somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি দাওয়াত ও কিছু ঘটনা (পর্ব - ৪)

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৩য় পর্বের লিংক: Click This Link
.
গতস্য শোচনা নাস্তি- যা চলে গেছে, তা চলে গেছে, তা নিয়ে অনুশোচনা করে লাভ নেই। রাস্তার মাঝখানেই দাঁড়িয়ে গেলাম। ফিরে দেখি আমাকে বহন করা বাসটা আমাকে ছাড়াই চলে যাচ্ছে। প্রায় নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে গলা ছেড়ে বাসটাকে ডাকলাম। কিছুদূর দৌঁড়েও গেলাম। কিন্তু বাসটা থামল না। অথচ বাসে ওঠার সাথে সাথে ভাড়া মিটানোর জন্য হেলপারটা জোরাজুরি করেছে। পরে দিব বলাতে দুর্ব্যবহারও করেছিল। একজন মানুষের বিপদে দু’দণ্ড দাঁড়ানোর মত মানবিকতা দেখাতে পারল না!
.
বাসায় ফেরার তাড়া অনুভব করলাম। উবার ডাকব ভাবছি। ওহ, মোবাইল তো নেই। একটা সিএনজি হলে বাসায় তাড়াতাড়ি ফেরা যেত, দেরী দেখলে শাহানা দুশ্চিন্তা করবে। এক মুহূর্ত চিন্তা করে সিএনজির চিন্তা বাদ দিলাম। দ্বিতীয় বারের মতো ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে বাসায় আর নাও ফেরা হতে পারে। ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে হবে। মনে হলো, জায়গাটা ফার্মগেট। রাস্তার মাঝখান থেকে সরে এসে একপাশে দাঁড়ালাম। যত দেরীই হোক, বাসই নিরাপদ। একটা বাস এলো। মিরপুর যাবে। তাতে ওঠে পড়লাম। বেশ ভীড়। দাঁড়িয়ে আছি হাতল ধরে। শাহানার কথা মনে পড়ছে। ও যদি ফোন করে, মোবাইলটা বন্ধ পাবে। আমাকে পাবে না। আগার গাঁওয়ের কাছে এসে প্রচণ্ড জ্যামে আটকে গেলাম। আধা ঘন্টা একই জায়গায় বাস দাঁড়িয়ে। কেউ কেউ বাস থেকে নেমে হেঁটে রওনা দিল। আমি একটা সিট পেয়ে গেলাম। মনটা খুব খারাপ। বাসায় ফিরতে দেরী হবে মনে হচ্ছে। আবার আমার ছেলেও বাসায় নেই। ওদের ইকোনমিকস ডিপার্টমেন্টের বন্ধু, বড় ভাইদের সাথে কক্সবাজার গিয়েছে। ফিরবে রবিবার। ছেলে বাসায় থাকলে ওর মাকে সান্ত্বনা দিয়ে শান্ত রাখতে পারত।
.
শ্যাওড়া পাড়া, কাজী পাড়াতেও জ্যাম। ইচ্ছে করছে, দৌঁড়ে বাসায় চলে যাই। শাহানাকে অভয় দিয়ে বলি, আমার কিছু হয়নি, শুধু মোবাইলটা ছিনতাই হয়ে গেছে। একসময় বাসটা মিরপুর দশ নম্বর পেরিয়ে যায়। আমি ভাবি, আর জ্যামে পড়তে হবে না। পূরবীতে নেমে সোজা বাসায়। না, বিধি বাম। পপুলারের কাছে গিয়ে বাস ঘুরিয়ে দিল। মেট্রোরেলের কাজ চলছে। মনটা বিষিয়ে গেল। গভীর রাতেও শান্তি নেই। বায়ে একটা গলিতে ঢুকল বাসটা। আমি তীক্ষ্ণ চোখে খেয়াল রাখছি কোন পথে বাসটা যাচ্ছে। বাসার কাছাকাছি নামতে হবে। চলন্তিকার মোড়ে নেমে গেলাম। রাস্তা পার হয়ে মিল্ক ভিটা রোডে ওঠলাম। কয়েকটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে, সামনের গার্মেন্টসে দারোয়ান ও কয়েকটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। একটা রিকশা দেখতে পেলাম। সে যাবে না। হাঁটা ধরলাম। চারিদিকে ভাল করে দেখে নিচ্ছি। নিরাপদে বাসায় ফিরতে হবে।
.
বাসার সিঁড়ি দিয়ে ওঠছি। ওপরে তিন তলায় শাহানার উৎকণ্ঠিত গলা শুনতে পাচ্ছি। দোতালা পেরিয়ে ওকে দেখতে পেলাম, সাথে পাশের বাসার ভাই-ভাবী। ও সরাসরি জিজ্ঞেস করল, তোমার মোবাইল কী ছিনতাই হয়েছে? আমি শান্ত কণ্ঠে বললাম, হ্যাঁ। প্রতিবেশী ভাই জিজ্ঞেস করলেন, ভাই আপনার কিছু হয়নি তো?
-না, আমার সংক্ষিপ্ত উত্তর। কথা বলতে ইচ্ছে করছে না মোটেই।
প্রতিবেশী ভাই শাহানাকে বলল, ”ভাবী, ভাইকে ভিতরে নিয়ে যান।“
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে ভাবছি, আমার মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনাটা শাহানা কী ভাবে জানল?
.
চলবে...
মো. শামছুল ইসলাম
১৬ এপ্রিল ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×