somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শামসুন হাসনাত
নারীর শৃঙ্খল মুক্তিnআমি নারীর শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছি। একজন নারী স্বাভাবিক ভাবে যা ভাবে আমি কখনও সে ভাবে কিছু ভাবিনি। সেই কিশোরী বয়সে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আহবানে ১৯৬৯ সালে গণ অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছি। মাত্র ১৪

আলোচনা সমালোচনা

২৩ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি সাধারণতঃ পড়তে খুব ভালোবাসি। উপন্যাস, গল্প, রহস্য উপন্যাস, বিভিন্ন আলোচনা এগুলো বেশী পড়ি। সুলতানা রুবি, একজন উদীয়মান লেখক। তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন এবং নিজের টাকা দিয়ে প্রকাশ করেছেন। তিনি আমার বই পড়ার বিষয়টি জানেন। তাই একদিন তার লেখা সমস্ত বই আমার কাছে নিয়ে এলেন। আমাকে পড়তে দিলেন। আমি ভেবেছি যে তিনি আমাকে সৌজন্য কপি দিয়েছেন। কিন্তু কথা প্রসঙ্গে বললেন যে তার লেখা গল্পের বই সাধারণতঃ কেউ কেনে না। তিনি বিতরণ করেন, কেউ যদি টাকা দেন তাহলে খুশী হয়ে নেন। আমার একটু খারাপ লাগলো। আসলে বইগুলির দাম দেয়ার ক্ষমতা আমার ছিল না। তাই আমি কিছু বলতে পারলাম না। তবে বললাম যদি বই গুলি পড়ে আমার ভালো লাগে তাহলে এর সমালোচনা লিখে দেব। উনি একটু খুশি হলেন। আমি বই গুলি পড়তে বসলাম। আমার ভালো লাগলো। পড়ার নেশায় পেয়ে বসলো। আমার অন্য সকল কাজ বাদ দিয়ে পড়তে থাকলাম। বইগুলি পড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি পড়ে গেলাম। অর্থাৎ আমার মনযোগ ধরে রাখলো। আমার ভালো লাগলো। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমি এই বইগুলি সম্পর্কে লিখবো। আজ আমার সেই কথা রাখতে বসেছি।আজকে আমি যে বইটি নিয়ে লিখছি তার নাম হলোঃ "জমিনে ভালোবাসা হিমালয়ে ভালোবাসা"। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। প্রকাশ করেছেন রামশংকর দেবনাথ-এর বিভাস নামক প্রতিষ্ঠান। প্রকাশকাল ২১শে ফেব্রুয়ারী ২০১০। একুশে বইমেলা উপলক্ষ্য প্রকাশিত।
বইটি একটি প্রেমের গল্প। একটি মাতৃ হারা কিশোরী মেয়ে ছবি তার বাবা এবং ফুপুর কাছে বড় হচ্ছে। বাবা সেনাবাহিনিতে মেডিকেল এ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরী করতেন। ছবির মা মারা যাওয়ার পর চাকরী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে গ্রামে এসে একটি ওষুধ ও মুদিপণ্যের দোকান দিয়েছেন। পাশাপাশী নিজের ডাক্তারী চালিয়ে যাচ্ছেন। আর নায়ক হলো মিঠু। তার বাবা মারা গেছে। সে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ছবি মিঠুকে ভালবাসে। তাকে বিয়ে করতে চায়। মিঠুর মা ও ছবিকে ভালবাসে এবং বউ করতে চায়। কিন্তু মিঠু ইউনিভার্সিটির একটি মেয়ের ফাঁদে পা দেয় এবং বিয়ে করে। ছবি মিঠুর মা সকলের মনের আশা ভেঙ্গে যায়। বইটিতে আরও কয়েকটি চরিত্র আছে। যেমনঃ মিঠুর মা, পাখি ছবির বান্ধবী লেখাপড়া করে, পাখির মা একজন গৃহিনী, পাখির বাবা কেরামত একজন সম্পন্ন গৃহস্থ, তবে তার মানসিকতা নেতিবাচক। গ্রামে কিছু মানুষ থাকে যারা সবসময় প্রতিবেশীর সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করে, নিজের প্রাধান্য বিস্তার করে। তবে তার স্বভাব গ্রামের সবাই জানে তাই কেউ তার কথায় বিভ্রান্ত হয় না, সাবধান থাকে। গল্পের এই জায়গাটি আমার ভালো লাগে। কারণ ইদানিংকার গল্পে নেতিবাচক চরিত্রগুলি এত শক্তিশালী থাকে এবং প্রাধান্য বিস্তার করে যে তার সামনে ইতিবাচক শক্তিগুলি খুবই দুর্বল থাকে। তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। মানুষ খুব কষ্ট পায়। কাল্পনিক জগৎটাকে মানুষ একটি আদর্শ অবস্থান হিসাবে বিবেচনা করে। একজন মানুষ একটি সমাজ পরিচালিত হয় বুদ্ধিজীবি মানুষের কাল্পনিক জগতের উপর ভিত্তি করে। আমরা যদি রুপকথার দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাই যে সে সময়টা যন্ত্রনির্ভর ছিলনা। তখন মানুষ চলাচলের জন্য পা, গরুগাড়ী, নৌকা ব্যবহার করতো। আকাশে উড়তে পারতো না। মানুষ উড়তে চাইতো। তাই লেখক তার গল্পে উড়ন ঝুঁড়ি, উড়ন্ত কার্পেট, পাখা ওয়ালা বিশাল বিশাল পাখী ইত্যাদির কথা গল্পে লিখতো। বৈজ্ঞানিকরা কবি বা লেখকের সেই গল্পকে উপজীব্য করেই আবিস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যেত। এভাবেই আমরা আজ উড়োজাহাজ রকেট পেয়েছে। নজরুলের লেখা সেই বিখ্যাত কবিতার পংতিটি হলো "গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ঘুরছে মানুষ কেমন করে" আজ সেই পংতিটি সত্যে পরিণত হয়েছে। আমরা জানি সমাজের মনস্তত্ব তৈরীতে লেখকের লেখনী একটি শক্তিশালী এবং গুরুত্ব পুর্ণ ভুমিকা রাখে। সুলতানা রুবি কেরামতের চরিত্রটিতে বুঝিয়েছেন যে, সমাজে খারাপ চিন্তার মানুষ থাকতেই পারে কিন্তু তাকে আমরা গুরুত্ব না দিলে পারি, তার কথায় বিভ্রান্ত না হতে পারি,বরং সাবধান থেকে তাকে আমরা শোধরাতে পারি, একটা সুন্দর মনের মানুষ হিসাবে তৈরী করতে পারি। এই উপন্যাসে তিনি আমাদের নারীর চিরন্তন যে সমস্যা, দ্বন্দ্ব, নারীর প্রতি শোষণ সবই তুলে এনেছেন দক্ষতার সাথে। এমনকি একজন নারী হয়ে অন্য নারীকে কিভাবে সমস্যায় ফেলে দেয় তাও তুলে এনেছেন। ভগ্নিপতি কিভাবে ছোট শ্যালিকাকে যৌন নির্যাতন করে সে বিষয়টিও এনেছেন। তার শব্দচয়ন, বাক্যগঠন সবই বেশসাবলীল ও শক্তিশালী। কথপোকথনে তিনি আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেছেন। তবে কিছু বানান ভুল আছে। তার লেখনীকে আরও শাণিত করতে হবে। প্রচুর বই পড়তে হবে। গল্পের উপজীব্য নির্বাচনে আরও সতর্ক হতে হবে। আমি আশা করবো তিনি তাঁর প্রচেষ্টা অব্যহত রাখবেন। আর পাঠকেরা তার বইগুলি কিনে পড়বেন। তাকে উৎাহিত করবেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×