আমি নিজেকে একজন উন্নয়ন কর্মী হিসেবে গড়ে তুলেছি। এ আমার গর্ব, আমার অহংকার। শুধু উন্নয়ন কর্মীই নয়, আমি একজন প্রতিষ্ঠাতাও। এই পরিচয় দিতে আমি একটুও লজ্জ্বা পাই না। কারণ এই কাজের মাধ্যমে আমি বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটু হলেও অবদান রেখেছি। যদিও জানি আমাকে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ আমাদের মতো উন্নয়ন কর্মীকে ঘৃণা করে। তারা আমাদেরকে চোর বলে। আমার দুটো মেয়ে। তারা এখন জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। তারা দুজনই প্রিপারেটরী গার্লস স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করেছে। বড়জন প্রিপারেটরী গার্লস হাইস্কুল ও কলেজ থেকে এবং ছোটটি বীরশ্রেষ্ঠ নুরমোহাম্মদ রাইফেলস স্কুল ও কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করেছে। স্কুলে পড়ার সময় যখন অন্যদের মতো তাদেরকে মাতা পিতার পেশা সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে তারা পরিচয় দিয়েছে। সাথে সাথে শিক্ষকদের মুখে এক ধরণের অবজ্ঞার চিহ্ন ফুটে উঠেছে। এমনকি কোন কোন শিক্ষক সবার সামনেই তাদের মাতাপিতাকে অসত্ বলে অপমান করেছে। আমার মেয়েরা সেখানে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছে। নিজের কাছে নিজে ছোট হয়েছে। আমিও এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে থাকি। কিন্তু কেন?
বাংলাদেশে উন্নয়ন কর্মীরা অসত্, পুলিশে যারা চাকরী করেন তারা অসত্, রাজনীতি যারা করেন তারাও অসত্, ব্যবসায়ীরা শ্রমিকের টাকা চুরি করে ধনী হন। তাহলে কারা ভালো? কোন পেশার মানুষ আসলে শ্রদ্ধার পাত্র? আমরা কাকে শ্রদ্ধা করবো? নাকি কাউকে শ্রদ্ধা করতে পারবো না। শুধু ঘৃণা করবো। একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখবো? আমার কোন কোন বন্ধু আমাকে খুবই অসন্মান করে কথা বলেছেন। অথচ তারা জানতে চাননি নিজেকে উন্নয়ন কর্মী হিসাবে তৈরী করতে আমার কত কষ্ট হয়েছে, কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে, কত অসন্মান সহ্য করতে হয়েছে। নববর্ষের এই দিনে আজ আমার বন্ধুদের কাছে আমার আন্তরিক একটা প্রশ্ন তারা কি সকলকে এভাবে অশ্রদ্ধার চোখে দেখবে? এমন কি নিজেকেও অশ্রদ্ধা করবে?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৮:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





