somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ সারাদিন ব্লগে সময় কাটাচ্ছি ...

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





৮ টা ৪৫ মিনিটে অফিসের পিসি অন করছি। অন করেই সামুতে। আউটলুক চেক করলাম। হাতে গোনা কয়েকটি মেইল। বায়ারের তরফ থেকে বিশেষ কোন মেইল নেই। দুবাই থেকে হোটেল বুকিংয়ের একটা মেইল দেখলাম। ৩১৯৫ ডলার জন প্রতি। ভেবে দেখলাম এতো টাকা আমার কাছে নেই।
মেইল দাতা ভুল জায়গাতে নক করেছে। কি আর করা , জাঙ্কে রেখে দিলাম।

ডলার আজ ১০৫ টাকা করে যাচ্ছে। তিনলাখ পঁয়ত্রিশ হাজার চারশো পঁচাত্তর টাকা কমাতে আমার কত বছর লাগবে হিসেবে করতে ইচ্ছা করছে না। যেদিন টাকা হবে সেদিন দুবাইয়ে রুম ভাড়া করবো সেটাও ভাবছি না।

আজ অফিস অনেক ফাঁকা। অনেকেই ছুটিতে। আমার অনেক প্রেশার নেই। কেমন একটা ঝিঁমুনি চলে এসেছে। চা খেলাম কাজ হলো না। আমাদের অফিসে চা দেয় চিনি ছাড়া। অফিসে চিনি নিষিদ্ধ। আমি আলাদা বয়ামে চিনি রাখি। চা দিতে দিতে রাজ্জাক বললো , স্যার বিপিএলের টিকিট দিবেন না ?
মাঝে মাঝে আমার কাছে টিকেট আসে। এর আগে দুইবার দিয়েছি তাই আমার কাছে পাবে আশা করে।
আমি বললাম , খেলা কবে ?
বলল , ৬ তারিখে শুরু।
আমি বললাম , আচ্ছা। হাতে পেলে জানাবো।
রাজ্জাক বললো , স্যার চায়ে চিনি দিসি।
চায়ে চুমুক দিয়ে দেখলাম চিনি ঠিক আছে। চিনি না দিলেও টিকেট দিতাম। রাজ্জাক সেটা জানে।

চা খেয়েও ঝিমুনি যাচ্ছে না। রাজীব নূরের 'নীলা গাঁজা খায়' এফেক্ট কিনা কে জানে। রাজীব নূরের কি হয়েছে বুঝলাম না। সেদিন ব্যান্ডি আজ গাঁজা ! তবে ব্যান্ডি থেকে সরাসরি গাঁজাতে নামা ঠিক হয়নি। রাজীব নূর কে বলা দরকার ছিল , বলিনি।



দুপুরে মাছ দিয়ে ভাত খেলাম। ভাত খেতে খেতে একদিন দৌড় দিয়েছিলাম। সাইরেন বেজে উঠেছিল। বিপদ ঘন্টা। নয়তলা থেকে নিচে নামতে হবে। লিফ্ট বন্ধ, সবাই আতঙ্কিত হয়ে নিচে নামছে। হুড়াহুড়ি করছে। আমি ধীরে নামতে বলেও নিজেই আতঙ্কিত। চোখের সামনে সাদা ভাত ভেসে উঠলো। গরম ভাত। ধোঁয়া উড়ছে। ছোটবেলায় ঘি দিয়ে খেতাম। মনে হলো সেই ভাত আর খাওয়া হবে না। আমরা সম্ভবত মারা পড়ছি। আমার মত অনেকেই খাবার খেতে খেতে উঠে এসেছে। মোটা চালের ভাত , আলু ভর্তা , বেগুনের ঝোল , শুকনা মরিচ ভর্তা। আর কি খেতে পারবে জীবনে ?
নিচে নেমে দেখলাম অনেকেই কাঁদছে। বেঁচে থাকতে পেরেছে বলে কাঁদছে , মারা যায়নি বলে কাঁদছে। বেঁচে থাকায় অনেক আনন্দ।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবনে আনন্দ খুব একটা আসেনা। আনন্দ দেখা যায় দুই ঈদে। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার আনন্দ।
ছুটির দিন সকালে ভাড়া করা বাস দাঁড়িয়ে থাকে নিচে। আর ওপরে সাঁজ সাঁজ রব। সবাই সেজে কাজে আসে। ছেলেরা পাঞ্জাবি , একই রকম শার্ট। মেয়েরা শাড়ি পরে , খোঁপায় ফুল গোঁজে , মেশিনে ফুল লাগিয়ে রাখে। খালারা দামি(!) শাড়ি পরে সেজে ঘুরে বেড়ায়। সেদিন লাইনচিফ, পিএমদের গলার স্বর নরম থাকে।
এরমধ্যে অনেকে আবার প্রেমিক প্রেমিকা। তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের বিষাদ। অনেকদিন দেখা হবে না। ঈদের দিন দেখা হবে না। মনের ভেতর আনচান করে। তাই ঈদের ড্রেস পরে আসে অনেকে।
আমি এগুলো দেখি । দেখতে ভালো লাগে। চোখ ঝাপসাও হয়।

কিউসি সুপারভাইজার একদিন বলেছিলো , "স্যার এতো নরম হলে গার্মেন্টসে টেকা মুশকিল। আপনি বেশি নরম।"
আমি কিছু বলি না। মনে মনে হাসি। হাসতে ভালো লাগে। বেঁচে থাকতে ভালো লাগে। বেঁচে থাকায় ভীষণ আনন্দ।
আমার আব্বা একদিন বলেছিলেন, আনন্দ করো। কিন্তু সেই আনন্দ যেন কারো দীর্ঘশ্বাসের কারণ না হয়। মানুষের দীর্ঘশ্বাস ভয়াবহ।







সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৫৯
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×