শিরোনামটা দেয়ার পেছনে একটা চালাকি আছে।চালাকি মানে বেকুব মানুষের চালাকি। শিরোনাম যদি হতো -
আজকে আমার সামহোয়ারইন ব্লগে চতুর্থ বর্ষপূর্তি।
তাহলে বিস্তারিত লিখতে গিয়ে যদি লেখক খায়রুল আহসানের মতো পরিসংখ্যান করতে যেতাম তো,
থাক! আপনারাও এই গরিবের পোস্টের সংখ্যার দিকে তাকাতে যাবেন না।নিজের পোস্টের সংখ্যা দেখে আমি নিজেই লাজে মরি মরি অবস্থা।
এইবার শিরোনামের ব্যাপারে বলি।
ক্লাস সিক্সে সিলেটের মৌলভীবাজারে ছিলাম। আমাদের স্কুলের পাশে কোন বয়েজ স্কুল ছিল না যেন, কিছু বিল্ডিং ছিল। ছেলেরা সেখান থেকে আমাদের ক্লাস সিক্সের বারান্দায় উঁকি মারতো। আমরা ছোট মানুষ, ছোট বলতে সত্যিই ছোট। এখনকার ছোটদের মতো না।
তো বড় ক্লাসের কিছু মেয়ে তাদের বারান্দা,স্কুলের মাঠ, অন্য আরও বারান্দা বাদ দিয়ে আমাদের বারান্দায় টিফিন পিরিয়ডে আসত। এবং টিফিনের পুরোটা সময়ই তারা সেখানেই কাটাতো। কিন্তু যতক্ষণই থাকত, উফ্! অসহ্য! ভাল্লাগছেনা, চল চলে যাই, ছেলেগুলি কি অসভ্য! এইসব যখন করত তখন আমাদের ক্লাসের কয়েকটা মিনকা শয়তান জোরে জোরে বলতো নায়িকা নায়িকা ভাব নায়কের অভাব।
আর আমার কথা বলি, আমি সারাবছরই একটা লেখক লেখক ভাব নিয়ে চলি।ভাবসাব দেখলে মনে হয়, না জানি কত বড় লেখক!(ভাবের চোটে যদি দু’একটা লেখা বের হয়,তো ক্ষতি কি?) আল্লাহর রহমতে সবকিছু ভোলার ব্যারাম থাকাতে মানুষের মনেও ভ্রান্ত ধারণা হয় ।
আজকে সামুতে লগ ইন করার পর যখন দেখলাম,
সামুতে আজ আমার চতুর্থ বর্ষ পূর্তি। তখনই মনে হলো তাহলে তো আমার একটা পোস্ট দেয়া দরকার। এই উসিলায় পোস্টের সংখ্যাও একটা বাড়লো।
তারপর পোস্টের সংখ্যার দিকে তাকিয়ে নিজের প্রতি নিজের একটা বাক্যই মনে মনে উচ্চারিত হলো। সেটা হলো-
লেখক লেখক ভাব, লেখার অভাব।
গেলো শিরোনামের কথা। এখন অন্য কথায় আসি।
আমার নিয়মিত পোস্ট করা হয় না।কারণ আমার অনেক লেখাই সমাপ্তি পর্যন্ত যায় না। কিন্তু সামুতে আমি সেরকম একটিভ না হলেও সামু আমার অনেক আপন।সব ব্লগার আপু, ভাইয়ারা আমি সত্যিই আপনাদের খুব ভালবাসি। আপনাদের মন্তব্য আমাকে লেখার অনুপ্রেরনা যোগায়।ভুলগুলি শোধরানোর সুযোগ করে দেয়। অনেক কিছু শিখি। আপনাদের লেখা পড়ে আনন্দ পাই, কষ্ট পাই, চার দেয়ালের মধ্যে থেকেও বিশ্ব ভ্রমণের আনন্দ পাই।
সামুতে যে প্রথম পোস্ট টা দিয়েছিলাম, হংস মিথুন? আমার মনে আছে আমি খুবই বিপর্যস্থ ছিলাম।ডুবন্ত মানুষ খড় কুটা ধরে হলেও বাঁচতে চায়। আমার তখন কোন স্থায়ী ঠিকানা ছিলোনা। কোন স্বপ্ন ছিলোনা। তখন কোথায় যাব, কি করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ছোটবেলায় একবার আমার আপুনি শিখিয়ে দিয়েছিলো, বেশি মন খারাপ হলে একটা কাগজে বা খাতায় লিখে তারপর সেটা টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলে দিবি। আমি লিখতাম ঠিকই।কিন্তু ছিঁড়তাম না।কেমন যেন মায়া লাগতো ।তাই রেখে দিতাম। পরে বান্ধবীরা সবাই নিয়ে নিয়ে পড়তো, আর বলতো সারমিন তুই লেখক হবি নাকিরে?
তাই মন খারাপের দিন গুলোতেও আমার সঙ্গী বলতে ঐ কাগজ কলমই ছিলো। হংস মিথুন লিখে কোথায় লেখা দেবো কোথায় লেখা দেব খোঁজ করতেই কয়েকজন সামহোয়ারইন ব্লগ দেখিয়ে দিলো।
প্রথম পোস্ট টা খুব ভয়ে ভয়ে দিয়েছিলাম(এখনও ভয়ে ভয়ে দিই)।
কিন্তু মন্তব্য পড়ে সব ভয় কেটে গিয়েছিলো।আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম।এখনও যখন সামুতে ঢুকি সব দূঃখ, কষ্ট ভুলে যাই।
আরও অনেক কিছু লেখার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু বেশি লিখতে গেলে আজকে আর পোস্ট দেয়া হবে না। তাই ইতি টানলাম।
সামু পরিবারের জন্যে অনেক ভালবাসা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০৫