somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাওন আহমাদ
স্বপ্নপূরণই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়।তাই বলে স্বপ্নকে ত্যাগ করে নয়,তাকে সঙ্গে নিয়ে চলি।ভালো লাগে ভাবতে, আকাশ দেখে মেঘেদের সাথে গল্প পাততে, বৃষ্টি ছুঁয়ে হৃদয় ভেজাতে, কলমের খোঁচায় মনের অব্যক্ত কথাগুলোকে প্রকাশ করতে...

পারু আপা

২১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি তখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি আর পারু আপা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে।
আমাদের বাসার পাশের বাসায় পারু আপারা ভাড়া থাকতেন।পারু আপা দেখতে অসম্ভব রকমের সুন্দরী ছিলেন।তার মুখে সবসময় হাসি লেগেই থাকতো।তার কথা বলা তার হাসি আমার ভীষণ ভালো লাগতো।

তাদের পরিবারের সাথে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক থাকায় তাদের বাসায় আমাদের এবং আমাদের বাসায় তাদের হরহামেশাই যাতায়াত ছিলো।

আপু গণিতে বেশ পারদর্শী ছিলেন আর অন্যদিকে আমার গণিতের স্কিল এতো ভালো ছিলো যে বুদ্ধি হবার পর ম্যাট্রিক ব্যতীত কোনোদিন গণিতে পাশ করেছিলাম বলে মনে পড়েনা। যেবার আমি ম্যাট্রিক দেই গণিত পরীক্ষার পরবর্তী সময়ে আমাদের গণিতের টিচার আমাদের সাথে দেখা করতে যান পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে। উনি গিয়েই প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করেন এই শাওন পরীক্ষা কেমন হয়েছে? আমি বললাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো পাশ করব। আমার উত্তর শুনে স্যার বললেন তাহলে আর বাকিদের জিজ্ঞেস করলাম না তাদের পরীক্ষা কেমন হয়েছে। এই ছিলো আমার গণিত স্কিল!

আমি মাঝেমাঝেই গণিত বুঝতে পারু আপার কাছে যেতাম।
সে যখন আমাকে গণিত বুঝাতো আমি শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।আমার চোখের দিকে তার চোখ পড়তেই আমার মাথায় ছোট্ট করে একটা থাপ্পড় দিয়ে হেঁসে বলতেন কিরে বাঁদড়?গণিত বুঝা রেখে কি দেখছিস?

আমি কিছুনা সূচক মাথা নাড়তাম।পারু আপা যখন ছাদে আসতেন আমিও আমাদের বাসার ছাদে চলে যেতাম।লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখতাম কিন্তু তারপরো তার কাছে ধরা পড়ে যেতাম।

সে আমাকে দেখেই হেসে দিয়ে বলতেন কিরে?এখানে কি? যা পড়তে বস।আমিও বাধ্য ছেলের মত চলে আসতাম।
পড়তে বসেই আমার বইয়ের পাতায় পাতায় তার নাম লিখে ভরে ফেলতাম।

একদিন সকালে পারু আপার মা এসে আমাদের ইনভাইট করে গেলেন, বললেন আগামীকাল পারুর জন্মদিন!
আমি তার জন্মদিনে তাকে টিফিনের টাকা বাঁচানো টাকা থেকে কয়েকটা লাল গোলাপ আর একটা চিরকুট দিয়ে চলে এলাম।(সিনেমা দেখে শিখেছিলাম ভালোবাসলে লাল গোলাপ দিতে হয়) চিরকুটে লিখা ছিলো আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি।

চিঠি আর গোলাপ দিয়ে এসে আমি বাধ্য ছেলের মতো পড়ার টেবিলে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর পারু আপা আমাদের বাসায় এসে হাজির! নিশ্চয়ই চিরকুট টা পড়েছে! ভয়ে আমি খাটের নিচে লুকাবো না রুম থেকে ভো দৌড় দিয়ে বের হয়ে যাবো বুঝতে পারছিলাম না। এসব ভাবতে ভাবতেই পারু আপা আমার রুমে ঢুকলেন আর আমাকে বল্লেন আরে পাগল ছেলে! তুই এখনো অনেক ছোট।
আগে লেখাপড়া করে বড় হয়ে উঠ।তারপর আমার থেকেও সুন্দরী মেয়েদের সাথে প্রেম করতে পারবি।আমি শুধু তার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুই বলতে পারলাম না।এর কিছুদিন পর পারু আপার বিয়ে হয়ে গেলো।আমাদের বাসার সবাই দাওয়াত খেতে গেলেও আমি যাইনি।সারাদিন বাসায় বসে কেঁদেছিলাম।

আমি ছেলেটা এখন যথেষ্ট বড় হয়েছি।কিন্তু পারু আপাকে আজো ভুলতে পারেনি!
বাসা বদল হবার কারণে আমি আর আমার পারু আপাকে খুঁজে পাইনি।
শহরের অলিতে গলিতে এমন কতশত হারানোর গল্প হারিয়ে যায় তার হিসেব কে রাখে!

ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:০১
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×