিক ঘটনা। হেরেমে হেরেমে যৌনকর্ম, নারী নির্যাতন নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে সৌদিতে যাওয়া গৃহকর্মীদের লাশের মিছিল এখনো থামেনি। সৌদিতে লিভ টুগেদারও জায়েজ করা হলো বলে। ইতিমধ্যে তারা ঘোষণা দিয়েছে, প্রেমিক প্রেমিকা একসাথে থাকতে পারবে। তাহলে তো বাংলাদেশে ও এই ঘোষণা দেওয়া উচিত। তাই নয় কি ? যেহেতু সৌদি মুসলিম রাস্ট্র হয়ে আকাম কুকাম করছে তাই আমরাও করতে পারি । সেটা করলে সেটা হবে অনুকরনিয় ইসলাম ।প্রকৃত ইসলাম নয় ।
যারা ব্যক্তি স্বার্থে ভাস্কর্য জায়েজ ফতুয়া ও তুলনা দিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের বলবো, নিজের স্বল্প মস্তিষ্কের জ্ঞান দিয়ে ইসলামকে মাপতে যাবেন না। সেই জ্ঞান আপনাদের নেই। ভাস্কর্য জায়েজ কি না জায়েজ তা কুরআন, হাদিসের আলোকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন।
ভাস্কর্য একটি শিল্প। সৌন্দর্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তা সৃষ্টিতে নিষেধ নেই। কিন্তু পূজা অর্চনার সুযোগ সৃষ্টি হয় এমন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে তা প্রদর্শন ইসলামে নিষিদ্ধ বলেই জানি। দেশে ঐতিহ্য কৃষ্টির দোহাই দিয়ে ভাস্কর্ষ তৈরি করতে চাই্লে আগে নিশ্চিত করুণ , নিশ্চিত করুণ অতি আবেগের বশিভূত হয়ে কেউ সেই ভাস্কর্যের পুজা শুরু করবে না । তাতে সামান্য পকেট গরম হলেও যার ভাস্কর্য তার আত্মার কষ্ট হবে । এ কারণেই চাটার দলকে দূরে রাখতে হবে ।
একবার ভাবুন, যারা ভাস্কর্য তৈরিতে হাওয়া গরম করছে তাদের মূল উদ্দেশ্য কি? চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য তৈরিতে মোট ব্যয় হয়েছে, ১২ লাখ টাকা অথচ সেই ভাস্কর্যের পেছনে তুলে নেওয়া হয়েছে কোটি টাকা। যিনি বানিয়েছেন তাকে সামান্য টাকা দিয়ে বিদায় করা হয়েছে। একেই বলে লুটের পাটের হরি উৎসব ।
সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর যতো প্রতিকৃতি তৈরি করা হচ্ছে,তার সবগুলোতে নির্মাতা শিল্পীদের ঠকিয়ে ব্যবসা করছে মধ্যস্বত্ব ভোগী একটা শ্রেণী। এদের শরীর টুকরো টুকরো করলেও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা তো দূরের কথা একফোঁটা ভক্তি পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। অথচ এদের উদ্দেশ্যই চরিতার্থ করার জন্য উঠে পরে লেগেছে আর একটা একটা শ্রেণী। প্রকৃত খেলা হচ্ছে টাকার । জিকে শামিমের ইতিহাস পড়েছেন না , টেন্ডার বাজিতে সরকারী আমলা ও দলের ওনেক উপর লেভেল পর্যণ্ত ছিলো তার লেনদেনের খেলা । প্রকৃত পক্ষে এদের কোন দল নেই। যখন যে দল ক্ষমতায় এরা ও তাদের।
তবে হ্যাঁ, ধর্মীয় উদ্দেশ্যে বানানো মূর্তি তৈরিতে সেই ধর্মের লোকদেরকে বাধা দেওয়া যাবে না। তারা,তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মূর্তি তৈরি করতে পারবে।
কামাল আতাতুর্কের মতো মুসলিমদের জন্য কোন কিছুই নিষিদ্ধ নয়। তারা যা ইচ্ছা করতে পারেন। কারণ আল্লাহ তালা তাদের একটা নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাড় দিয়েছেন। কামাল আতাতুর্কের নাম তো শুনেছেন, নিশ্চয়? তার শেষ পরিণতির অধ্যায়টাও পড়ুন। যার মৃত্যু হয়েছিল জঘন্য শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগে ভুগে। যার কাছে নার্সরা পর্যন্ত যেতে পারতেন না শারীরিক দুর্গন্ধের কারণে।
তাই শারীরিক গন্ধ ছড়ায় এখন কর্ম থেকে দূরে থাকাই মঙ্গলের।
সাখাওয়াত বাবন
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৪