পৃথিবীর বেঁচে থাকা মানুষগুলোর কাছে আমার প্রশ্ন-বিশাল প্রকৃতি ভান্ডারের মধ্যে-সে দুহাত ভরে কি নেবে?মাটি জল পাহাড় নাকি আকাশ?আমাকে যদি ঈশ্বর প্রশ্ন করেন আমি কি নেব?উত্তর-মাটি।কেননা সেখানেই আমার শেষ আশ্রয়।মাটির উপরেই আমার দুপদাপ হেঁটে চলা এবং সবুজ গাছ গাছালির বুনন।আমার দুপদাপ হেঁটে চলাতে মাটি হয়তো ব্যাথা পায় কিন্তু আমায় কিছু বলে না।চুপচাপ সয়ে যায়।হয়তো নীরবে অশ্রু ফেলে।মাটি ছাড়াও প্রকৃতির অন্য অংশগুলোর সাথেও আমার কমবেশী সখ্যতা।মাঝে মাঝে জানালা দিয়ে প্রকৃতির অপার রহস্য দেখি।বিলীন হই প্রকৃতির তন্ময়তায়।বর্ণনাতীত বৈচিত্র দেখি যা শুধু অনুভব করা যায় কিন্তু প্রকাশের অতীত।
আজ আমার যুদ্ধ বিরুদ্ধ পক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে যে শক্তি অহরহ আমাদের অস্তিত্ব বিনাশে সতর্ক ও তৎপর।আমিও চোখ কান খোলা রাখি বোঝার জন্য-দায়ের কোপ কোনদিক হতে আসছে।ডান বাম সামনে পিছন উপর নীচ-কোনদিক হতে? চারিদিকে এত বেশী দায়ের কোপ উদ্যত দেখেছি,এত বেশী সূক্ষ্ণ জালের জালে আটকা পড়েছি যে কৌশলী জেলের পক্ষেও সূক্ষ্ণতার সাথে জালের জট খোলা সম্ভব কিনা আমার সন্দেহ।তবে পুরোটা না হলেও বতর্মানে কিছুটা যে জালের জট খুলতে সক্ষম হয়েছি-এটা বলতে পারি।এজন্যেই আমি ধীরে ধীরে সমাজের মানুষের সাথে মেলামেশাটা গুটিয়ে নিয়েছি।ইদানীং নিজে বাঁচলে বাপের নামে বিস্বস্ত হয়ে পড়েছি।এই বিশ্বাস নিয়ে যদিও আমরা কেউ জন্মাই না,পরিবার সমাজ রাষ্ট্র সর্বোপরি কোন পরিবেশে আমরা বেড়ে উঠেছি তা থেকে (জন্মসূত্রেই হোক বা পরিবেশ সূত্রেই হোক) পেয়ে যাই।এই সূত্রগুলোকেই আমরা সামনে রেখে এগিয়ে যাই ভিন্ন ভিন্ন ধারায়।কেউ বা চলে সৌন্দর্যের স্বপ্নিল আলোয় আবার কেউ বা চলে আঁধারময় অন্ধকারে। কিন্তু প্রত্যেক ধারায় লুকানো থাকে সুন্দরম মনোরম মুক্তো,যা কষ্ট সয়ে অর্জিত।
কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা
সরু পথ বেয়ে চলা
ক্ষণে ক্ষণে রক্তাক্ত
তবু সয়ে নেয়া
ভরে যাবে খেয়া
মুক্তে, অতিরিক্ত।
কেউ কেউ সুন্দরতম পথে হেঁটে চলে আকাখ্ঙিত মুক্তোটি পেয়ে যায় । আবার কেউ বা আকাংখিত মুক্তোটি দৌঁড়েও নাগাল পায় না সারা জীবনেও।কেননা স্থান কাল পাত্র ভেদে তার সমস্ত কর্মকান্ডই ছিল ফসলহীন নিস্ফলের জন্য। তবে প্রশ্ন-
১)মুক্তোটি তুলে আনবে কে ?
২)কোথা থেকে আনবে ?
৩)কোন সময়ে আনবে ?
এই তিনটি ধারার যদি সম্মিলন না ঘটে তবে সমস্ত চেষ্টা প্রচেষ্টা ব্যর্থ এবং ব্যর্থই।এর পরে আসে উদ্দেশ্য।এর সাফল্য অসাফল্য নিয়ে কিছুক্ষণ টানা হেঁচড়া।কাঁটা ছাঁটার পর আসে একটি ধাঁচ বা রূপ দেয়ার।ধাঁচ দেয়ার দায়িত্ব কিন্তু আপনার।কোন রূপে বা গড়নে আপনি বা আমি একে ঢেলে সাজাবো তার ছক কেঁটে নিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।তবে সবার জন্য বা সবকিছুর জন্য যেটা সত্য-প্রস্তুতি এবং এটা নিতে হবে সবার আগে।যদি প্রস্তুতি না নিয়ে থাকেন তবে প্রতিপক্ষ দ্বারা বিব্রত হবেন।আমরা সবাই জানি এই পৃথিবীটা সুন্দর ও অসুন্দরে ভরা একটি মঞ্চ।আমরা সবাই বিভিন্ন ঢঙ্গে রঙ্গে অভিনয় করছি।এমনকি মনুষ্য প্রাণী ছাড়াও আর যে সমস্ত প্রাণী রয়েছে তারাও তাদের নির্দিষ্ট ভূমিকায় অভিনয় করছে।প্রত্যেকেরই অভিনয় চরিত্র বিভিন্ন ধাঁচে ও ছাঁচে গড়া।কৃষক ধান বোনে কাঁটে,কৃষাণী ধান ভানে,ছাঁটে,গোঁয়ালা দুধ দুয়ে বিক্রি করে,গোঁয়ালিনীরা সেই দুধটাকে ছেঁকে গোঁয়ালার হাতে ধরিয়ে দেয় বিক্রির জন্যে বা নিজে ছোঁটে বিক্রির জন্যে।এ সবই নিজস্ব ভূমিকায় নিজ অভিনয়ের জীবন রূপান্তর।
আমি সমাজতেত্ত্বর ছাত্রী।আমার এগার বছর বয়সেই আমি অনুভবেই বুঝেছিলাম ইবনে খলদুনের চক্রাকার তত্ত্ব।১৯৭৫ এ যখন জাতির পিতা স্বপরিবারে নিহত হলেন আমি তখন ১০ থেকে ১১'র পথে।লাল রক্তের এক নুতন মাত্রার যোগ হলো আমার ও আমাদের জাতীয় জীবনে।সেই থেকে আমাদের জীবনে লালের এক দুঃসহ অনির্বার চক্র।আজ সমজতত্ত্ব,মানসিকতত্ত্ব,রাষ্ট্রতত্ত্ব,ইতিহাস,দর্শন,অর্থনীতি ইত্যাদি পড়ে এবং নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত না হয়ে পারি না যে ইবনে খলদুনের সমাজ সম্পর্কিত চক্রাকর তত্ত্বই আমাদের জন্য প্রযোজ্য।
সমাজ ঘুরছে,পৃথিবী ঘুরছে চক্রাকারে।তবে চক্রাকারের ধরনে থাকে কিছুটা পুরানো রঙ,থাকে আধুনিকতার ঢঙ অর্থাৎ যে বিন্দু থেকে শুরু তা আবর্তিত হতে হতে আবার সেই বিন্দুতেই এসে মিলছে।সমাজতাত্ত্বিক প্যারেটোও একই তত্ত্ব দিয়েছিলেন অন্য আঙ্গিকে।
সামনে নির্বাচন।আশায় বুক বাঁধি এই ভেবে যে তারাই ক্ষমতার মসনদে আসবে জয়ের পতাকা নিয়ে যারা আমাদের দেশকে দেবে নিরাপত্তা,সুস্থতা,অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও অগ্রগতির সদার্থক ফসল এবং দেশটিকে আন্তর্জাতিকতার কাছে স্বচ্ছল পরিপূর্ণ দেশ হিসাবে দিবে একটি সুনিশ্চিত ঠিকানা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




