শীত আসছে। শীত মানেই পিঠা / পুলি , ভাজা পোড়া । আর এগুলো রাতেই খেতে মজা তাই এগুলো রাতেই ভাজতে হয়। তবে গ্রাম বাংলায় রাতে মাছ কেনা বা মাছ ভাজা যাবেনা একথা মেনে চলা হয়। মাছের গন্ধে তেঁনারা বেড়ালের মত ঘুরঘুর করে। ইলিশ মাছ হলে তো কথায় নেই। কাঁচা ইলিশ কিনে অনেকেই বাড়ি ফিরতে, বাঁশ ঝাড়ের নিচে বিপদে পড়ছে।বাজারের ব্যাগ টান দিয়েছে কতজনার তার ঠিক নেই। শুধু মাছ নয় ভাজা পোড়া ( পিঠা /পুলি / বড়া ) ভাজলেও সমস্যা আছে। রান্নাঘরের জানলার পাশে বসে থাকে। নাকি গলায় গান গায়। আঁমাঁকেঁ দিঁ বিঁ নাঁ ----।
মাঝে মাঝে চাটাইয়ের বেড়া ভেদ করে হাত ঢুকিয়ে দেয় ! লিকলিকে লোমশ হাত। কি ভয়ংকর। চিকন আঙ্গুল গুলো নাড়তে থাকে। বড় বড় নখ। গরম খুন্তি দিয়ে বাড়ি দিলে একছুটে বাঁশঝাড়ের কাছে গিয়ে বিড়ালের মতো ম্যাও ম্যাও করে ডাকতে থাকে। তারপর একসময় গাছ বেয়ে উঠে যায় , আর দেখা যায় না। আমার ধারণা , মেছো ভূত গুলো খুব সহজেই বেড়ালের রূপ নিতে পারে , তাছাড়া বেড়ালও খুব মাছ পছন্দ করে।
আমাদের বাড়িতে রান্না ঘরে যখন পুলি/ পাকান ভাজা হতো তখন রান্নাঘরের বাইরে অস্বাভাবিক শব্দ হত। আমাদের কালো বেড়ালটার অস্বাভাবিক গতিবিধি লক্ষ্য করতাম। পিঠ টাটটান করে দাঁড়িয়ে যেতো। আর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম আমরা। বাঁশ ঝাড়ে কেমন জানি শব্দ হতো।
ভূতের আনাগোনা গ্রাম বাংলাতেই বেশি। তবে এখন আর আগের মত লক্ষ্য করা যায় না। ভর দুপুরে তাল গাছে পা ঝুলিয়ে কাউকে বসে থাকতে দেখা যায়না। দিঘী থেকে গোসল করে এসে বাবলা গাছে বসে কেউ আর চুল শুকায় না। তবে রাতে রান্না ঘরে যতবার আপনি মাছ ভাজবেন , তেল পিঠা ভাজবেন। আশপাশের পরিবেশ একটু খেয়াল করে দেখবেন। আপনার পোষা বেড়ালটা পিঠ টানটান করবে , ঘুরঘুর করবে। রান্নাঘরের বাইরে কেউনা কেউ পায়চারি করবে , অপেক্ষা করবে। আপনি তার উপস্থিতি টের পাবেন।
আমরা আগে রান্নাঘরে বসে পিঠা খেয়ে ঘরে যেতেও ভয় পেতাম। আমাদের হাতে রসুন দেয়া হতো। পিঠার বাটিতেও রসুন দিয়ে ঘরে নিয়ে যাওয়ার হতো। কি অদ্ভুত সময়!
ছবিঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:৪০