somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শেখ এম উদ্‌দীন
আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

হঠাৎ করে কুরআন কিংবা নামায পড়াই কি তাহলে জঙ্গি উত্থানের একমাত্র কারন?

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন “এমন ভ্যাকসিন বানান যেন গর্ভেই জঙ্গি বেড়ে না উঠে” উনার কথাটা পড়েই কেন যেন ছোট বেলার সবদার ডাক্তারের কথা মনে পরে গেল। হয়তবা এটা আমার জ্ঞানের অভাবের ফসল। সে যাই হোক ওনাদের কথা বিশ্লেষণ করার মত জ্ঞান আমার নেই এবং আল্লাহ্‌ যেন কখনো এমন কাজ আমাকে দিয়ে না করান।

জঙ্গি প্রসঙ্গে লিখব না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেম। অনেক কারনের মধ্যে অন্যতম ছিল এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয় এবং আমার সামরিক জ্ঞান শূন্যের কাছাকাছি তাই এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার মত বিদ্যা আমার নেই।

হোলি আর্টিযেন রেস্তরাতে জঙ্গি আক্রমণের পূর্ব পর্যন্ত আমাদের তথাকথিত সেক্যুলার মিডিয়া এবং তাদের গৃহপালিত বুদ্ধিজীবী সমাজ [আসলে এরা সবাই ধর্ম হীনতার ধারক বাহক এবং সংক্রামক, নিজেদের এই রূপ গুলো লুকাতে বাংলাদশের সমাজে তারা সেক্যুলার (ধর্মনিরপেক্ষতা) নামক বাংলাদেশীদের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী বট বৃক্ষটিতে পরগাছার মত আঁকড়ে ধরে বাংলার সমাজ থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতাকে চিরতরে মুছে দিতে গত কয়েক দশক যাবত আদাজল খেয়ে লেগে আছে] জঙ্গি বলতেই মাদ্রাসা পড়ুয়া কিংবা কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের বুঝাত। এদের এই মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে যখন এদের সমাজের অন্তর্ভুক্ত কিছু মানুষের সন্তান এই গর্হিত কাজে ধরা পড়ল সাথে সাথেই এই বিবেকহীন প্রানি গুলোর ভোল পাল্টে গেল!! ঐ ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত এদের বিশ্লেষণ কিংবা সংবাদের গল্প বিশ্লেষণ করলে একজন বাংলা পড়তে জানা মানুষের নিচের গল্পটিকেই মুখ্য বলে প্রতীয়মান হবে-

“একদল মানুষ যারা গিটার, তবলা, পিয়ানো বাজাতো, যারা নাচ ময়না নাচ পয়সা পাবিরে টাইপের গান শুনত, যারা ফাইভ স্টার হোটেলে নায়িকা কিংবা ভাবি নায়িকা অথবা নায়িকাদের অনুকরন করা আধুনিক (!) রমণীর সাথে স্যাম্পানের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে নেচে গেয়ে তথাকথিত সেক্যুলার হিসেবেই বড় হয়েছে। যারা পেপসির বোতলের মত গার্লফ্রেন্ড পরিবর্তন করতে শিখে যাচ্ছিল প্রায় সেই সময়ে হঠাৎ করেই এরা ইসলাম মানা শুরু করল। পত্রিকার ভাষাতে কেউ জাকির নায়েকের লেকচার আবার কেউ কিছু কুরআন পড়া এবং নামায পড়া শুরু করল। এই গল্পের শেষে তারা সকলেই জঙ্গি হয়ে গেল!” কি চমৎকার তাই না, অর্থাৎ প্রথম গর্হিত কাজগুলো ছেড়ে যখনই তারা নামায পড়া কিংবা কোরআন পড়া শুরু করল ওমনি তারা জঙ্গি হয়ে গেল!! কত গভীর সমস্যার কত সহজ সমাধান এরা দিতে পারে! এবং কত সহজে এরা সকল দোষ ইসলামের উপর চাপিয়ে দিতে পারে এটাই হল এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

ঘটনা গুলো যদি একটু ভিন্ন ভাবে দেখি তাহলে দেখব ডি এন এ কিংবা প্রাকৃতিক ভাবেই আমরা বাংলাদেশীরা ধর্মপ্রাণ মানুষ। আমরা ভারতের হিন্দুদের কিংবা পাকিস্তানের মুসলমানদের মত হিংস্র না। যার ফলেই এই তথাকথিত পরগাছাদের আবির্ভাবের পূর্বে অল্প কিছু মানুষ ব্যতিত সকলেই ছিল সেক্যুলার। সবচেয়ে বড় কথা হল আমরা অনেক আবেগী একটি জাতি। যার ফলে ঐ ছেলে গুলো কিংবা অন্য বাংলাদেশী সকলেরই ধর্মের প্রতি খুব বেশি আবেগ কাজ করে। এর একটি সহজ উদাহরণ হল যে মানুষটি ইসলামে নিষেধ এমন কোন কাজ করছে সেও কিন্তু ইসলাম বিরোধী সরাসরি কোন কথার তীব্র প্রতিবাদ করছে। এই তীব্র আবেগ থাকা মানুষদেরকে আপনি যখন সুকৌশলে ইসলামের জ্ঞান অর্জন থেকে বিরত রাখবেন তখন একাজে আপনি সফল হতেই পারেন (যার প্রমাণ বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা এবং তরুণ সমাজ)। কিন্তু সমস্যা হল এদের যে আবেগ তা কিন্তু আপনি মুছে দিতে পারছেন না। ফলে জীবনের যেকোনো চড়াই উৎরাইতে তার এই আবেগ তাকে ইসলামের দিকে ডাকবেই। তখন সে উগ্রপন্থীদের সহজ টার্গেটে পরিণত হয়। যারা এই ব্যক্তিটিকে কুরআনের ভুল কিংবা অসম্পূর্ণ ব্যাখ্যা সরবরাহ করে তার ঐ আবেগ কে খুব সহজেই তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। অন্যের নিয়ন্ত্রিত মানুষ অ্যাটম বোমার চেয়ে ক্ষতিকর তা সকলেরই জানা। ফলে খুব সহজেই এরা জিহাদ মানেই মানুষ মারা এবং হুর পাওয়া বুঝে যায়। যেহেতু ছোটবেলা থেকেই এদের এমন এক পরিবেশ দেয়া হয়েছে যেখানে সহজলভ্য আলকাতরাও অনেক দামি এবং এদের ইসলামিক জ্ঞান যেহেতু শূন্যের কোটাতে সেহেতু এই জিহাদ এবং হুর যে বাবার টয়োটা গাড়ীর মত সহজ লভ্য নয় এটা এরা বুঝে উঠতে পারে না।

ফলাফল সমাজে জঙ্গিবাদীদের মহোৎসব। সু-শীল জঙ্গিরা এদের এই জঘন্য কাজের সুযোগ নিয়ে উপরের গল্পের মত ইসলামকে হেয় করতে উঠে পরে লাগে। এই সকল সুশীল জঙ্গিদের লেখা পড়লেই বুঝা যায় সে কীভাবে কত কিছুর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে একদল তরুনের ব্রেনওয়াশ করছে, তাদের কীভাবে সূক্ষ্মভাবে ইসলামের পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই সূক্ষ্ম ব্রেন ওয়াশড বুদ্ধি এবং জ্ঞান স্বল্প মানুষ গুলোর মধ্যে কেউ কেউ আবার ঐ উগ্রপন্থীদের সহজ টার্গেটে রূপান্তরিত হচ্ছে। এটি দারিদ্রের দুষ্ট চক্রের মত চক্রাকার একটি প্রক্রিয়া যেখানে উগ্রপন্থী এবং সু-শীল উগ্রপন্থী দুটি গ্রুপ যুদ্ধে লিপ্ত কিন্তু এর বলি হচ্ছি আমরা ১৬ কোটি মানুষ!!

নিজের সন্তানকে সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে দেয়া বাবামায়ের কর্তব্য। আর ইসলামে এটা ওয়াজিব এবং প্রত্যেক ব্যাক্তিকে কোরআন শিখতে হবে বুঝতে হবে এটা ফরয। ফলে যে সু-শীল আপনাকে বুদ্ধি দিচ্ছে কুরআন পড়ার ফলেই জঙ্গি হয়েছে সে একজন দুষ্ট বুদ্ধির শয়তানের অনুসারী এবং আপনারা যারা তাদের ফলো করছেন তারা সকলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি (দুঃখিত কেউ কষ্ট পেলে)। একজন মুসলিম যে সম্পূর্ণ কুরআনের অর্থ জানে এবং সে অনুযায়ী আমল করে সে কোন দিন মানুষ তো ভালো কথা অকারনে একটি পিঁপড়াও মারতে পারেনা। তাই সন্তানকে সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা এবং সমাজ থেকে ধর্ম হীনতাকে প্রতিহত করাই পারে বাংলার বুক থেকে এই জঙ্গিবাদীদের চিরতরে নির্মূল করতে।

হুম আপনার যুক্তি আমি কিছুটা হলেও বুঝি, এই তো বলবেন তাহলে জাপানে ধর্ম নেই ওরা জঙ্গি না কেন? আরে ভাই ওদেরও ধর্ম আছে আর ওদের ধর্ম ওরা খুব আন্তরিকতার সহিত পালন করে। আরেকটা কথা হল আপনার দেশের মানুষের ডি এন এ আর ওদের ডি এন এ তো এক না! আপনি চাইলেই এক ফুঁৎকারে ইসলামকে উড়িয়ে দিতে পারবেন না। কিছু জিনিস বদলাতে নেই আর এই ব্যাপার গুলোর মধ্যে বাংলার মানুষের ধর্মীয় আবেগ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সঠিক ভাবে ইসলাম চর্চা করলেই এই জঙ্গিবাদ ফুঁৎকারের মত উড়ে যাবে। হ্যাঁ এখন আপনি বলবেন তাহলে আল কায়েদা, আই এস আই এস এরা তো সবাই আরবি জানে কুরআন বুঝে ওরা তাইলে এসব করে কেন। কারন ওরা আপনাদের মতই জ্ঞান পাপী সবই বুঝে জানে কিন্তু মানে না। এই দলভুক্ত শুধু যে আপনারা তা নয় অনেক ভেকধারী হুজুর, পীর ভণ্ডরাও আছে আপনাদের দলে। আপনাদের সবার উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন (তা হল নিজেকে জাহির করা এবং দুধের মাখন খাওয়া) কিন্তু হাসিলের পদ্ধতি হয়ত একেক জনের একেক রকম।

সুতরাং আসুন নিজেদের সন্তানদেরকে সঠিক ইসলামের বানী শেখাই তাদের জানতে দেই যে সুরা মায়েদাহ এর ৩২ নম্বর আয়াতের মত অনেক আয়াত আছে যেখানে স্পষ্ট বলে দেয়া আছে কোন নিরপরাধ মানুষ এমনকি অপ্রয়োজনে কোন প্রানিকেও হত্যা করা যাবে না। কুরআনে স্পষ্ট বলা আছে একজন মুসলমানের নিকট অমুসলিম প্রতিবেশীর জান ও সম্পদ আমানত এবং তা হেফাজত করা তাঁর অবশ্য কর্তব্য। এমনকি কোন বিপথগামী মুসলমান অবৈধ ভাবে সেই প্রতিবেশীর উপর জুলুম নির্যাতন চালালে ঐ বিপথগামী মুসলমানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া একজন ইমানদার মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। ফলে নিজের কিংবা অন্যের অজ্ঞানতাকে ইসলামের উপর চাপিয়ে না দিয়ে মানুষকে সঠিক ইসলামের পথে থাকতে দিন এমনিতেই দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়ে যাবে।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×