সতর্কতাঃ লেখকের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কচলাকচলি করবেন না। সরল রেখায় চলুন।
আন্দোলনের অষ্টম দিনে এসে বিএনপি নতুন করে আবার গণজাগরণ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে এবং এই বিবৃতি দেখে আমি গোলকধাঁধাতে পরে গেলাম। কারন, এই নিয়ে আমি বিএনপি-র তিন ধরনের প্রতিক্রিয়া শুনলাম - প্রথমটি ফখরুল ইসলাম-এরঃ "এই গণজাগরণ সাধারন মানুষের এবং মানুষ সরকারের প্রতি গণঅনাস্থা জানিয়েছে"। দ্বিতীয়টি তরিকুল ইসলাম-এরঃ "এটি একটি সাজনো নাটক, সরকার গোয়েন্দাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে", যা ফখরুল ইসলামের মন্তব্যের পুরোপুরি বিপরীত। নতুন বিবৃতিটি আরোও খিচুড়ি মার্কা, এতে বলা হয়েছে যে - বিএনপি এই আন্দোলনের সাথে একমত, কিন্তু তারা আন্দোলনকারীদের কিছু দাবি নিয়ে শংকিত (!!!) আর তা হল, আন্দোলনকারীরা রাজাকারদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বয়কট ও বন্ধের বা রাষ্টীয়করনের দাবি জানিয়েছেন। তাহলে বিএনপি কিভাবে এই আন্দোলনের সাথে একমত হল ? কারন, রাজাকারদের আজকের এই শক্তিশালী অবস্থানে আসার অন্যতম নিয়ামক হল এই সব প্রতিষ্ঠান। গাছের ডাল-পালা কেটে গোড়াতে পানি দিলে হবে না, এই সব রাজাকারদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে, তা নাহলে, দেশবাসীকে আবারও চরম মূল্য দিতে হবে। ৫২-তে রক্ত দিলাম, ৬৯ রক্ত দিলাম, ৭১-এ রক্ত দিলাম, ৯০-এ রক্ত দিলাম, - এই হতভাগ্য জাতিকে আর কত রক্ত দিতে হবে স্বাধীনতার পূর্ণতার জন্য। সব মত-পথ ভুলে সাধারন মানুষ যখন কিছু কুলাঙ্গার নরপিচাশের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে, তখন অনেক সাধারন মানুষের মতো আমারও একবার মনে হয়েছিল বিএনপির এইবার ঘুম ভাঙ্গবে, জামায়েত ইসলামি নামক সিন্দাবাদের ভূতটাকে ঘাড় থেকে নামাবে, দেশের মানুষের ন্যায্য আন্দোলনের সাথে মন থেকে একাত্মতা ঘোষনা করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, বিএনপি এর কিছুই করতে পারেনি, উল্টো সাধারন মানুষের এই গণজাগরণ নিয়ে শুরু থেকেই নানারকম অদূরদর্শী, ভ্রান্ত ও গণবিরোধী বক্তব্য দিয়ে সাধারন মানুষের ধিক্কার ও ঘৃণা কুড়াচ্ছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ-ই মনে করে, একক দল হিসাবে বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয়, কিন্তু মানুষ যখন বিএনপিকে ভোট দেয় না - তার মানে এই নয় যে তারা বিএনপিকে পরিত্যাগ করেছে, বরং বিএনপিকে সুযোগ দেয়া যেন তারা নিজেদের শুধরে নিতে পারে। কেউ সঠিক পথে আসতে বলা হয়ে থাকে যে - It's never too late. আশাকরি বিএনপির বেলাতেও তা সত্যি হবে।
পরিশেষে একটি প্রসঙ্গ না তুলে পারছি না, সম্প্রতি এক মুক্তিযোদ্ধা রাজনীতিক কাদের সিদ্দিকীর কথাবার্তা দেখে ডঃ হুমায়ন আযাদের একটি কথা মনে পড়ছে, "একজন রাজাকার সবসময়ই রাজাকার কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা সারাজীবন মুক্তিযোদ্ধা না-ও থাকতে পারে।"

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





