রাত আনুমানিক ৩ টা । বিশ্ব প্রকৃতি ঘুমিয়ে কাদাকাদা হয়ে আছে ।
নিউ ইয়র্ক সিটি'র জ্যাকসন হাইটসের ৫০ তলা ডিল্ডিং এর ৩০ তলার বারান্দার বসে হাডসন নদীর পানি নড়াচড়া দেখছিলেন টমাস থেমসন । মেঘ মুক্ত নীল আকাশ । গন্তব্য বিহীন ভেসে চলা মেঘ রাজি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে । মাঝ রাত্রির নির্মল হাওয়া দেহ মনে দোল দিয়ে যাচ্ছে । দূর থেকে বহু দূরে জেগে থাকা রাত্রির তারাগুলো বড্ড বেশি জীবন্ত জ্বলমলে মনে হচ্ছিল । হঠাৎ উত্তর পূর্ব কোণে কালো মেঘের চাইয়ের আড়ালে একটা তারা যেন নড়ে চড়ে উঠলো । থমসন ভ্রু কুচকে সেদিকে তাকালেন । আজব তো;তারাটা যেন শুধু নড়ছেই না, জ্বলমলে তারাটা একটু একটু করে বড় হতে হতে তার দিকেই এগিয়ে আসছে । আঙুলের ফাকে থাকা জ্বলন্ত সিগারেটের অবশিষ্ট অংশে এসট্রেতে গুজে রেখে অবাক হয়ে বিস্মৃত নয়নে সেদিকে তাকিয়ে রইলেন টমাস থেমসন।
এ যেন অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য । সত্যিই তারাটি নিচে নেমে আসছে । নিজের চোখ'কে বিশ্বাস হচ্ছে না । চোখের পলকে তারাটি বড় হতে হতে এক সময় খুব কাছে চলে এলো । এবার থমসন বুঝতে পারলেন । না , এটি তারা নয় । গোল থালার মতো দেখতে বস্তুটির কিনার ঘেঁষে লাল রং এর অনেকগুলো বাতি একটু পর পর জ্বলছে, নিভছে । সীমাহীন বিস্ময় নিয়ে থমসন ভাবতে লাগলেন, কি হতে পারে এটি। "সসার?" হুট করে নিজের মুখ থেকে বের হয়ে আসা অস্ফুট শব্দটি যেন নিজেকেই চমকে দিলো। হায় ঈশ্বর! এ যে সত্যি সত্যি সসার।
পরের দিন আমেরিকা সহ বিশ্বের অনেক দেশের জাতীয় দৈনিকে ছাপা হলো সংবাদটি । নিউইয়র্কের আকাশে দেখা গেছে ,ফ্লাইং সসার।
না কোন সাইন্স ফিকশন লিখছি না । ঘটনাটি সত্যিই ঘটেছে । নিউ ইয়র্কের আকাশে সত্যিই দেখা গেছে "ফ্লাইং সসার। " তাও একবার, দু বার নয় অসংখ্যবার । কিছুদিন পর পরই দেখা দেয় । ভাতের থালার মতো গোল গোল সসার । রাত্রির আকাশ জুড়ে চক্কর খায়। চোর পুলিশ খেলে ৷ তারপর হারিয়ে যায়।
মানুষের প্রযুক্তি যতোই শক্তি শালী হোক না কেন দেখা দেওয়া এসব সসারের টিকিটিরও খোজ পায় না বিশ্বের একালের পরম পরাক্রমশালী দেশটির প্রযুক্তিবিদেরা । বিশ্বাস হয় এ কথা ?
"সসার"যার বৈজ্ঞানিক নাম , "ইউএফও বা আন আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট।" নামকরণই করা হয়েছে,এমন ভাবে যাতে কোনদিন খুঁজে না পাওয়া যায়।
এবার আসি আসল ঘটনায় কিন্তু তার আগে যে ব্যক্তির "এলিয়েন তত্ব" নিয়ে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা সবচেয়ে বেশি জোড় দিচ্ছে সে বিষয়ে দুটো কথা বলা দরকার । হ্যাঁ , ঠিক ই ধরেছেন তিনি হচ্ছেন, সাম্প্রতিক বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ব্যক্তি স্টিফেন হকিং । যিনি কিনা পঙ্গু হবার পরেও হুইল চেয়ারে বসে বসে কাপিয়ে দিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীদের । প্রমাণ করে দিয়েছেন, একমাত্র তিনিই কাবিল অন্যরা সবাই মফিজ।
কিন্তু আমি নিজেকে হকিং সাহেবের চাইতেও অনেক বড় কুতুব বা কাবিল বলে মনে করি । কিন্তু দু:খের বিষয়, কপালের ফেরে একটা হু্ইল চেয়ার নেই বলে বিখ্যাত হতে পারি নাই ।
"মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও এর সম্প্রসারণ" সম্পর্কিত স্টিফেন হকিং এর উক্তি গ্রহণযোগ্য নয় । কেননা তার উক্তির পুরোটাই অনুমান নির্ভর । যা সাইন্স ফিকশন রাইটারদের যুক্তির চেয়েও হালকা ..... চলুন এলিয়েন খুঁজে বেড়াই । স্টিফেন হকিং সাহেব অন্য একটি লেখায় লিখেছেন, "এলিয়েন আছে, এবং তারা আমাদের দিকে দৃষ্টি রাখছে । এক সময় পৃথিবী দখল করে নিতে পারে । আমার কথা হচ্ছে, এমনটা কখনোই হবে না । তাই ভয় পাবার কিছু নেই । মানুষের চেয়ে বড় এলিয়েন আল্লাহ্ তালা সৃষ্টি করেন নাই । আমরা যখন অন্য গ্রহে যাবো তখন আমরাই এলিয়েন । এলিয়েন অর্থ হচ্ছে,আগন্তুক।
স্টিফেন হকিং কোরআন,বাইবেল পড়েছেন কিনা আমার জানা নেই , কারণ কোরআন ও বাইবেলে স্পষ্ট ভাবে এলিয়েনের কথা বলা হয়েছে । সুরা জিনে , আল্লাহ বলেছেন, "আমি মানব এবং জিন তৈরি করেছি আমার ইবাদতের জন্য।" জিন জাতি কোনদিন পৃথিবী দখল করতে আসবে না । কারণ সেটা তাদের শারীরিক গঠনের সাথে যায় না অথবা পৃথিবী দখল করার যোগ্যতা তাদের নেই ।
কিন্তু নাসা কুরআন কিংবা বাইবেলের কোনটাই গ্রহণ না করে এলিয়েন তথ্য জিইয়ে রেখে এলিয়েনের পেছনে হাজার হাজার কোটি মিলিয়ন, বিলিয়ন ডলার খরচ করে চলেছে । কারণ তাতেই আমেরিকার অনেক লাভ । এসব করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখা যায় । এলিয়েন খোজার নামে অনেক গোপন গোপন গবেষণায় জন্য অর্থ খুব সহজেই ব্যয় করা যায় ।
এই যে, মাঝে মাঝে বিভিন্ন আকাশে সসার দেখা যায় , এটা তাদের একটা কুট কৌশল । যে জিনিসের পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে , সে জিনিস মাঝে মাঝে দেখা না গেলে , ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যায় যে। তাই মাঝে মাঝে এলিয়েন বাহন সসার উঁকিঝুঁকি মেরে তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে যায়। ফলে মানুষের দৃষ্টি সহজেই অন্যদিকে ফিরিয়ে নিয়ে নিজেদের গোপন গবেষণাগুলো নির্বিঘ্নে চালিয়ে নেওয়া যায় ।
এলিয়েন আছে, এলিয়েন নেই । হাজার কোটি ডলার অপচয় হচ্ছে এলিয়েন খোজার নামে । অথচ এই টাকা বিশ্বের মানুষের জন্য ব্যয় করা হলে , বিশ্ব থেকে ক্ষুধা,দরিদ্রতা পালিয়ে গিয়ে যাদু ঘরে আশ্রয় নিতো ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:১২