
লন্ডনে এসে কোন কালচারাল শক খাব বলে ভাবিনি। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আসলেই শক খাওয়ার মত। ধরা যাক, কয়েকজন মিলে ক্লাসের পর গল্প করছে। হাসি-খেলার পরিবেশ, সামনে কোন পরীক্ষা নেই। নেই কোন ডেডলাইন। এর মাঝে হঠাৎ করে একজন ঘোষণা দিয়ে উঠবে ইউ গাইস গো ফর লাঞ্চ, আই অ্যাম গোইং ট্যু দ্য লাইব্রেরি। এটা আবার কেমন কথা? এরকম পরিস্থিতিতে আমি খুব বিব্রত বোধ করি। আমি যেই সংস্কৃতি থেকে এসেছি, সেখানে বেশি আগে আগে পড়ালেখা করা ও লাইব্রেরিতে যাওয়া একটা লজ্জার বিষয়। তাই যখন একজন তর্জনী উঠিয়ে লাইব্রেরী যাওয়ার ঘোষণা দেয় তখন আমি খুব মানসিক চাপে পড়ি। উস্খুস করতে থাকি। বাকিদের লাঞ্চে পাঠিয়ে আমিও গোপনে লাইব্রেরী প্রবেশ করি। লাইব্রেরীতে যাই মানসিক শান্তির জন্য, কাজের কাজ কিছুই হয়না। আমাদের দেশের লাইব্রেরীসমূহ তৈরি হয়েছে বিসিএস প্রিপারেশন নেয়ার জন্য আর প্রেম করার জন্য। এর মধ্যে বিসিএস প্রিপারেশন নেওয়ার সুযোগ হয়নি কখনো। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পরীক্ষার আগে লাইব্রেরীতে পড়তে গিয়ে বন্ধু-ভাই-ব্রাদারদের সাথে চা খাওয়া ও নানা ধরনের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করে জাতিকে উদ্ধার করাই ছিল আমার একমাত্র কাজ। বিদেশে এসে আমার সেই লাইব্রেরী ওয়ার্কের কনসেপ্ট চেঞ্জ হয়নি। এখানে দেশের পরিবেশ পাইনা। তাই লাইব্রেরী গিয়ে কিছুক্ষণ পড়ার পর ঘুম আসে। হট চকলেট খাই একটু পর পর। এভাবে আরও কিছুক্ষণ পায়চারি করে বাসায় চলে যাই। বাসায় শুয়ে শুয়ে ডেডলাইনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। তারপর ডেডলাইন আসলে রাত জেগে লেখা শেষ করি। হ্যাঁ, এটাই সাইন্স।
আগের পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Writer's ID
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




