somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমায় নিয়ে কোন গান লেখা হয়নি আমার....

১৩ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.
প্রায় দুই সপ্তাহ পর দেখা হলো। কাছে থেকেও কতদূরে!
একসময় ইচ্ছে হলেই চলে যাওয়া যেত, ক্লাস শেষ করে সোজা স্টার কাবাব, এক কাপ চা।
সময় পাল্টাচ্ছে, উদ্যানে থাকছে না ঘাস, কংক্রিটে বাসা বাঁধছে কর্পোরেট
স্বপ্ন.... খবরের কাগজ বিছিয়ে সংসার পাতা হয়না অনেক দিন!
তারপরেও একটা দিনের জন্য সব উলট
পালোট হবে...একটা দিনের সেই হারানো সুর
বাজবে.. এইরাত তোমার আমার!
ভালো থেকো, কোন এক ছুটির দিনে আবার
দেখা হবে...।

--- স্বপ্নবাজ সৌরভ । ২৫.০১. ২০০৯।


২.
আজ বারোটায় কোচ। ভেড়ামারা ফিরবো। বরাবরের মত তোমাকে রেখে ভেড়ামারা চলে যাবো। বরাবরের মত ই বুকটা হু হু করবে, গলা আটকে আসবে! নিউমার্কেট থেকে বিকল্প পরিবহনে যখন উঠি ঠিক এক ই অবস্থা হয়েছিলো... এই বাসটায় উঠবো না, পরের বাসে যায়... তোমার পাশে আরো কিছুক্ষন থাকার জন্য ।
বাসে উঠার সাথে সাথেই চোখটা ভিজে গেল, এই অবস্থা প্রকৃতি তোমার দিকে তাকানোর ক্ষমতা এখনো দেয় নি। তার পরের তোমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে দেখলাম তুমি অন্য দিকে তাকিয়ে আছো... বুঝলাম, প্রকৃতির ব্যবহার দুজনার জন্য ই সমান। সাত বছর ধরে হচ্ছে এখনো হয়... আসলে কংক্রিটে কর্পোরেট স্বপ্ন বাসা বাঁধলেও তোমার আমার চোখের জল আটকে রাখার দুঃসাহস রাখে না!
ভালো থেকো, ভালোবাসি.... ।

---স্বপ্নবাজ সৌরভ। ২২.১০.২০১০।



৩.
তুমি বললে, জানো আজ মনে হয় বৃষ্টি হবে?
আমার শরীরে জ্বর, হঠাৎ করেই শরীরটা আনচান করে উঠলো।
আমি বললাম, বৃষ্টিতে ভেজা মাটির গন্ধতোমার কেমন লাগে?
তুমি উৎফুল্ল হয়ে বললে, ভীষণ ভালো!
কিন্তু ঢাকা শহরে মাটি কোথায়?
নিখাদ মাটির গন্ধ নিতে হলে গ্রামে যেতে হবে।
আমি চুপচাপ তোমার কথা শুনছি--
তুমি আবার বলে উঠলে, আমাদের দেশটা অনেক সুন্দর তাই না?
এখানে ভেজা মাটির গন্ধ, ঝমঝম বৃষ্টির শব্দ! কোন কিছু না থাকার মাঝেও অনেক কিছু তাই না?

আমি তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি--
জানালার ঠিক পাশে তুমি দাঁড়িয়ে।
বাইরের দিকে তাকিয়ে তুমি বললে, জানো আমার খুব বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করছে!
বলতে বলতে তোমার চোখ ঝাপসা হয়ে উঠছে!
আমি তোমার আপনজন আমি বুঝি। আমার শরীরে অসুখ, আমি তোমার দিকে তাকিয়ে।
তোমার চোখ আর আকাশ দুজনায় বৃষ্টির অপেক্ষায়!!

--- স্বপ্নবাজ সৌরভ। ১৭.০৩.২০১১।



৪.
হাসপাতালের ছোট একটা কেবিন। সাদা বেডকাভার,সাদা বালিশ। জানালার পর্দা গুলোও সাদা। রুমটা দোতলায়। জানলাটা খোলা। আমার মাথার কাছে অনেক গুলো বই। একটা বইয়ের নাম 'রুপেরডালি খেলা'! রাশিয়ান একটা বই।
নিচে কয়েকজন ছোট ছেলে ক্রিকেট খেলছে।ফর্সা ছিপছিপে কোঁকাড়া চুলে ছেলেটার হাতে একটা ব্যাট। ব্যাটে গোটা অক্ষরে ইংরেজিতে ইমরান খানের নাম লেখা, পাশে সিগনেচার। ঐ ব্যাটটা আমার।
আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখি। আমার শরীরে অসুখ।

দীর্ঘ ঘুমের মধ্যে ভাঙা ভাঙা অনেক গুলো স্বপ্নের একটি দৃশ্যপট। ছোট ছোট বেলা কেটেছে অসুখে অসুখে... এখনো পিছু ছাড়েনি।পৃথিবীর সকল ছানাপোনারা ভারো থাকুক। ইচ্ছের নীল রং আকাশ ছুঁয়ে যাক্।

---স্বপ্নবাজ সৌরভ। ১৭.০৯.২০১২।



৫.
সিএনজির ভেতর একবার মনে হলো আমি আর বাঁচবো না! আমি বোধহয় বমি করতে করতে মারাই যাবো।
সিএনজি চালক ভীত চোখে আমার দিকে তাকায়। জ্যামে আটকে থাকা রিকশা থেকে প্রেমিক প্রেমিকার জুটির প্রেমিকাটা বলে উঠলো, 'চাচা সিএনজি সাইড করান! মাথায় পানি দেন।'
প্রেমিক পুরুষটা ভ্রু কুঁচকায়।
বিকট শব্দে আর একবার বমি, তিতা তরল গুলো ছিঁটকে বের হয়।
উতলা সিএনজি চালক বলে, "বাজান, আপনের বাসা ঠিকানা বলেন।"
আমি আরেকবার বমি করতে করতে বলি, আমি মরবো না!
ইতিমধ্যে সিএনজি সাইড করা হয়ে গেছে। চায়ের দোকান থেকে পানি এনে মাথায় ঢালছে সেই ফুলওয়ালী মেয়েটি! কোথায় যেন বলে ছিলাম, ফুলওয়ালী মেয়েটা বেমালুম ভুলে যাবে ফুলের নাম!

আমি মরিনি। গত তিনঘন্টা আগে বাসায় এসেছি। বাসায় এসে আবার বমি। শেষ তরল পদার্থ টুকু ছিটকে পড়লো। আর বেশী কিছু মনে নেই। হাতরে হাতরে ফোনটা হাতে নিলাম... আমাদের বাংলাদেশের প্রেমিকা মেয়েটা, বুড়ো সিএনজি চালক, ফুলওয়ালী মেয়েটা কোন একটা কিছু কোনদিনই ভুলে না! ঠিক মনে রাখে।

---স্বপ্নবাজ সৌরভ। ২৬.০৯.২০১৩।





চলে যাওয়া দিন হাতড়ে ফিরি। ব্রেনসেলে জমাকৃত টুকরো টুকরো স্মৃতি গুলো দেয়ালে সেঁটে দেয়ার চেষ্টা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ২:৪৮
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্মে পন্ডিত হতে কতক্ষণ লাগে, ফাইন্যান্সে পন্ডিত হতে কতক্ষণ লাগে?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৭



আপনি জীবনেও "নামাজের গুরুত্ব" নিয়ে কোন পোষ্ট লেখেননি; ২/১টা কবিতা লিখেছেন, ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম নিয়ে লিখেছেন, শেখ হাসিনার রাতের ভোট নিয়ে লিখেছেন, জেনারেল জিয়ার খালকাটা নিয়ে লিখেছেন। আজকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যের পাখি

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬


ঢলের নদীতে ভাঙো তুফানের ঢেউ
ঢেউয়ের তুফানে গাঁথো নদীর কুসুম।
রাতের নিগণ্ঠে বেঁধে দিকচক্রবাল
আঁধারের গর্ভে খোঁজো রাতের কুটুম।

তারপর আঁকি
স্বপ্ন নয়, বৃক্ষ নয়, রহস্যের পাখি।
সরল শরীরে ধরে আগুনের দ্রোহ
কী আশ্চর্য ফুটিয়েছ সম্ভেদ মোহ!


কদম্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই রমজানে ব্লগিং আরো বিরক্তিকর হবে.....

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ২৬ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ২:২৩



দুইটা রোজা শেষ। আমার বেশিরভাগ পোস্ট স্মৃতিচারণ মূলক। যারা আমাকে চেনে তারা অনেকেই পোষ্ট পড়তে চায়না। নিক দেখেই বুঝে ফেলে পোষ্টে কি লেখা আছে। রোজা নিয়ে বিশাল স্মৃতিচারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখন দায়িত্ব স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৩৫



জাতির জনক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলতে বললেন। অত:পর বিভিন্ন ঘর থেকে হানাদারের উপর হামলা হলো। অবশেষে দিশেহারা হানাদার আত্মসমর্পন করলো।অবশেষে আমরা স্বাধীন হলাম। অবশেষে আমরা স্বাধীনভাবে দূর্নীতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

রামাদান ডায়েরিঃ ঢাকায় প্রথম রোজার স্মৃতি

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৬ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:১৮

রোজার সময়টা আমাদের বাসার পরিবেশ সব সময় আলাদা হত । রান্না বান্নার দিক থেকে একটা আলাদা আবহাওয়া তৈরি হয়ে যেত আপনা আপনি । রমজানে আমাদের বাসাতেই সব সময় ইফতার তৈরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×