দুইটা রোজা শেষ। আমার বেশিরভাগ পোস্ট স্মৃতিচারণ মূলক। যারা আমাকে চেনে তারা অনেকেই পোষ্ট পড়তে চায়না। নিক দেখেই বুঝে ফেলে পোষ্টে কি লেখা আছে। রোজা নিয়ে বিশাল স্মৃতিচারণ পোষ্ট লেখা যায়। এর মধ্যেই একটা স্মৃতিচারণ মুলক পোষ্ট পড়ে ফেললাম। দুইদিন ব্লগে নেই। ঘাঁটাঘাটি করে বুঝলাম এই রমজানে ব্লগিং বিরক্তিকর হবে।
প্রথম রোজায় বাজারে গেলাম। বেগুনের দাম চাইলো ১০০ টাকা কেজি। বললাম বেগুনির জন্য না, দাম একটু কমান। দোকানি বলল দাম বাড়তি। শেষমেষ আধা কিলো বেগুন নিয়ে বাসায় এসেছি। আলু বেগুন আর কুমড়ো বড়ি দিয়ে তরকারী রান্না হয়েছে। কুমড়ো বড়ি আমার প্রিয়। এইবার বাড়ি থেকে কুমড়ো বড়ি এনে ঢাকাতে বিক্রি করেছি। অফিসেই মোটামুটি ২০ কেজি বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া আমাদের চেয়ারম্যান স্যার ১০ কেজি নিয়েছেন কানাডা আর ইংল্যান্ডে থাকা ছেলেমেয়েদের জন্য। হিসাব করে দেখলাম টোটাল বড়ি বিক্রি করেছি ৬০ কেজির কাছাকাছি। আসছে সিজনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিবো। প্যাকেজিং আর মার্কেটিং নিয়ে ভাবতে হবে। টার্গেট থাকবে আড়াই মণ।
আমাদের বাড়িতে ৬৩টা নারিকেল গাছ আছে। গত ২০ বছরে ১১ টা গাছ কমেছে। আগে যখন বাড়িতে থাকতাম তখন সিজনে সকাল বিকাল ডাব খেতাম। ঢাকাতে এসে ডাব কিনে খেতে হয়। তবে খাই একেবারেই কম। দামের কারণে হাত বাড়াই না। দুই সপ্তাহ আগে ছেলের জন্য ডাব কিনেছিলাম। দাম নিয়েছিলো ৯০ টাকা। এখন নাকি ডাব কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা দিয়ে, ডাবের উৎপাদন খরচ নাকি বেড়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ইফতার মাহফিল না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টাকা দিয়ে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করবেন। এমনটাই বলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ
করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তারাও এবার এবার ইফতার মাহফিল করবে না বলে ঘোষনা দিয়েছে।
সবাই গরীব মানুষদের নিয়ে ভাবছে। কিন্তু মানুষ কেন বাজার করতে পারছে না সেদিকে প্রধানমন্ত্রী বা পুলিশ কারোরই ভ্রুক্ষেপ নাই। জিনিস পত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে থাকলে গরীব মানুষের মধ্যে ইফতার বিলি করা লাগবে না। এই সাধারণ সেন্স নিশ্চয়ই উনাদের আছে।
আজ গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা অর্জনের দিন । মহান স্বাধীনতা দিবস।
"সবক’টা জানালা খুলে দাওনা
আমি গাইব গাইব বিজয়েরই গান
ওরা আসবেই….চুপি চুপি
যারা এ দেশটাকে ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ।"
সব কটা জানালা খোলাই থাকে। ওরা চুপি চুপি আসে। এসে থুথু ছিটিয়ে চলে যায়। আমরা সেই থুথু মুখে লেপন করি। আমাদের লজ্জা করে না।
বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করার ঘোষণা দিলেন পুতিন।প্রতিবেশী ও মিত্রদেশ বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট পুতিন এখানে অস্বাভাবিক কিছুই দেখছে না। দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র এটা করছে। মিত্রদেশগুলোতে অনেক আগেই কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করেছে তারা।
ভ্রাদিমি পুতিনের সাথে আমার একটা মিল আছে। ক্রেমলিন শহরে শেষবারের মতো উড্ডীয়মান সোভিয়েত পতাকাটা আমাদের খুব কষ্ট দেয়। আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি। পুতিনের বয়স ছিল তখন ৩৯। চতুর্থ শ্রেণির এক শিশুর চোখে পৃথিবী দেখা নিশ্চয়ই আলাদা।
একটা কুয়ার ছবি পোষ্ট করেছি। আমরা এটা কে বলি ইদরা। এই ইদরার ছবির মাধ্যমে আবার সেই ছেলেবেলায় ফিরে যাওয়া। আবার সেই একঘেঁয়ে স্মৃতিচারণ।
ছোটবেলায় তখন কেবল রোজা রাখা শুরু করেছি। হাতের কড় গুনে রোজা রাখি। মানে পাঁচটা সাতটা। সাতাশে রমজান তো মাস্ট। সেই সময় রোজা হতো ভীষণ গরমে । দুপুর আসতে আসতেই ভীষণ কাহিল হয়ে যেতাম আমরা ছোটরা। খালি গায়ে ভেজা গামছা গায়ে জড়িয়ে রাখতাম।
ভেজা গামছার পানি চোখে লাগাতাম। তাতেও আমাদের হতো না। বড়রা রোজা ছেড়ে দিতে বললেও রোজা ছাড়তাম না। এই ইদরার পাড়ে পানি আটকানোর ব্যবস্থা করতো বড়রা। ইদরার শীতল পানিতে ইদরার মেঝেতে আমরা শুয়ে থাকতাম। অপেক্ষা করতাম ইফতারের। বরফ কল থেকে আনা বরফের ঠান্ডা শীতল আখের গুড়ের সরবতের জন্য। বরফ দেয়া গ্লাসের গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি জমতো। দেখতেও ভালো লাগতো।
কয়েক বছর আগে আমার বোনের ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে বাইরে বের হয়েছিলাম। ও রোজা ছিল। বেশ গরম। গাউসিয়া মার্কেটে ঈদের শপিং করতে আসা আপু ভাইয়ারা বেশ ক্লান্ত। ক্লান্ত আর পিপাসার চোটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঠান্ডা ফান্টার বোতলের মুখ খুলে গলায় ঢকঢক করে ঢালতে লাগলো । আমার কোলে থাকা সাত বছরের রোজাদার বোনের মেয়েটা ঢোক গিললো। পরক্ষণেই বলল, " মামুজী। পানি পিপাসা লেগেছে। পানি খাবো।" তখন বেলা চারটা। ইফতারের খুব বেশি সময় বাকি নেই। ওকে বোঝানো গেলো না। ওকে কিছুতেই বোঝানো গেল না। বোঝানো গেল না , মানুষ অনেক কারণেই রোজা রাখে না। মানুষ অনেক কারণেই রোজার মাসে রোজাদারের সামনে ঢকঢক করে ফান্টা খেতে পারে।
আমার ছোট ভাগ্নিটা সেদিন রোজা ছেড়ে দিয়েছিল। রোজা ছেড়ে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফিরে ছিলো। আমার একটুও খারাপ লাগেনি সেদিন। একটুও না। শুধু মানুষের ডেফিনেশনটা বোঝার চেষ্টা করেছিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ২:২৮