প্রতিদিন খবরের কাগজে সড়ক দুর্ঘটনার খবর একটি নিয়মিত আয়োজন। মহামারি কিম্বা মড়কের মতই মরছে নীরিহ মানুষ। আহতরা চিকিতসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন, কেউ কেউ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন জীবনের মত।
বিগত জুলাই -আগষ্ট মাসের একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিদিনের সড়ক দুর্ঘটনার খবর অনুযায়ী এই দুই মাসে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৪৪৫ জন, এর মধ্যে সরকারের দু জন সচিব (জনাব রাজিয়া বেগম এবং সিদ্দিকুর রহমান)ও রয়েছেন। এদের মধ্যে ২৪৫ জন মারা গেছেন গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ কিম্বা গাড়ি উলটে যাওয়া জাতীয় দুর্ঘটনায়, ৬০জন মারা গেছেন মোটর সাইকেল আরোহী- বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মটর সাইকেল কে চাপা দিয়েছে কোন বড় গাড়ী। বাকি ১৫৫ জন পথচারী কিম্বা মহাসড়কে ছোট যানে (সাইকেল, রিক্সা, নসিমন ইত্যাদি)চলাচলকারী অভাগা জনগণ। বাস-ট্রাক-মাইক্রোবাস-সিএনজি-নসিমন –এর পারস্পারিক সংঘর্ষ তো হয়ই, দুটি মটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের খবরো পাওয়া যায়, মটর সাইকেলের নীচের চাপা পড়েও মারা যায় পথচারী। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ১৪৫৪ জন।এই দুই মাসে মাত্র দুই দিনের নিউজ পেপারে কোন সড়ক দুর্ঘটনার খবর আসে নি, বাকী প্রতিটা দিন দুর্ঘটনার খবর ছিল।
এদেশে মৃত্যু কোন বড় ব্যাপার নয়। নিমতলীর মত বড় ঘটনার পরও পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যালের গুদাম সরানো যায় নি। আর সড়ক দুর্ঘটনা আর এই মৃত্যু নিয়ে আমাদের কর্তা ব্যাক্তিদের আদৌ কোন ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। বড় দুর্ঘটনা ছাড়া খবরের কাগজের গুরুত্বপুর্ণ জায়গাও পায় না এই মৃত্যুর খবর গুলো। আমরাও প্রতিদিনের কাজের ভীড়ে এবং সরকার ও বিরোধী দলীয় নেতা-নেত্রীদের বয়ান পড়তে পড়তে এসব খবর পড়ার সময় পাইনা।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কি করনীয়ঃ
সরকারের উচিত এটিকে একটি গুরুত্বর সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করা।
রাস্তায় গতি নিয়ন্ত্রনের জন্যে হাইওয়ে পুলিশ কে আরো সক্রিয় ও কার্যকর করা
মহাসড়কের ধারে ধীর গতি সম্পন্ন যানের জন্যে আলাদা লেন করা।
মহাসড়ক সংলগ্ন স্কুল, বাজার বা এমন গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা থাকলে রাস্তা পারাপারের জন্য অভারব্রীজ তৈরী করা
নকল ড্রাইভিং লাইসেন্স বন্ধ করা
ড্রাইভার দের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া
জন সচেতনতা তৈরীতে রেডিও-টিভি তে ব্যাপক প্রচারনা চালানো।
সবচে বড় কথা একটি গণতান্ত্রিক সরকার হিসাবে জনগণের অনাকাংখিত দুর্ঘটনার হাত থেকে বাচানোর জন্য দ্বায়িত্ব নিয়ে কাজ করা।